৬ হাজার ৫০০ পয়েন্টের নিচে সূচক

পুঁজিবাজারের পতন গড়াল টানা তৃতীয় দিনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি সপ্তাহে টানা তৃতীয় কার্যদিবস পুঁজিবাজারে সূচকের পতন হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে হাজার ৫০০ পয়েন্টের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে গিয়েছে। এক্সচেঞ্জটিতে সূচক কমলেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সূচকের পাশাপাশি দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আসন্ন আর্থিক ফলাফলকে সামনে রেখে বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা রয়েছে। ফলে অনেকেই নতুন করে বিনিয়োগ না করে সাইডলাইনে অবস্থান করছেন। এছাড়া এরই মধ্যে যেসব শেয়ারের দর বেড়েছে সেগুলো বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতাও দেখা যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এতে কয়েকদিন ধরে পুঁজিবাজারে শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। কারণে সূচকেও দরপতন হচ্ছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর পর ১০ মিনিট পর্যন্ত ইতিবাচক ছিল সূচক। এর পর থেকেই পয়েন্ট হারাতে শুরু করে সূচক। অবশ্য সকাল ১০টা মিনিট আবারো ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরে পুঁজিবাজার। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ধারা অব্যাহত থাকে। তবে শেয়ার বিক্রির চাপে এর পর থেকেই নিম্নমুখী হতে শুরু করে সূচক। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে হাজার ৪৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৫১১ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ১৬ পয়েন্ট কমে হাজার ৩১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩৩২ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে পয়েন্ট কমে হাজার ৪১৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৪২০ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ শাহজীবাজার পাওয়ারের শেয়ারের।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ৪৯৪ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৩০০ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৭০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ১৩৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৭৪টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সেবা আবাসন খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাত। আর প্রকৌশল খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে সেবা আবাসন খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল পাট খাতে দশমিক শতাংশ।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ১১ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৪৮৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ৪৯৮ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৮ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৯ হাজার ১৮২ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৫৩টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৬০টির, কমেছে ৯৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৯৯টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১০৩ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১৫ কোটি টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন