অভিমত

উজ্জ্বল আলো মানুষ ও প্রকৃতির ক্ষতি করছে

ওবায়দুল্লাহ সনি

একসময় পুরো বিশ্বই ছিল গ্রাম। আধুনিক সভ্যতায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে নগরায়ণ। তারই ধারাবাহিকতায় প্রযুক্তির ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামীণ সংস্কৃতি। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলোর ঝলকানি, আলোকিত হচ্ছে আমাদের গ্রহ। যেন আঁধার মাড়িয়ে আলোর পথে ছুটে চলাই প্রতিটি মানুষের লক্ষ্য। টমাস আলভা এডিসন আবিষ্কৃত ইনক্যানডিসেন্ট বাল্ব ১৮৭৯ সালে প্রথম জ্বলতে শুরু করে নিউইয়র্ক শহরে। সেই যে শুরু, শহরকে আলোকমালায় সাজিয়ে তুলতে বিশ্বজুড়েই চলছে এক ধরনের প্রতিযোগিতা। আবাসিক, অফিস, উঁচু উঁচু ভবন, সেতু, ফ্লাইওভার, শহরের রাজপথ, হাইওয়ে, সর্বত্রই যেন আলোর বন্যা। কোনো উৎসব হলে তো কথাই নেই, কৃত্রিম আলো দখল করে নেয় রাতের আকাশকেও। কিন্তু আলোই যে আবার অন্ধকারের পথ দেখায়।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, আলোর আবিষ্কারকে মানবসভ্যতার এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম পর্যায় বলে মনে করা হয়। এককোষী থেকে বহুকোষী প্রাণীসবারই বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য আলো প্রয়োজন। তেমনভাবেই জরুরি অন্ধকারের। কিন্তু আর্টিফিশিয়াল লাইটের অতিব্যবহারে অনেক দেশ থেকেই হারিয়ে যেতে বসেছে রাত। গভীর অন্ধকারে পৃথিবী একদা নৈঃশব্দে ঘুমালেও এখন জেগে থাকতে হয় লাল-সবুজ-নীল-সাদা আলোর ঝলকানিতে। প্রবণতা মানবস্বাস্থ্য পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার কিছু ছবি তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ক্রিস্টোফার কিবার নেতৃত্বে গবেষণা চালায় জার্মান রিসার্চ সেন্টার ফর জিওসায়েন্স (জিএফজেড) সেই গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০১২ থেকে পরের চার বছর অর্থাৎ ২০১৬ সাল পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রতি বছর কৃত্রিম আলোর ঝলকানি বেড়েছে শতাংশ হারে। এর ফলে উদ্ভিদ, প্রাণিকুল মানুষের ওপর পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। সবচেয়ে বেশি আলো দূষণকারী দেশ ছোট্ট সিঙ্গাপুর, সেখানে বসবাসকারীরা রাতের সত্যিকার রূপ থেকে বঞ্চিত। একই পথে রয়েছে বিলাসবহুল দেশ কুয়েত কাতার। রাতের ঔজ্জ্বল্য বেড়েছে এশিয়া দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোতেও। অর্থাৎ যে দেশেই উন্নতির ছোঁয়া লাগছে, সেখানেই ঝলকানি বাড়ছে কৃত্রিম আলোর। চাঁদ, মধ্য আফ্রিকান রিপাবলিক মাদাগাস্কারের রাত অবশ্য সম্পূর্ণ বিপরীত। এখনো সেখানকার মানুষ রাতের বেলায় নাক ডেকে ঘুমাতে পারে। গায়ে জোৎস্নমাখতে পারে ভরা পূর্ণিমায়।

অযাচিত, অত্যধিক, অনিয়ন্ত্রিত কিংবা বিপত্তিপূর্ণ কৃত্রিম আলোই বড় শহরগুলোয় আলোকদূষণের বড় কারণ। এর ফলে নিদ্রাহীনতায় ভোগে মানুষ। তাতে শারীরিক মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। হতে পারে হৃদযন্ত্রে সমস্যা, দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা স্ট্রোকের মতো মারাত্মক রোগ। বিভিন্নভাবে আলোর দূষণের শিকার হওয়ায় এর ছন্দপতন ঘটছে মাত্রাতিরিক্ত। যদিও দূষণ কেউ উপলব্ধি করে উঠতে পারে না। এক গবেষণায় অবশ্য দেখা গিয়েছে, মানুষের শরীরের স্বাভাবিক ক্রিয়ার ছন্দ বা সার্কাডিয়ান রিদম নির্ভর করে প্রাকৃতিক আলোর ওপর। সেই সঙ্গে মেয়েদের প্রজননক্ষমতার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে বিশেষ করে ভ্রূণ বৃদ্ধির জন্য অন্ধকার খুবই জরুরি। মস্তিষ্কের পিনিয়াল গ্রন্থি মেলাটনিন নামের এক ধরনের হরমোন নিঃসরণ করে। আর অন্ধকারেই এটি বেশি কার্যকরী। কিন্তু রাতের উজ্জ্বল আলো মেয়েদের ফার্টিলিটি হরমোনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এতে তাদের সন্তানধারণের ক্ষমতা কমে যায়।

কৃত্রিম আলোর প্রভাবের বিষয়ে একদিন কথা হচ্ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান মনোরোগবিদ অধ্যাপক ডা. এমএমএ সালাউদ্দীন কাউসারের সঙ্গে। কথার প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেনআচ্ছা মনে করে দেখুন তো, রাতে কবে শেষবার খুব শান্তি করে ঘুমিয়েছিলেন; সকালে যখন ঘুম ভাঙল শরীরটা বেশ ঝরঝরে লাগছিল? আসলে রাতের শহরে নৈঃশব্দ অন্ধকারে ঘুমানোটা যেন দিবাস্বপ্নের মতোই! শহরে বাসা হলে জানালার কাচ দিয়ে রাস্তার আলো, ফাঁকা সড়কে দুরন্তগতিতে ছুটে চলা গাড়ির শব্দে আপনার ঘুমে কোনো না কোনোভাবে ব্যাঘাত ঘটবেই। তাই অনেকেই এখন রাতেরবেলা ঘুমের ওষুধ খেয়ে বিছানায় যান, যা কিনা ধীরে ধীরে অবসাধকেই ডেকে আনে। দিন হচ্ছে কাজের জন্য, রাত শরীরকে রিচার্জ করে। রিচার্জ মানেই গভীর ঘুম। আর ঘুমকে নিয়ন্ত্রণ করে মেলাটোনিন নামে এক ধরনের হরমোন, যা অন্ধকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। ঘর পুরোটা অন্ধকার না হলে শরীরে এটি উৎপন্ন হতে দেরি হয়। অর্থাৎ মেলাটোনিন যত দ্রুত উৎপন্ন হবে ঘুম তাড়াতাড়ি আসবে। বেশি মেলাটোনিন মানে গভীর ঘুম, তাতে মানসিক শান্তিও বাড়বে।

বর্তমান যুগের এলইডি আলোর ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে চিকিৎসকরা প্রচুর উদ্বিগ্ন। সাধারণত আলোর তরঙ্গ দৈর্ঘ্য ৩৯৭-৭২৩ ন্যানোমিটারের মধ্যে থাকলে তা ক্ষতিকর নয়। তবে অধিকাংশ এলইডি বাল্বের তরঙ্গ ৩৯৭ ন্যানোমিটারের কম, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। চিকিৎসকদের দাবি, নীল এলইডি থেকে নির্গত অতি বেগুনি রশ্মি চোখের লেন্সকে অস্বচ্ছ করে দেয়, যাকে বলা হয় চোখের ছানি। এছাড়া কর্নিয়ার ওপর টেরিজিয়াম নামে একটা পাতলা আবরণ পড়ে। তখন সামনের একটি জিনিসকে মনে হয় দুটি। গাড়িচালকদের ক্ষেত্রে এটা খুবই বিপজ্জনক। রাস্তায় এলইডি আলো বসার পর থেকে অনেকেই রাতে গাড়ি চালাতেও অস্বস্তি বোধ করছেন। বিশেষ করে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গাড়ি চালাতে প্রচুর সমস্যা হচ্ছে বলে চালকদের অভিযোগ। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, তীব্র কিন্তু দুর্বল নকশার এলইডি বাতির নীল আলো মানুষের ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোন মেলাটোনিনের ক্ষেত্রে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

এসব কথা চিন্তা করে ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলো যখন এলইডি আলোর ব্যবহার কমাচ্ছে, তখন উল্টোপথে হাঁটছে বাংলাদেশ। রাজধানীসহ বড় বড় শহরকে সাজাতে কিংবা বিদ্যুৎ খরচ বাঁচাতে কম আলোর লাইট ছুড়ে ফেলে লাগানো হচ্ছে ক্ষতিকারক এলইডি। পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তির যুগে আলো বিচ্ছুরণের বাল্ব ব্যবহার করে রাজধানীর সড়কে সড়কে বসানো হয়েছে বিজ্ঞাপন বিলবোর্ড। এগুলো থেকে বিচ্ছুরিত তীব্র আলোর ঝলকানি গাড়িচালকদের চোখ ঝাপসা করে দেয়। বিঘ্ন ঘটাচ্ছে মনোযোগেও। প্রায় রাতেই ঘটছে দুর্ঘটনা। ফুটপাতে বসানো ডিজিটাল বোর্ডের তীব্র আলোর কারণে পথচারীদের চলাচলও কঠিন হয়ে পড়ছে। গাড়ির অযাচিত ফ্লাডলাইটের কারণেও প্রায় সময় দুর্ঘটনা ঘটছে।

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক সেলিম আহমেদ। প্রায়ই তাকে রাতের ডিউটি করতে হয়। চালক বললেন, ঢাকার সড়কগুলোয় এত বেশি লাইট ডিজিটাল বিলবোর্ড যে, গাড়ি চালাতেই সমস্যা হয়। অনেক সময় তো চোখেই ঝাপসা দেখি। তখন স্টিয়ারিং ধরে বসে থাকা ছাড়া আর করার কিছুও থাকে না। আবার বেশির ভাগ গাড়িতে সঠিক নিয়মে হেডলাইট না লাগানোয় রাতে চালকদের বেশ বিপদে পড়তে হয়। কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনাও ঘটে। চালক সেলিমের প্রসঙ্গ ধরেই একদিন আলোচনায় মজেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই ট্রাফিক সার্জেন্ট আজম খানের সঙ্গে। অতি উজ্জ্বল কিংবা অনুজ্জ্বল আলো রাস্তায় গাড়ি চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি এর অন্যতম কারণ বলে সে জানায়। আর বিশৃঙ্খল আলোর কারণেই চালকরা বিভ্রান্ত হন, ঘটে দুর্ঘটনা। বিলবোর্ডের উজ্জ্বল আলোও বিভ্রান্ত করে। অর্থাৎ অধিক আলোয় চোখ ঝাপসা হয়ে যাওয়ায় চালকদের গাড়ি চালাতে বেশ সমস্যা হয়।

শুধু মানুষই নয়, উজ্জ্বল আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয় অনেক পোকামাকড় কীটপতঙ্গও। বেশির ভাগ পোকাই সাধারণত একটি নির্দিষ্ট পথে চলাচল করতে অভ্যস্ত। আর রাতের বেলায় পতঙ্গরা তাদের চলনপথ ঠিক করে চাঁদকে ঘিরে। কিন্তু সেই পথে যদি কোনো কৃত্রিম আলো থাকে, তাতে আকৃষ্ট হয়ে ওইসব পোকা বাধাগ্রস্ত হয়। আলো বরাবর তারা সোজা চলতে থাকে, যেমনটি চাঁদের প্রতিফলিত আলোকে পথ চলার সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করে। আবার অনেক সময় পতঙ্গরা রাতের ঝলমলে আলোকে দিনের সঙ্গে তুলনা করেও বিপদে পড়ে। রাতের প্রকৃতিতে আলোর আগ্রাসন শিয়াল, বনবিড়াল, বাদুড়, লক্ষ্মীপেঁচা, হুতুমপেঁচা সামুদ্রিক কচ্ছপদেরও দিকভ্রান্ত করে দিচ্ছে। উপকূলে আলোর ঝলকানি কচ্ছপদের ডিম পাড়াতেও বাধাগ্রস্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোনো কোনো প্রাণীর জন্য আরো খারাপ পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। আচরণ বদলে গেছে পাখিদেরও, ভোর ভেবে এখন ডাকাডাকি শুরু করে মাঝরাতেই।

জার্মানির লিবনিজ ইনস্টিটিউট অব ফ্রেশওয়াটার ইকোলজি অ্যান্ড ইনল্যান্ড ফিশারিজের (আইজিবি) পরিবেশবিদ ফ্রাঞ্জ হোলকেরের মতে, রাতের দিকে যে কৃত্রিম আলো ব্যবহার করা হয়, তাতে স্বাভাবিক আলোকচক্র বাধাগ্রস্ত হয়। বাড়িয়ে দেয় আলোর দূষণ, যা পরিবেশের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ নিশাচর এবং অমেরুদণ্ডীদের মধ্যে তা ৬০ শতাংশের বেশি। তারা কৃত্রিম আলোয় নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে না। ফলে বদলে যাচ্ছে তাদের আচার-আচরণ। পোকামাকড়, মাছ, পাখি বিভিন্ন উভচর প্রাণীসহ জীববৈচিত্র্যের ওপরেও এর প্রভাব পড়ছে; বিশেষ করে তাদের প্রজনন চলাচলের ক্ষেত্রে। এছাড়া ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীব এবং গাছের পক্ষেও কৃত্রিম আলো যথেষ্ট ক্ষতিকারক। একই মত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল পরিবেশ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক . মো. মনিরুজ্জামানের। কৃত্রিম আলো ফসলের পরাগায়ণ প্রতিটি বাস্তুতন্ত্রের ওপরই নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে বলে তার ছোট ছোট গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ করে নিশাচর সব পশুপাখি কীটপতঙ্গ রাতে আস্তানা ছেড়ে বেরোতেই ভয় পায়। তাতে কমে যাচ্ছে বংশবিস্তার। ভিন্ন ভিন্ন পর্যবেক্ষণ চালিয়ে তিনি দেখতে পেয়েছেন, রাতে যেসব এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকে তার তুলনায় কৃত্রিমভাবে আলোকিত স্থানে নিশাচর পাখি পতঙ্গের পরাগায়ণ কর্মকাণ্ড কমেছে প্রায় ৬২ শতাংশ। শুধু তা- নয়, অতি আলোতে বিভ্রান্ত হয়ে দিনের বেলায় চলাফেরা করা অনেক পাখি পতঙ্গকেই দেখা যায় রাতেও উড়ে বেড়াচ্ছে। কৃত্রিম আলোর কারণে নিশাচর পোকামাকড়ের প্রজনন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। উদ্ভিদের পরাগায়ণ পতঙ্গের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায়, সেটিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আর তাতে দিন দিনই ফলন কমছে উদ্ভিদের। জীবজন্তু জলজ প্রাণীদের জীবনেও গভীর বিপদ ডেকে আনছে রাতের কৃত্রিম আলো। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অধিক উজ্জ্বল এলাকার উদ্ভিদের মুকুল সাধারণের তুলনায় সপ্তাহখানেক আগেই ঝরে যায়। আবার উদ্ভিদ যে খাদ্য উৎপাদন করে, তার মূল উপাদান গ্লুকোজ। কিন্তু অন্ধকারের অভাবে উদ্ভিদের সেই গ্লুকোজ উৎপাদনের মাত্রা কমে যাচ্ছে। তাই হারাতে বসেছে অনেক গাছ। ছোটবেলায় যেসব উদ্ভিদ আমাদের সঙ্গে বেড়ে উঠত সেগুলো এখন আর চোখেই পড়ে না। শুধু কেটে ফেলাই নয়, খাদ্যোৎপাদনের প্রতিযোগিতায় ঠিকতে না পেরে নিজেরাই বিলীন হয়েছে অনেক গাছ।

আলোর দূষণ উপকূলেও ছড়িয়েছে। সমুদ্রপথের বাতিঘর, মেরিন ড্রাইভের ফ্লাডলাইট, জাহাজে ব্যবহার করা উচ্চক্ষমতার আলো, যত্রতত্র বানানো হোটেল-মোটেলে লাগানো বাতি বিভিন্ন প্রজাতির কীটপতঙ্গ কিংবা প্রাণীকে হুমকিতে ফেলেছে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের গভীর রাত পর্যন্ত সমুদ্রসৈকতে অবস্থানও এসব প্রাণীকুলের জন্য ক্ষতিকারক। কেননা তাদের সঙ্গেও আলো থাকে। এছাড়া সাগরের পাশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পও প্রাণী জগতের আবাসকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এক কথায় বলতে গেলে, ক্ষুদ্রতম এসব প্রাণীজগৎ নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। অথচ তারা আমাদের গ্রহের ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই হেডলাইট থেকে রাস্তার আলো অনাবশ্যক ফ্লাডলাইটের তীব্রতাসহ ক্ষতিকর আলোর যতগুলো উৎস রয়েছে, সব কয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করতে মাত্রা বেঁধে দেয়া উচিত বলে মনে করেন গবেষকরা। না হয় আলোটা উজ্জ্বল হলেও ভবিষ্যৎটা মোটেই আলোকিত হবে না।

 

ওবায়দুল্লাহ সনি: সাংবাদিক

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন