কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল ৭টায় কক্সবাজার শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউ ঘাট থেকে ছেড়ে যায় কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামে একটি জাহাজ।

কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস জাহাজ ৭৫০ যাত্রী নিয়ে সেন্ট মার্টিন রওনা দেয়। জাহাজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেয়া হয়েছে। দুপুর ১টার দিকে জাহাজটি নিরাপদে সেন্ট মার্টিন পৌঁছায়।

এদিকে বছরের প্রথম পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্ট মার্টিনে আসায় খুশি দ্বীপের মানুষ। হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীসহ পর্যটনসংশ্লিষ্ট পর্যটকদের স্বাগত জানান। তবে দ্বীপবাসী পর্যটন ব্যবসায়ীরা টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল না করায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

সেন্ট মার্টিন হোটেল সি প্রবালের পরিচালক আবদুল মালেক জানান, বছর টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল না করলে হোটেল ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মুখে পড়বেন। কারণ মৌসুম সামনে রেখে অনেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে হোটেল রেস্তোরাঁ করেছেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, নাব্য সংকটের কারণে আপাতত টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ রয়েছে। শুধু কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ কর্ণফুলী এক্সপ্রেস পরীক্ষামূলক চলাচল করছে। অবস্থা বুঝে পর্যাক্রমে আবেদন করা জাহাজগুলোকে অনুমতি দেয়া হবে।

টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের দাবি: নাফ নদের নাব্য  সংকটের কারণে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে প্রতিবন্কতা সৃষ্টি হওয়ায় নতুন রুটে পর্যটকদের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করাতে চায় সি-ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেড়ায়াব) ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সংগঠন দুটির সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিকল্প পথ হিসেবে টেকনাফের সাবরাং ট্যুরিজম পার্কসংলগ্ন সৈকতে অস্থায়ী জেটি করে পন্টুন নির্মাণ করে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল সম্ভব।

গতকাল দুপুরে কক্সবাজার শহরের একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি তোলা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সেড়ায়াবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, অনেক বছর ধরে নাব্য সংকট থাকা সত্ত্বেও আমরা জাহাজ পরিচালনা করে আসছি। তাছাড়া নাফ নদীর কয়েকটি অংশে ডুবোচর জেগেছে কয়েক বছর ধরে। মাঝে মধ্যে ওই সব ডুবোচরে পর্যটকবাহী জাহাজ আটকা পড়ে। সম্ভবত কারণে সরকার চাইছে আপাতত টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে এবার জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকুক।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কক্সবাজারে প্রতি বছর ২০-২৫ লাখ পর্যটক ভ্রমণে আসেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পর্যটকদের চাহিদা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ। তাছাড়া কয়েক মানুষের বিনিয়োগে টেকনাফ, উখিয়া সেন্ট মার্টিনে গড়ে উঠেছে উন্নতমানের হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট অসংখ্য রেস্তোর্রা। তাতে সৃষ্টি হয়েছে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান।

আয়োজকদের মতে, চট্টগ্রাম থেকে সেন্ট মার্টিন কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন জাহাজ পরিচালনা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তাছাড়া জ্বালানি খরচও অত্যধিক, কিন্তু পর্যটকরা চান অল্প খরচে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ। কারণেই সেড়ায়াব টুয়াক বিকল্প উপায়ে জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নিতে চায়।

সংবাদ সম্মেলনে সেড়ায়াব সভাপতি তোফাইল আহমদ, টুয়াক সভাপতি আনোয়ার কামাল, সাধারণ সম্পাদক মুনিবুর রহমান টিটু, সহসভাপতি ইফতেখার আহমদ চৌধুরী, অর্থ সম্পাদক নুরুল আলম রনি, পার্বত্যবিষয়ক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তোহা, যুগ্ম সম্পাদক আল আমিন বিশ্বাস (তুষার), সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এমএ কাজলনাছির উদ্দিন, আকতার নূর প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন