বিশ্লেষণ

বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান সংকটের নেপথ্যে দুর্নীতি

ড. মইনুল ইসলাম

২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দুর্নীতির বিরুদ্ধেজিরো টলারেন্সনীতি গ্রহণের অঙ্গীকার করেছিল। এরপর ২০১৯ সালে যুবলীগের প্রভাবশালীক্যাসিনো গডফাদারসম্রাট তার শাগরেদদের গ্রেফতারের মাধ্যমে জিরো টলারেন্সনীতি বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, কিন্তু অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ওই গ্রেফতার অভিযানে ভাটার টান জোরদার হয়। বলতে গেলে এরপর থেকে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম একেবারেইবাৎ কা বাতেপর্যবসিত হয়েছে। আমাদের স্মরণে আছে. ২০০১-২০০৫ সাল পর্যন্ত পরপর পাঁচ বছর বার্লিনভিত্তিক দুর্নীতি গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের বিশ্ব র্যাংকিং অনুযায়ী বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা অর্জন করেছিল। ওই পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম বছর ক্ষমতাসীন ছিল আওয়ামী লীগ, পরের চার বছর ক্ষমতাসীন ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। এরপর সামরিক বাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছরের শাসনামলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচণ্ড দমন নীতি বাস্তবায়নের কারণে বাংলাদেশ ওইন্যক্কারজনক চ্যাম্পিয়নশিপথেকে নিষ্কৃতি পেয়েছিল, কিন্তু পরবর্তী সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকেনখদন্তহীন বাঘেপরিণত করে ফেলা হয়। ফলে আবার দেশে দুর্নীতির তাণ্ডব পুরোদমে চালু হয়ে যায়। ২০১৪ সাল থেকে গত আট বছরে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় আফগানিস্তানের পর সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তকমা অর্জন করে চলেছে। বিশ্ব র্যাংকিং অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ১৫টি দেশের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকে গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই) তারা বলছে, বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে - বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আমদানি বাণিজ্যে ব্যাপক ওভার ইনভয়েসিং, রফতানি বাণিজ্যে ব্যাপক আন্ডার ইনভয়েসিং, হুন্ডি প্রক্রিয়ায় ক্রমবর্ধমান পুঁজি পাচার এবং রফতানি আয়ের একটি বিরাট অংশ দেশে ফেরত না আনা পুঁজি পাচারের সবচেয়ে চালু চারটি পদ্ধতি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারী শুরু হওয়ার পর চাহিদা এবং সরবরাহ উভয় দিক থেকে হুন্ডি ব্যবসা অনেকখানি গুটিয়ে গিয়েছিল, যার সুফল হিসেবে বাংলাদেশ ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্সের উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি অর্জনে সমর্থ হয়েছিল। প্রবৃদ্ধির কারণেই ওই দুই অর্থবছরে বাংলাদেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টসের কারেন্ট অ্যাকাউন্টে বড়সড় উদ্বৃত্ত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত বেড়ে গিয়ে ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। ২০২১ সালের দ্বিতীয়ার্ধে যখন করোনাভাইরাস মহামারীর তাণ্ডব কমে আসে তখন আবার চাঙ্গা হয়ে ওঠে হুন্ডি ব্যবসা। ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২ সরকারের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) বরাত দিয়ে দেশের পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে শুধু হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে বর্তমানে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। (মানে, সিআইডির দাবি ৭৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা দেশেই আসছে না। অথচ পরিমাণ টাকা হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশ থেকে বিদেশে পুঁজি পাচারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে জমা হয়ে যাচ্ছে) এর সঙ্গে আমদানির ওভার ইনভয়েসিং, রফতানির আন্ডার ইনভয়েসিং এবং রফতানি আয় দেশে ফেরত না আনার মতো মূল সমস্যাগুলো যোগ করলে দেখা যাবে প্রতি বছর এখন কমপক্ষে দেড় লাখ কোটি টাকার সমপরিমাণের বৈদেশিক মুদ্রা থেকে বাংলাদেশ বঞ্চিত হচ্ছে। এর মানে বাংলাদেশ থেকে বছরে কমপক্ষে ১৫-১৬ বিলিয়ন ডলার পুঁজি এখন বিদেশে পাচার হয়ে চলেছে, যার অর্ধেকের মতো পাচার হচ্ছে হুন্ডি প্রক্রিয়ার বেলাগাম বিস্তারের মাধ্যমে। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গত ২০২০-২১ অর্থবছরের ২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৫ শতাংশ কমে ২১ দশমিক শূন্য বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, যার প্রধান কারণ ওই বছর হুন্ডি প্রক্রিয়ায় রেমিট্যান্স প্রেরণ আবার চাঙ্গা হওয়া। এর ফলে ২০২১ সালের আগস্ট মাস থেকে শুরু হয়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারা। ২০২২ সালের অক্টোবরে রিজার্ভ কমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা মোতাবেক ৩৫ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ ঘোষণা গ্রহণযোগ্য মনে করে না। কারণ রফতানি উন্নয়ন তহবিল বা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) নাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারের আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সাড়ে বিলিয়ন ডলারেররিফাইন্যান্সিং স্কিমেরঅধীনে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে দেশের প্রভাবশালী রফতানিকারকদের বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দিয়েছে সেটাকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অন্তর্ভুক্ত না করতে বলেছে আইএমএফ। সাম্প্রতিক সফরকালে আরো কয়েকটি ব্যাপারে আইএমএফের পক্ষ থেকে আপত্তি জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ টিম। তার মানে, বাংলাদেশের প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ অক্টোবরের শেষে ২৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের পাওনা পরিশোধের পর রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে। ধরনের পতনের ধারা অত্যন্ত বিপজ্জনক।

বাংলাদেশ ব্যাংক এখন ডলারের দাম নির্ধারণে বাজার ব্যবস্থাকে মেনে নিলেও কার্ব মার্কেটের ডলারের দামের সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বীকৃত হারের ব্যবধান এখনো -১০ টাকা রয়ে গিয়েছে। দুই দামের এত বড় পার্থক্য শুধু হুন্ডি ব্যবস্থাকেই চাঙ্গা করছে, যার ফলে ফরমাল চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রবৃদ্ধি শ্লথ হতে বাধ্য। (অর্থমন্ত্রীর মতে, দেশের রেমিট্যান্সের ৪৯ শতাংশ এখন হুন্ডি প্রক্রিয়ায় দেশে আসছে। আমার মতে, অধিকাংশ রেমিট্যান্স হুন্ডি ব্যবস্থায় দেশে আসছে)! আমি আবারো বলছি, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন যে টালমাটাল অবস্থার কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে সেটার জন্য দায়ী পাঁচটি প্রধান পুঁজি পাচার প্রক্রিয়া: . আমদানিতে ব্যাপক প্রবৃদ্ধির আড়ালে ওভার ইনভয়েসিং পদ্ধতিতে জোরেশোরে বিদেশে পুঁজি পাচার, . রফতানিতে ব্যাপক আন্ডার ইনভয়েসিং পদ্ধতিতে পুঁজি পাচার, . রফতানি আয় দেশে ফেরত না এনে বিদেশে রেখে দিয়ে ওই অর্থ দিয়ে বিদেশে ঘরবাড়ি-ব্যবসাপাতি কেনার হিড়িক, . দেশের ব্যাংকঋণ নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠীগুলো কর্তৃক হুন্ডিওয়ালাদের ঋণের টাকা প্রদানের মাধ্যমে এর সমপরিমাণ ডলার হুন্ডি প্রক্রিয়ায় বিদেশে পাচার এবং . সাম্প্রতিক কালে চালু করা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ডের সাড়ে বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার ঋণ বিদেশে পাচার। (উদাহরণ দেখুন: গত ২০২১-২২ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতের রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ, অথচ একই সময়ে পোশাক খাতের কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে ৫৮ শতাংশেরও বেশি। অতএব খাতের আমদানিতে ব্যাপক ওভার ইনভয়েসিং হয়েছে ধরে নেয়াই যায়) তাই পুঁজি পাচারকে বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারে নিয়ে আসতেই হবে। সরকারকে মেনে নিতেই হবে, পুঁজি পাচার বর্তমান পর্যায়ে দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আমাদের বর্তমান সরকারকে অনেকেব্যবসায়ীদের সরকারআখ্যায়িত করে। বর্তমান সংসদের ৬২ দশমিক শতাংশ সদস্য ব্যবসায়ী। অতএব সরকারে থাকা অনেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্য-নেতাকর্মী পুঁজি পাচারকারী হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তাদের আত্মীয়স্বজন অনেকেও পুঁজি পাচারকারীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকাটাই স্বাভাবিক। সমস্যার সত্যিকার সমাধান চাইলে প্রথমে সরকারকে আন্তরিকভাবে সমস্যাটিকে স্বীকার করে নিতে হবে।

অর্থমন্ত্রী কি আদৌ তা করছেন? এবারের বাজেটে পাচারকৃত অর্থ দেশে ফেরত আনতে চাইলে মাত্র সাড়ে শতাংশ কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে তা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার, কিন্তু খবর নিয়ে জানা যাচ্ছে গত চার মাসে কেউ সুবিধা গ্রহণ করেনি। (বর্তমান বাজেটে অর্থমন্ত্রী পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার জন্য যেটোটকা দাওয়াইয়ের প্রস্তাব করেছেন সেগুলোকে আমি দেশের জনগণের সঙ্গেমশকরাআখ্যায়িত করেছি। আমি বলেছি, তিনি পুরো ব্যাপারটাকে লঘু করার জন্য প্রহসনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা করেছেন। বছরের শেষে দেখা যাবে ফল শূন্য) আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং মনিটর করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল তার কোনো হদিস মিলছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দুবাই ইতালিতে আটটি তদন্ত টিম প্রেরণ কিংবা গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করে পুঁজি পাচারকারীদের নাম-ঠিকানা খুঁজে বের করার যে পরামর্শ দিয়েছিলাম সে ব্যাপারেও কোনো নড়াচড়া পরিলক্ষিত হচ্ছে না! এমনকি রফতানি আয় রফতানিকারকদের নিজের কাছে রেখে দেয়ার পরিমাণকে (অনুপাতকে) আগামী কিছুদিনের জন্য কঠোরভাবে সীমিত এবং একই সঙ্গে কতদিনের মধ্যে রফতানি আয় বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা দিতে হবে সে সময়সীমাকে কঠোরভাবে নামিয়ে আনা সম্পর্কিত পরামর্শকেও বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। অথচ সরকার স্বীকার না করলেও ওয়াকিবহাল মহল ঠিকই বুঝতে পেরেছে গত এক বছরে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার বৈদেশিক মান প্রায় ২৫ শতাংশ অবচয়নের শিকার হয়েছে। এশিয়ার বর্ধনশীল অর্থনীতিগুলোর তুলনায় অবচয়ন সর্বোচ্চ। (ভিয়েতনামের মুদ্রার তেমন কোনো অবচয়নই হয়নি) বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পতনের ধারাকে থামাতে না পারলে ডলারের কার্ব মার্কেটের দামের উল্লম্ফন এবং টাকার বৈদেশিক মানের দ্রুত অবচয়নকে থামানো যাবে না। এজন্য প্রয়োজন পুঁজি পাচারের বিরুদ্ধে সরকারের বিশ্বাসযোগ্য কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলা। দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ আহসান মনসুর বর্তমান অর্থমন্ত্রীকেঅ্যাবসেন্ট ফাইন্যান্স মিনিস্টারআখ্যায়িত করেছেন। এবারই প্রথম বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় যোগদান করেননি, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের নেতৃত্বে কয়েকজন আমলা দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ একনেকে অর্থমন্ত্রী প্রায়ই অংশগ্রহণ করছেন না। অর্থনীতির বর্তমান সংকট সম্পর্কেও অর্থমন্ত্রী তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখছেন না।

কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম আন্তঃব্যাংক লেনদেনে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ডলারের দামের চেয়ে -১০ টাকা বেশি হওয়ার প্রধান কারণ হুন্ডি প্রক্রিয়ায় বিদেশে পুঁজি পাচারের চাহিদার ক্রমবর্ধমান ব্যাপক উল্লম্ফন। অতএব ক্রমবর্ধমান চাহিদা কমিয়ে আনতে না পারলে দুটি দামের পার্থক্যকে কমিয়ে আনা যাবে না। শুধু আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দামকে বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার জন্য ক্রমান্বয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করলে সুফল পাওয়া যাবে না। হুন্ডি-ডলারের চাহিদা শক্তিশালী থাকলে কার্ব মার্কেটেও ডলারের দাম ক্রমেই বাড়িয়ে পার্থক্যটা -১০ টাকায় রেখে দেবে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা, হুন্ডি ব্যবসাকে চাঙ্গা রাখার জন্য। সেজন্যই বলছি, হুন্ডি ডলারের চাহিদাকে দমন করতে চাইলে প্রয়োজন হবে দুর্নীতি দমনকে আবার সত্যিকারভাবে শক্তিশালী করা। হুন্ডি প্রক্রিয়ায় যে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হওয়ার দাবি করছে সরকারের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) তার সিংহভাগ চাহিদাকারী ওপরে উল্লিখিত গোষ্ঠী। অতএব দুর্নীতির বিরুদ্ধেজিরো টলারেন্সনীতিকেবাৎ কা বাৎবানিয়ে রেখে পুঁজি পাচার সমস্যার সত্যিকার সমাধান পাওয়া অসম্ভব।

 

. মইনুল ইসলাম: সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি; একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন