মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী ব্যাংক অব ইংল্যান্ড

বণিক বার্তা ডেস্ক

লন্ডনের ব্যুরো দে চেঞ্জের সামনে স্থাপিত মুদ্রার বিনিময় হার নির্দেশিকা। সম্প্রতি ব্রিটিশ পাউন্ডের বিনিময় হার নেমে আসে ইতিহাসের সর্বনিম্নে ছবি: এপি

ব্রিটেন সরকারের কর কমানোর পরিকল্পনার পর পরই পাউন্ডের দরপতন দেখা দিয়েছে। উদ্বেগ দেখা দেয় জাতীয় ঋণ পরিশোধে ব্যয় বেড়ে যাওয়ারও। এমন পরিস্থিতিতে মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটিশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকব্যাংক অব ইংল্যান্ড খবর বিবিসি।

বাজার অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে তা যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক স্থিতির জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করবে বলেও সতর্ক করেছে। এরই মধ্যে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জরুরি ভিত্তিতে সরকারি বন্ড ক্রয় শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। উদ্দেশ্য মুদ্রাবাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। 

ব্রিটেন সরকার কর কমানোর ঘোষণা দেয়ার পর  পাউন্ডের বিনিময় হার কমে ডলার সেন্টে নেমে আসে।

গত সোমবার যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী দেশটির মিনি বাজেট ঘোষণা করেন। এতে হাজার ৫০০ কোটি ডলার সমমূল্যের কর কর্তন পরিকল্পনার কথা বলা হয়। অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করার লক্ষ্য হিসেবে পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।

তবে পরিকল্পনা কাজ করবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ বিনিয়োগকারীরা সরকারের কাছে ট্রেজারি বন্ড বা গিল্টসের মাধ্যমে সরকারকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত সুদ দাবি করছেন। এক্ষেত্রে বন্ড কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। এমন পরিস্থিতিতে ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। ব্যাংকটি এসব বন্ড গিল্টস কম সুদেই কেনার ঘোষণা দিয়েছে। এদিকে ব্যাংকের এমন হস্তক্ষেপের পর গিল্ট ইল্ডের সুদহার কমে গিয়েছে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ড এরই মধ্যে জানিয়েছে, পাউন্ডকে শক্তিশালী রাখতে সুদহার বাড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো রকম দ্বিধা করবে না ব্যাংকটি। পাশাপাশি পণ্যের ঊর্ধ্বমুখী বাজার নিয়ন্ত্রণেও সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হবে। কোনো কোনো অর্থনীতিবিদের ধারণা, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদহার বাড়িয়ে দশমিক শতাংশে উন্নীত করবে।

এদিকে এমন প্রক্ষেপণের পর বাজার থেকে হাজারো বন্ধকি পণ্য উধাও হয়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ডে বেশির ভাগ সময় পেনশন ফান্ড সরকারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়। কিন্তু মুদ্রাবাজার চলমান অস্থিরতার কারণে এক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। 

ব্যাংকটি বলছে, এটির বন্ড ক্রয়ের সময় হবে সীমিত। বিনিয়োগকারীদের নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা শিথিল করতে যা যা প্রয়োজন তাই করা হবে। এদিকে গত সপ্তাহেই ব্যাংকটি পরিকল্পিত গিল্ট বিক্রি প্রোগ্রাম চালুর ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রোগ্রাম শুরুর সময়ও স্থগিত করা হবে বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি।

ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের যুক্তরাজ্যবিষয়ক প্রধান অর্থনীতিবিদ পল ডেলস বলেন, প্রাথমিক পর্যায়েই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় বাধ্য হয়েই বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। এর অর্থ হলো অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় যা যা প্রয়োজন তার সবই করবে ব্যাংকটি। এরই মধ্যে ব্যাংকটি কাজ শুরু করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন