দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করলেন আশা পারেখ। ভারতীয় সিনেমায় অবদান রাখার জন্য সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মানটি লাভ করলেন তিনি। ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন শিশুশিল্পী হিসেবে। এরপর তিনি তার ক্যারিয়ারের সুবর্ণ সময় পার করেছেন। সে সময়ে তিনি জুটি বাঁধতেন দেব আনন্দ, শাম্মি কাপুর ও রাজেশ খান্নার মতো স্টারদের সঙ্গে। ফলে তার সঙ্গে অভিনয় করতে গেলে সে সময়কার অন্য নায়করা যেতেন। স্বাভাবিকভাবেই তারা আশা পারেখকে ‘মুডি’ মনে করতেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে আশা পারেখ নিজেই এ স্মৃতি উল্লেখ করেছেন।
আশা পারেখ সত্যিই কিছুটা চুপচাপ থাকতেন। তার এ স্বভাবের কারণে নানা সময়েই বিড়ম্বনায় পড়েছেন। আশা এর আগেও একবার বলেছেন তার এ স্বভাবের কারণে তাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিতেও দ্বিধা করত। আশা পারেখ বলেছেন তার এমন পরিচিতির কারণ মূলত তার মা।
এফএম কানাডাকে তিনি তার মা সুধা কাপুর সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘মা ছিল আমার জীবনের একমাত্র সহযোগী। আমার মেরুদণ্ডের মতো তিনি। আমার জন্য তিনিই সবকিছু ছিলেন। আর একমাত্র সন্তান হওয়ায় আমি কিছুটা জেদিও ছিলাম। তিনি আমাকে এ ইন্ডাস্ট্রিতে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। তিনি খুবই রক্ষণশীল ছিলেন আমার ব্যাপারে। আমার ধারেকাছে কাউকে আসতে দিতেন না।’
আশা পারেখ ষাট ও সত্তরের দশকে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তার তিসরি মঞ্জিল মুক্তি পায় ১৯৬৬ সালে। এ সিনেমা আজও কিংবদন্তি সিনেমার মর্যাদা পায়। ১৯৭০ সালে মুক্তি পায় ‘কাটি পতং’। এ সিনেমার গান এখনো বাজতে থাকে ঘরে ঘরে। এছাড়া আনপড়, জ্বালা, ক্যারাভান তার বিখ্যাত সিনেমা। এসবের পেছনে আশা পারেখ তার মায়ের অবদানের কথা বলেন। কিন্তু সেসবের পেছনে আরেকটি বিষয় ছিল। তিনি মানুষ থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েন। তার ভাষায়, ‘আমি ঠিক জানি না, কেন সবাই আমার থেকে একটু দূরত্ব বজায় রাখত। ভয় পেত। আমি খোলাখুলিভাবেই বলছি, বহু নায়ক ছিলেন যারা আমার সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারেও ভীতির মধ্যে থাকতেন। আমি জানি না, তারা কেন এমন বোধ করতেন। কেননা যখন কথা বলতাম তখন তারা আমার বন্ধু হয়ে যেতেন। আমার বাবা-মা আমাকে অনেক সাধারণভাবে অন্যদের সঙ্গে মিশতে শিখিয়েছেন। তারা আমাকে স্টারের মতো করে বড় করেননি।’
আশা পারেখ এ বছর কেবল দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারটি পেয়েছেন তার জন্মদিনের ঠিক আগের দিন। গতকাল ছিল তার ৮০তম জন্মদিন।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস