বাংলাদেশে ৫৫টা ডিভিশন ৪৮ জন মন্ত্রী। এত বড় সরকার বা মন্ত্রী কোনো দেশে দেখা যায় না। যুক্তরাজ্যে সাতজন ও যুক্তরাষ্ট্রে ১৩ জন মন্ত্রী। আমাদের দেশে সময়ক্ষেপণ তো হবেই। এত বড় মন্ত্রিপরিষদের জন্য আমাদের দেশে সমন্বয়হীনতা দেখা যায়। তিনি আরো বলেন, সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে নেয়ার একটা প্রচেষ্টা চলে। সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যেতে হবে কেন? সবার উচিত সুন্দর, কার্যকর জবাবদিহিমূলক নগর সরকার প্রতিষ্ঠা করা। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে রোববার এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। ‘রাজধানী পরিকল্পনা ও উন্নয়ন’ শীর্ষক সেমিনার এবং মুক্ত আকাশের ধ্রুবতারা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সরকারের প্রশংসাও করেন। তিনি বলেন, আমাদের সরকার গৃহহীনদের গৃহের ব্যবস্থা করেছে। আমরা পরিকল্পিত নগরের জন্য উৎসাহিত করছি। সরকার সব শ্রেণীর মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করাকে গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
প্রতিমন্ত্রী নগরের কাজের সমন্বয়ের কথা উল্লেখ করে আরো বলেন, একটি দেশে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থাকলে সমন্বয়ের সমস্যা থাকবেই। বিদেশে কয়েকটা নগর মিলে একজন গভর্নর আছে। এ দেশে সে চিন্তা করা যায় কিনা। যিনি নগরের সবকিছু দেখবেন। আমাদের দেশের নগর ব্যবস্থাপনার মডেল কলকাতা ও দিল্লির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কাজেই আমাদের গতানুগতিক চিন্তার বাইরে আসা দরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর গবেষণা কেন্দ্রের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, পিএএ এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের (ডিএফপি) মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী ও পরিকল্পনাবিদ মো. এমদাদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মুক্ত আকাশের ধ্রুবতারার উপদেষ্টা সম্পাদক ও রিহ্যাবের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মো. আব্দুল আউয়াল। স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্ত আকাশের ধ্রুবতারার সম্পাদক ও প্রকাশক মো. শামসুল আলম। এছাড়া অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রকৌশলী, পেশাজীবী ও মুক্ত আকাশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, রাজউকের কর্মী দল অদক্ষ, গাজীপুরে প্ল্যান হচ্ছে, ঢাকায় হচ্ছে। কিন্তু করছেনটা কী! কাজের কাজ হচ্ছে না। সবার জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে তার জন্য প্রয়োজন সবার আগে দরিদ্র, বস্তিবাসীদের জন্য কিছু করা।
সভাপতির বক্তব্যে মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, আমরা এ দেশের নাগরিকদের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা যদি ভাবি দেশের জন্য কী করলাম তাহলে আমাদের থেকে দেশ ভালো কিছু পাবে। সারা দেশ থেকে সব মানুষ ঢাকায় আসছে, সুতরাং আমাদের এই শহরকে বাঁচাতে হবে। আর এর প্রধান দায়িত্ব সরকারের।
অনুষ্ঠানে দেশের প্রথিতযশা ৫০ জন পেশাজীবীর জীবন ও কর্ম নিয়ে প্রকাশিত ‘মুক্ত আকাশের ধ্রুবতারা’ নামে গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা।
