বছরের তৃতীয় প্রান্তিক

টয়োটার চেয়ে গাড়িপ্রতি আট গুণ বেশি মুনাফা টেসলার

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বড় ধরনের মুনাফা পেয়েছে মার্কিন বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা। নিক্কেই এশিয়ার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে টয়োটা মোটরসের তুলনায় গাড়িপ্রতি আট গুণ বেশি মুনাফা করেছে টেসলা। যদিও গাড়ি বিক্রির সংখ্যার দিক থেকে অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে টয়োটা।

টেসলা জানিয়েছে, গত প্রান্তিকে নিট মুনাফা হয়েছে ৩২৯ কোটি ডলার। একই সময়ে টয়োটার মুনাফা দাঁড়িয়েছে ৩১৫ কোটি ডলারে। টয়োটার অবস্থার জন্য বিশেষ কিছু কারণকে দায়ী করা হচ্ছে। মুহূর্তে প্রতিষ্ঠানটি কাঁচামাল বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান দামের কারণে চাপে পড়েছে। ফলে টয়োটার পরিচালন মুনাফায় পতন দেখা দিয়েছে।

বিষয়ে মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকসের জাপানি বিশ্লেষক কোটা ইউজাওয়া বলেন, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে টয়োটার যে মুনাফা কমেছে তা কোম্পানির প্রকৃত আয়ে তেমন প্রভাব ফেলবে না।

পরিচালন মুনাফার হিসাব করলে টয়োটার ছিল ৪০৮ কোটি ডলার, যেখানে টেসলার ছিল ৩৬৯ কোটি ডলার। টেসলা বিশ্বের শীর্ষ মুনাফায় থাকা প্রতিষ্ঠানের একটি। তবে জুলাই-সেপ্টেম্বরে সংস্থাটির নিট মুনাফা মার্সিডিজ বেঞ্জের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। যদিও তা বিএমডব্লিউ ফক্সওয়াগনের চেয়ে বেশি। তৃতীয় প্রান্তিকে টেসলার নিট মুনাফার মার্জিন ছিল ১৫ শতাংশ।

তৃতীয় প্রান্তিকে টয়োটা গ্রুপ ২৬ লাখ ২০ হাজার ইউনিট গাড়ি বিক্রি করেছে, যা টেসলার তুলনায় দশমিক গুণ বেশি। সময়ে টেসলার বিক্রীত গাড়ির সংখ্যা লাখ ৪৪ হাজার ইউনিট। কিন্তু গাড়িপ্রতি নিট মুনাফার বিষয় যখন আসে তখন দেখা যায় টয়োটার ক্ষেত্রে তা মাত্র হাজার ২০০ ডলার। যেখানে টেসলার গাড়িপ্রতি নিট মুনাফা হাজার ৫৭০ ডলার। টেসলা বিশ্বাস করে, প্রতিটি গাড়ি বিক্রির নিট মুনাফা হিসাব করে খাতে শীর্ষে থাকা যাবে। এক্ষেত্রে সংস্থাটি মার্সিডিজ বেঞ্জের চেয়েও এগিয়ে রয়েছে।

২০২১ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে টেসলার গাড়িপ্রতি মুনাফার পরিমাণ দ্রুতগতিতে বেড়েছিল। সে সময় বিনিয়োগকারীদেরও আস্থা অর্জন করে সংস্থাটি। ফলে এখন ইভি নির্মাতার বাজার মূলধন টয়োটার চেয়ে তিন গুণ বেশি।

দুটি প্রতিষ্ঠানের মুনাফার মধ্যে যে বিস্তর ফারাক রয়েছে তা মূলত কৌশলের ভিন্নতার কারণে। টয়োটা ক্রেতাদের সামনে বিভিন্ন ধরনের গাড়ির সম্ভার নিয়ে হাজির হয়। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাসচালিত, হাইব্রিড. বিদ্যুচ্চালিত ফুয়েল সেলের গাড়ি। রয়েছে বিভিন্ন সাইজ দামের ভিন্নতাও। অন্যদিকে টেসলার একমাত্র মনোযোগ বিদ্যুচ্চালিত গাড়িতে। টেসলার বিক্রি হওয়া গাড়িগুলোর ৯০ শতাংশই মডেল ওয়াই মডেল থ্রি। উচ্চমূল্যের গাড়িও দুই বছরের ব্যবধানে বিক্রি দ্বিগুণ হয়েছে। সংস্থাটির সবচেয়ে কম দামি গাড়ি মডেল থ্রির দামও শুরু হয় ৪০ হাজার ডলার থেকে।

টেসলার ব্র্যান্ড ইমেজও এক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিষ্ঠানটির কৌশল হলো, বাজার পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন প্রয়োজন পড়লে গ্রাহক পর্যায়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া। একই সঙ্গে গ্রাহকের জন্য স্বচালিত সফটওয়্যারের মতো সুবিধা গাড়িতে যুক্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বিষয়গুলো প্রতিদ্বন্দ্বী গাড়ি নির্মাতাগুলোর চেয়ে টেসলাকে স্বতন্ত্র করে তোলে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন