লেনদেন নেমেছে হাজার কোটি টাকার নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে গতকাল সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এদিন সূচক বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। এক্সচেঞ্জটিতে গতকাল দুই মাস পর হাজার কোটি টাকার নিচে লেনদেন হয়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন কমেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুতের তীব্র সংকট, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সংকটের পূর্বাভাস এবং মূল্যস্ফীতি টাকার অবমূল্যায়নের প্রভাব অর্থনীতিতেও পড়তে শুরু করছে। তাছাড়া ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর ব্যবসা মুনাফায়ও নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এসব কারণে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অস্বস্তিবোধ দেখা যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দুই-তিনদিন ধরেই শেয়ার বিক্রি করে দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তারা। তবে বিক্রেতা থাকলেও কোনো ক্রেতা সংকট পরিলক্ষিত হচ্ছে কয়েকদিন ধরেই। ফলে দিন দিন লেনদেনে অংশ নেয়া সিকিউরিটিজের সংখ্যা লেনদেনের পরিমাণ কমছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর পর মিনিট পর্যন্ত ইতিবাচক ছিল ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। এর পর থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারাতে শুরু করে সূচকটি। এর ৩০ মিনিট পরে সূচক ঘুরে দাঁড়ায়। তবে বেলা ১১টার পর সূচকটি আবারো নিম্নমুখী অবস্থান নেয়। দিনভর এমন অস্থিরতার মধ্যে গতকাল ডিএসইএক্স সূচকটি ৫১ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান হাজার ৫০১ পয়েন্টে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৪৫০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৩১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩১০ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১৩ পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৪২৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ইউনিক হোটেল, ওরিয়ন ইনফিউশন, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারের।

ডিএসইতে গতকাল ৯৯৪ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ১০ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৬৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১৩৭টির, কমেছে ৩২টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৯৭টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। ১৪ দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল কাগজ মুদ্রণ খাত। আর বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে ভ্রমণ অবকাশ খাতে সবচেয়ে বেশি ১০ দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল ব্যাংক খাতে, দশমিক শতাংশ।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৪৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ৩৯৫ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১১০ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ১২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৯ হাজার ১২ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৩২টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৯টির, কমেছে ২৮টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০৫টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১২ কোটি ৭২ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন