নাম্বার টেম্পারিং

ঢাবিতে মিডটার্মে অনুপস্থিত থেকেও শিক্ষার্থী পেল ২২!

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, ঢাবি

৫ম সেমিস্টারের মিডটার্ম পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সঙ্গীত বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের এক শিক্ষার্থী। এতে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত ওই পরীক্ষায় তিনি শূন্য নাম্বার পান। যদিও অনার্সের চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায়, টেবুলেশন শিটে ওই শিক্ষার্থীর রোলের ঘরে ২২ দেয়া হয়েছে। পরে এ ঘটনায় পরীক্ষা কমিটির সদস্য ও টেবুলেটর সহযোগী অধ্যাপক ড. দেবপ্রসাদ দাঁ’র দিকে আঙুল তোলে সংশ্লিষ্টরা।

বিভাগের একাধিক শিক্ষকের ভাষ্যমতে, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ড. দেবপ্রসাদ দাঁ কাউকে না জানিয়ে একাই সমাধান করার চেষ্টা করেছেন।অধ্যাপক ড. শাহনাজ নাসরিন ইলার সভাপতিত্বে ওই কমিটির আরেক সদস্য হলেন সহকারী অধ্যাপক মো. এনামুল হক। 

পরীক্ষা কমিটি ও বিভাগের একাধিক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ২১৩১ রোল ধারী ওই শিক্ষার্থী দু'টি মিডটার্ম পরীক্ষাতেই অনুপস্থিত ছিলেন। এতে ২০১৯ সালের টেবুলেশন শিটে ওই শিক্ষার্থীকে অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। পরে ২০২০ সালে ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ফাইনাল পরীক্ষায় ইম্প্রুভ দেয় ওই শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে বিভাগের একজন শিক্ষক বণিক বার্তাকে বলেন, মিডটার্ম ইম্প্রুভ দেয়ার সুযোগ নেই। একই কোর্সের অন্যান্য পরীক্ষায় সর্বমোট ন্যূনতম ৪০ নাম্বার পেলে ওই শিক্ষার্থীকে কৃতকার্য ঘোষণা করা হবে। এক্ষেত্রে ফাইনাল পরীক্ষায় ইম্প্রুভ দিয়ে নিজের মার্কস বাড়াতে পারেন। 

২০২০ সালে করা টেবুলেশন শিটে দেখা যায়, ওই শিক্ষার্থীকে কৃতকার্য দেখানো হয়েছে; এবং মিডটার্মে ২২ সহ সর্বমোট ৬৪ নাম্বার দেয়া হয়েছে। তার প্রাপ্ত গ্রেড বি। বিষয়টি নিয়ে বিভাগের শিক্ষকেরা টেবুলেটর অধ্যাপক ড. দেবপ্রসাদের দিকে প্রশ্ন তোলেন। এক পর্যায়ে নিজের ভুলের কথা স্বীকার করেন পরীক্ষা কমিটির এ সদস্য। এমনকি বণিক বার্তার কাছেও বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ২০২০ সালে ওই শিক্ষার্থীর টেবুলেশন শিটে ভুল করে শূন্যের জায়গায় ২২ দেয়া হয়েছিলো। পরে এটা সংশোধন করা হয়েছে। এখন ঠিক আছে। 

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহনাজ নাসরিন ইলার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এ বিষয়ে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, মনে হচ্ছে, এ ভুলটা অনেক পরে ধরা পড়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কেউ কিছুই জানায়নি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আপনাকে জানাবো। 

নাম্বার সংশোধনের বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতিকে জানানো হয়েছিলো কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দেব প্রসাদ দাঁ বলেন, আমি নিজেই সভাপতি ছিলাম। তাহলে অধ্যাপক ড. শাহনাজ নাসরিন ইলা কমিটির কে ছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে আমার মনে নেই। দেখতে হবে।

এধরনের ভুল সংশোধনের প্রক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি পরীক্ষা উপ-নিয়ন্ত্রক মো. রোকনুজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী টেম্পারিংয়ের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতে ভুলের মাত্রা বিবেচনায় উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), অথবা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করতে হবে। তারপর যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে সংশোধন করতে হবে। সঙ্গীত বিভাগের এ ঘটনাকে বড় ভুল বলেই তিনি জানান। 


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন