পাঠক মত

ক্রীড়াঙ্গনে বেতন বৈষম্য দূর করতে হবে

পৃথিবীতে নারীদের অবদান অনস্বীকার্য সভ্যতা সৃষ্টির লগ্ন থেকেই। একজন নারী শুধু কারোর মা, মেয়ে, বোন বা বউ নয় বরং সাহস, সংগ্রাম, সাধনা, আত্মত্যাগ, দৃঢ়তা, কঠোর পরিশ্রম ইত্যাদি বিশেষণের প্রতীক। আধুনিক সমাজে নারী এবং পুরুষ উভয়ের মৌলিক অধিকার এক অভিন্নবিষয়টি বেশ আলোচিত হচ্ছে এবং গুরুত্ব পাচ্ছে। কিন্তু স্থান, কাল, পাত্রভেদে নারীরা এখনো অনেক ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। ক্রীড়াঙ্গন তার অন্যতম। নানা বিষয়ে বৈষম্যের চাদরে মোড়ানো রয়েছে।  দুদিন আগেই দেখা গেল ফুটবল অঙ্গনে নারী খেলোয়াড়রা কীভাবে দেশের গণ্ডি অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফলতার সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা ওড়াল। তারা অর্জনে সেরা, বেতনে কম। সারা দেশকে উৎসবে মাতাল যেসব নারী খেলোয়াড়, তাদের ভাগ্য বদলায় মাঠে লড়াই করে। বিজয়ের বেশে জয়ের ট্রফি নিয়ে ঘরে ফিরলেও আয়ের বেলায় তাদের সঙ্গে পুরুষ খেলোয়াড়ের পার্থক্য আকাশ-পাতাল। যে সানজিদা-সাবিনারা ইতিহাস রচনা করল তাদের মাসিক বেতন খুবই সীমিত। নিউজবাংলা২৪ডটকমের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ক্লাব ফুটবলে একজন শীর্ষ পুরুষ ফুটবলার বছরে ৫০-৬০ লাখ টাকা পান এবং সেখানে নারী ফুটবলার বছরে পান - লাখ টাকা। ওপরের চিত্র থেকে বোঝা যায়, দেশের পুরুষ ফুটবল খেলোয়াড়দের বেতন এবং নারী ফুটবল খেলোয়াড়ের বেতনের মধ্যে রয়েছে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। পার্থক্য শুধু ফুটবল খেলায় নয়, রয়েছে ফুটবল এবং ক্রিকেট উভয় ডিসিপ্লিনে। বিসিবি থেকে সাকিবের বেতন সর্বোচ্চ লাখ টাকা আর জাহানারা-জ্যোতির সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ প্রায় আট গুণ কম বেতন পেয়েও ক্রিকেট দুনিয়াকে এগিয়ে নিচ্ছেন নারী ক্রিকেটার। ক্রীড়াঙ্গনে নারী খেলোয়াড়দের সাফল্য এবং অর্জনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের সার্বিক উন্নয়নের লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য দূর করে সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

 

সুমি রানী সাহা: চেয়ারম্যান এবং সহকারী অধ্যাপক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন