রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় শেষকৃত্যে অংশগ্রহণ এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগদানসহ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফরের বিস্তারিত জানাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আজ বিকাল ৪টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এতে লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর উপপ্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বণিক বার্তাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসজনিত মহামারী শুরুর পর বেশির ভাগ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরাসরি অংশ নেবেন। এর আগে ভারত সফর নিয়ে করা সংবাদ সম্মেলনেও সরাসরি অংশ নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন সরকারপ্রধান।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ দিনের সরকারি সফর শেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪ অক্টোবর দেশে ফেরেন। প্রধানমন্ত্রী গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাজ্যে যান। লন্ডনে তিনি রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেন। এতে তার ছোট বোন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানাও অংশ নেন। রাজা তৃতীয় চার্লসের সিংহাসনে আরোহণ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।
লন্ডনে নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে গত ১৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক যান প্রধানমন্ত্রী। নিউইয়র্ক সফরকালে গত ২০ সেপ্টেম্বর সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস এবং সন্ধ্যায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেয়া অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে। এদিন প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনের উদ্বোধনী পর্বেও অংশ নেন। এছাড়া স্নোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট বরুত পাহরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর একুয়েডরের প্রেসিডেন্ট গুইলেমে ল্যাসো মেন্ডেজো, কসোভোর প্রেসিডেন্ট ভিজোসা ওসমানী সাদ্রিউর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেদিন জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘টেকসই গৃহায়ন’ বিষয়ে একটি অনুষ্ঠান এবং ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন’ শীর্ষক সভায় অংশ নেন। এছাড়া জাতিসংঘ সদর দপ্তরে পদ্মা সেতুর স্থিরচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে রোহিঙ্গাবিষয়ক উচ্চপর্যায়ের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণসহ যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ যৌথ ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে গোলটেবিল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স-বিষয়ক বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন তিনি কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হু সেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এছাড়া তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন আইওএমের মহাপরিচালক অ্যান্তেনিও ভিটোরিনো এবং আইসিসি প্রসিকিউটর নিক ক্লেগ ও করিম খান। ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বরাবরের মতো এবারো বাংলায় দেয়া ভাষণে তিনি জবরদস্তিমূলক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞার মতো বৈরী পন্থা পরিহার করে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকট ও বিরোধ নিষ্পত্তির মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ ও টেকসই পৃথিবী গড়ে তোলার আহ্বান জানান। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ২৪ সেপ্টেম্বর ভার্চুয়ালি যোগ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ওইদিন বিকালে নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যান এবং ২ অক্টোবর পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন প্রধানমন্ত্রী।
