ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের শাল্লায় সালিশের কথা বলে কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু একই পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (মেম্বার) দেবব্রত দাস মাতবরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বিকালে সুনামগঞ্জ শহরের পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন তার ভাই জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডভোকেট খায়রুল কবির রুমেনের পক্ষে শাল্লায় নির্বাচনী জনসংযোগে যান। ওই দিন কিশোরী ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু ব্যারিস্টার এনামুল কবির ইমনের সঙ্গে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে জনসংযোগ এবং তার ইউপি কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। বিষয়টি জানার পরও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেনি। পরে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিকালেই তারা পালিয়ে যান। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে নড়েচড়ে বসে শাল্লা থানা পুলিশ। অবশেষে গতকাল বিকালে মামলার প্রধান আসামি ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু  ইউপি সদস্য দেবব্রত দাস মাতবরকে গ্রেফতার করা হয়।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, ধর্ষণ মামলার প্রধান দুই আসামিকে গতকাল বিকালে সুনামগঞ্জ শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের শাল্লায় আনা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়নের বাহাড়া গ্রামের মলয় দাসের সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই কিশোরীর। বিয়ে না করায় গত জানুয়ারিতে প্রেমিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করে ওই কিশোরী। মামলায় প্রেমিক মলয় দাস দীর্ঘদিন কারাবাসের পর  জামিনে মুক্ত হয়ে অন্যত্র বিয়ে করার প্রস্তুতি নেন। বিষয়টি জানার পর গত ১৫ সেপ্টম্বর রাত ৮টায় ওই কিশোরী মলয়ের বাড়িতে অবস্থান নেয়। পরে মলয়ের পরিবার বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টুকে জানায়। কিছুক্ষণ পর চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু মলয়ের বাড়িতে গিয়ে সমঝোতা করে দেয়ার কথা বলে ওই কিশোরীকে রাতেই বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরের দিন সকালে সালিশের কথা বলে উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে ওই কিশোরীকে ডেকে নিয়ে চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ ২নং ওয়ার্ডের সদস্য দেবব্রত ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে ওই দিন রাতে শাল্লা থানায় তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের হয়। এরপর থেকে বাহাড়া চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ সদস্য দেবব্রত পলাতক ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন