কমেছে আমদানি-রফতানি

টানা পঞ্চম মাসে সংকুচিত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

অর্থনীতিজুড়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চার দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় মূল্যস্ফীতি। আগ্রাসীভাবে সুদের হার বাড়াচ্ছে ফেডারেল রিজার্ভ। সব মিলিয়ে চলতি বছরের শেষ দিক কিংবা আগামী বছরের মধ্যেই মন্দা দেখা দিতে পারে বলে শঙ্কা বিশ্লেষকদের। এমন পরিস্থিতিতে ভোক্তারাও অতিপ্রয়োজনীয় নয় এমন পণ্যে ব্যয় এড়িয়ে চলছেন। অবস্থায় আমদানি কমিয়ে দিতে হয়েছে ওয়াশিংটনকে। ফলে কমে গিয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি। আগস্টে নিয়ে টানা পঞ্চম মাসের মতো দেশটির পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি সংকুচিত হয়েছে। খবর রয়টার্স।

সম্প্রতি প্রকাশিত বাণিজ্য বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পুনরায় মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) অবদান রাখবে। আগস্টে পাইকারি খুচরা মজুদও অর্থনৈতিক উন্নতিতে সহায়তা করতে পারে। যদিও ভোক্তা ব্যবসায়িক ব্যয় ধীর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিসংখ্যান অর্থনীতিবিদদের সর্বশেষ প্রান্তিকে জিডিপি প্রবৃদ্ধির অনুমান আপগ্রেডে প্ররোচিত করছে। সময়ে জিডিপি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক শতাংশ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে টানা দুই প্রান্তিক সংকোচনের পর প্রবৃদ্ধির দেখা পাবে মার্কিন অর্থনীতি।

ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি মুডি অ্যানালিটিকসের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রায়ান সুইট বলেন, জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের জিডিপির জন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সময়ে জিডিপি যে শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে এমনও নয়।

আগস্টে পণ্য বাণিজ্য ঘাটতি দশমিক শতাংশ কমে হাজার ৭৩০ কোটি ডলারে নেমেছে। বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ২০২১ সালের অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন। সময়ে পণ্য আমদানি ব্যয় ৪৬০ কোটি ডলার কমে ২৬ হাজার ৭১০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। পেট্রোলিয়ামসহ শিল্প সরবরাহের আমদানি দশমিক শতাংশ কমে গিয়েছে। পাশাপাশি প্রসাধন পণ্যের আমদানি দশমিক এবং ভোগ্যপণ্যের আমদানি দশমিক শতাংশ কমেছে। তবে খাদ্য, মোটরগাড়ি অন্যান্য পণ্যে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত সপ্তাহে নীতিগত সুদহার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সুদের হার একই হারে বাড়ানো হলো। চলতি বছর আরো বড় বৃদ্ধিরও ইঙ্গিত দিয়েছে ব্যাংকটি। মার্চ থেকে ফেডারেল রিজার্ভ নীতিগত সুদহার শূন্যের কাছাকাছি থেকে বর্তমানের থেকে দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়েছে।

ক্রমবর্ধমান ঋণের খরচ এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি ভোক্তা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তাদের ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটতে বাধ্য করছে। অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, আমদানি হ্রাস অব্যাহত থাকবে। আমদানির পাশাপাশি রফতানিও সংকুচিত হয়েছে। আগস্টে রফতানি আয় ১৭০ কোটি ডলার কমে ১৭ হাজার ৯৮০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। রফতানি হ্রাসে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে অটোমোবাইল শিল্প। দেশটির গাড়ি রফতানি দশমিক শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। পাশাপাশি শিল্প সরবরাহের রফতানিও দশমিক শতাংশ কমেছে। যদিও ভোগ্যপণ্যের রফতানি শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া খাদ্য, মূলধন অন্যান্য পণ্যের রফতানিও বেড়েছে।

রফতানির সামগ্রিক পতনে শক্তিশালী ডলারও ভূমিকা রেখেছে। কঠোর মুদ্রানীতি এবং বিশ্বব্যাপী চাহিদা দুর্বল হয়ে যাওয়ায় ডলারের বিনিময় হার বেড়ে গিয়েছে। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের মুদ্রার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার ১০ দশমিক শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।

অর্থনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের মার্কিন অর্থনীতিবিদ ম্যাথিউ মার্টিন বলেন, আমরা আশা করি না যে, শিগগিরই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। আগামী মাসগুলোয়ও পণ্য বাণিজ্যের ব্যবধানটি সংকুচিত হবে।

পৃথক প্রতিবেদনে বাণিজ্য বিভাগ জানিয়েছে, আগস্টে পাইকারি পণ্যের মজুদ দশমিক শতাংশ বেড়েছে। জুলাইয়ে হার দশমিক শতাংশ ছিল। অন্যদিকে খুচরা পণ্যের মজুদ জুলাইয়ে দশমিক শতাংশের চেয়ে আগস্টে দশমিক শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া গাড়ির মজুদ আগের মাসের দশমিক শতাংশের তুলনায় আগস্টে দশমিক শতাংশ বেড়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন