ড. জাহিদ হোসেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্র গমন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর শেষে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন। তিনি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান, কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অন ইস্ট সেন্ট্রাল ইউরোপের স্টাফ অ্যাসোসিয়েট, যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস ও ফ্রেমিংহ্যাম স্টেট কলেজে পাঠদান করেছেন। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের সাম্প্রতিক প্রবণতা ও সেটি স্থিতিশীল করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ভূমিকা নিয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেন এ অর্থনীতিবিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা
বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থিরতার কারণ
কী?
অনেক
দিন
ধরে
দেশে
ডলারের
বাজারে
অস্থিরতা
বিরাজ
করছে।
এর
পেছনে
কিছু
মৌলিক
কারণ
আছে।
একটা
কারণ
আন্তর্জাতিক
বাজারে
ডলারের
দাম
বেড়ে
যাওয়া।
বর্তমানে
ডলারের
দাম
যে
পর্যায়ে
আছে
তা
আগে
মাত্র
দুবার
ছিল।
অর্থাৎ
ঐতিহাসিকভাবে
ডলারের
দাম
সর্বোচ্চ
পর্যায়ে
আছে।
দ্বিতীয়
কারণ,
আন্তর্জাতিক
বাজারে
পণ্যমূল্য
অনেক
বেড়েছে।
বিশেষ
করে
রাশিয়া-ইউক্রেন
যুদ্ধের
কারণে
পণ্যমূল্যের
ওপর
চাপটা
আরো
বেড়ে
গিয়েছে।
তৃতীয়
কারণ,
বাংলাদেশের
আমদানির
চাহিদাও
বেড়েছে।
কভিড-পরবর্তী
পুনরুদ্ধার
এর
প্রধান
কারণ।
চতুর্থত
কারণ,
রেমিট্যান্স
প্রবাহের
ওঠানামা।
রেমিট্যান্স
প্রবাহে
ভাটা
পড়েছে।
একদিকে
আমদানি
ব্যয়
মেটানো
ও
পণ্যমূল্য
বৃদ্ধির
জন্য
ডলারের
চাহিদা
বেড়েছে,
অন্যদিকে
জোগান
কমে
গিয়েছে।
সব
মিলিয়ে
ডলার
সংকট
তৈরি
হয়েছে।
বাজারে সৃষ্ট
ডলারমূল্যের
উর্ধ্বমুখী
চাপ
ঠেকাতে
বাংলাদেশ
ব্যাংক
চলতি
অর্থবছরের
পুরোটা
সময়
ক্রমাগতভাবে
ডলার
বিক্রি
করেছে।
তথ্য
বলছে,
বাংলাদেশ
ব্যাংক
গত
বছর
৭৬০
কোটি
ডলারের
মতো
বিক্রি
করেছে।
কিন্তু
তাতেও
বাজার
স্থিতিশীল
হয়নি।
বরং
বাণিজ্যের
চলতি
হিসাবের
ঘাটতি
প্রায়
চার
গুণ
বেড়েছে।
এ
চাপ
ঠেকানোর
দুটো
উপায়
ছিল।
এক.
বাজারের
চাহিদা
ও
সরবরাহ
অনুযায়ী
বিনিময়
হার
খাপ
খাওয়াতে
দেয়া
এবং দুই.
বাংলাদেশ
ব্যাংক
ঘোষিত
ডলারের
নির্ধারিত
হার
ধরে
রাখতে
জোগানের
ঘাটতি
মেটানোর
ব্যবস্থা
করা।
বাংলাদেশ
ব্যাংক
বৈদেশিক
মুদ্রার
রিজার্ভ
থেকে
ডলার
বিক্রি
করেছে।
কিন্তু
চাপটা
কমেনি।
গত
অর্থবছরে
প্রতি
মাসেই
বাণিজ্য
ঘাটতি
ক্রমাগত
বেড়েছে।
যেখানে
রিজার্ভ
কমে
যাচ্ছে
এবং
চাহিদা
ও
জোগানের
ব্যবধান
আগের
মতো
রয়ে
যাচ্ছে,
সেখানে
নির্ধারিত
বিনিময়
হার
রাখতে
চাইলে
রিজার্ভ
থেকে
ডলার
খরচ
অব্যাহত
রাখতেই
হবে। যখন
বাংলাদেশ
ব্যাংক
দেখল
যে
এভাবে
চালিয়ে
যাওয়া
সম্ভব
নয়,
তখন
তারা
ডলার
বিক্রির
ক্ষেত্রে
সিলেক্টিভ
হলো।
শুধু
নিত্যপ্রয়োজনীয়
পণ্য
বা
জ্বালানির
জন্য
জরুরি
ভিত্তিতে
এলসি
খোলার
জন্য
নির্ধারিত
হারে
ডলার
বিক্রির
কৌশল
নিল
বাংলাদেশ
ব্যাংক।
স্বাভাবিকভাবে এলসি
রেটের
ওপর
একটা
চাপ
পড়ল।
সবাই
ডলার
কিনতে
চায়,
কেউ
বাংলাদেশ
ব্যাংকের
রেটে
বিক্রি
করতে
আগ্রহী
নয়।
ফলে
আন্তঃব্যাংক
বাজারটা
বিকল
হয়ে
গেল।
ডলার
পাওয়ার
একটাই
জায়গা,
বাংলাদেশ
ব্যাংক।
রফতানির
একটা
ধারাবাহিকতা
আছে।
সেখানে
রেট
সমন্বয়ের
সুযোগ
নেই।
বাংলাদেশ
ব্যাংক
বলছে,
রফতানিকারকদের
নির্ধারিত
রেটে
দিতে
হবে।
এটা
নিয়ন্ত্রক
সংস্থার
হুকুম।
কাজেই
ব্যাংকাররা
ছুটল
এক্সচেঞ্জ
হাউজের
দিকে।
যে
এলসি
খোলা
হয়েছে,
সেটি
সময়মতো
নিষ্পত্তি
করতে
হবে।
সেটা
না
পারলে
ব্যাংক
এক
ধরনের
খেলাপির
মতো
হয়ে
যাবে।
এর
ফলে
বিদেশী
করেসপনডেন্ট
ব্যাংকের
সঙ্গে
তাদের
ব্যবসা
করাটা
কঠিন
হয়ে
যাবে।
সেখানে
একটা
ভাবমূর্তির
সংকট
তৈরি
হচ্ছে।
ফলে
অতীতের
সম্পর্কের
ভিত্তিতে
তাদের
হয়
এলসি
ডেফার্ড
করতে
হচ্ছে,
অথবা
যেভাবে
হোক
ডলার
জোগাড়
করে
এলসির
দায়
মেটাতে
হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবে
এলসি
পেমেন্টের
চাপ
শুরু
হলে
ব্যাংকাররা
এক্সচেঞ্জ
হাউজগুলোর
দিকে
ছুটল।
কারণ
বেশি
দাম
দিয়ে
হলেও
ওখানেই
ডলার
পাওয়া
যাচ্ছে।
সেখানে
বাংলাদেশ
ব্যাংকের
কোনো
নিয়ন্ত্রণ
নেই।
ফলে
এক্সচেঞ্জ
হাউজে
ডলারের
রেট
বাড়া
শুরু
করল।
অন্যদিকে
বাজারে
ঘাটতির
কারণে
ক্যাশ
ডলার
মার্কেটেও
প্রভাব
পড়া
শুরু
করল।
সার্বিকভাবে অর্থনীতিতে
প্রভাব
পড়ল।
আন্তঃব্যাংক
বাজারে
কেউ
ডলার
বিক্রি
করতে
আগ্রহী
নয়।
যেটা
বাজার
স্থিতিশীল
রাখার
একটা
প্রক্রিয়া
প্লাটফর্ম।
এক্ষেত্রে
যাদের
কাছে
উদ্বৃত্ত
ডলার
আছে
তারা
ঘাটতিতে
থাকাদের
কাছে
ডলার
বিক্রি
করবে
এবং
রেট
বাজারে
চাহিদা
ও
জোগানোর
ভিত্তিতে
নির্ধারিত
হবে।
যাতে
ডলার
বাজারটা
স্থিতিশীল
থাকে।
এটাই
নিয়ম।
কিন্তু
সেটা
বাংলাদেশ
ব্যাংক
করতে
দিল
না।
তারা
বলল,
আন্তঃব্যাংক
বাজারেও
তাদের
নির্ধারিত
রেটে
ডলার
বিক্রি
করতে
হবে।
কিন্তু
এ
রেটে
সবাই
কিনতে
আগ্রহী,
বেচতে
নয়।
কাজেই
বাজারটি
বিকল
হয়ে
গেল।
এজন্যই
অস্থিরতার
সৃষ্টি
হলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপগুলো কাজ
করছে কী?
বাস্তবতা
আমলে
না
নিয়ে
বাংলাদেশ
ব্যাংক
বিপরীতমুখী
পদক্ষেপ
নিয়েছে।
তারা
বলল,
নির্ধারিত
দরে
ডলার
বিক্রি
করতে
হবে,
না
হলে
যথাযথ
ব্যবস্থা
নেয়া
হবে।
তখন
দেখা
গেল
বাজারে
ডলারই
পাওয়া
যাচ্ছে
না।
কারণ
সবাই
দেখছে
বাজারে
যে
অবস্থা
বিরাজ
করছে
তাতে
বাংলাদেশ
ব্যাংক
যাই
করুক
না
কেন
লিকুইডিটি
সাপোর্ট
না
দিলে
বিদ্যমান
ডলার
রেট
কার্যকর
রাখা
বা
করা
সম্ভব
নয়।
এজন্য
সবাই
ডলার
ধরে
রাখার
দিকে
চলে গেল।
বলতে
পারেন,
সবাই
ডলার
মজুদ
করছে।
মজুদ
করার
আগ্রহটা
তৈরি
হওয়ার
কারণে
নির্ধারিত
রেটে
ডলার
লেনদেন
সম্ভব
নয়।
এটাই
অস্থিরতার
মূল
কারণ।
এখানে রেগুলেটর
আসলে
কী
করতে
চাচ্ছিল,
সেটিই
অনিশ্চিত
হয়ে
পড়েছিল।
রেগুলেটরি
প্রোডাক্টিবিলিটি
না
থাকলে
কিংবা
রেগুলেটরি
কাঠামো
অস্থিতিশীল
হয়ে
পড়লে
বাজার
কীভাবে
স্থিতিশীল
হবে?
কয়েকটি
ব্যাংকের
ট্রেজারির
প্রধানদের
পদ
থেকে
সরিয়ে
দেয়া
কিংবা
হুমকি
দেয়ায়
ভীতিটা
আরো
বেড়ে
গিয়েছে।
এ
কারণে
কিছুদিন
ডলার
পাওয়া
যায়নি।
তারা
ভেবেছে,
ব্যবসা
থেকে
আপাতত
দূরে
থাকি,
যা
আছে
তা
ধরে
রাখি।
এটা
সমস্যাটাকে
আরো
গভীর
করেছে।
স্পেকুলেশনের
মাত্রাটাকে
আরো
বাড়িয়ে
দিয়েছে।
সবাই
জানে
এভাবে
আর
চলবে
না।
কারণ
এটা
বৈদেশিক
মুদ্রার
বাজার।
এখানে
আন্তর্জাতিক
একটা
নিয়ম
আছে।
বিশ্ববাজার
পরিস্থিতি
এখানে
বড়
ভূমিকা
পালন
করে।
সেটি
হুকুম
দিয়ে
নিয়ন্ত্রণ
করা
যায়
না।
তাছাড়া
সেটি
আমাদের
জুরিসডিকশনেরও
বাইরে।
বিদ্যমান সংকটের সমাধান কী
হতে পারে?
এখানে
ব্যাপারটা
খুব
একটা
জটিল
নয়।
একটা
বিনিময়
হার
বেঁধে
দিতে
চাইলে
ওই
রেটে
যা
ঘাটতি
তৈরি
হবে
তা
সাপোর্ট
দিতে
হবে।
অথবা
কোথাও
না
কোথাও
থেকে
সাপোর্টের
ব্যবস্থা
করতে
হবে।
ঘাটতি
মেটাতে
না
পারলে
রেটটাকেই
বাজারের
হাতে
ছেড়ে
দিতে
হবে।
সেটা
পুরোপুরি
ছাড়তে
হবে।
অর্ধেক
ছেড়ে
দেয়া
এবং
অর্ধেক
রেখে
দেয়াটা
ছাড়া
হলো
না।
আমরা
সবাই
কমবেশি
জানি,
রিপোর্টেড
রিজার্ভ
আর
অ্যাকচ্যুয়াল
রিজার্ভের
মধ্যে
একটা
পার্থক্য
আছে।
বাজার
খুব
বেশি
অস্থির
হয়ে
গেলে
সেখানে
মুদ্রা
সরবরাহ
করে
সেটাকে
ঠেকানোর
সক্ষমতা
থাকতেই
বাজারটাকে
ছেড়ে
দেয়াই
সবচেয়ে
ভালো
সিদ্ধান্ত।
তখন
শ্রীলংকার
মতো
পরিস্থিতি
হবে
না।
তাদের
হাতে
কোনো
ডলারের
রিজার্ভই
ছিল
না।
তখন
সবকিছুই
বাজারের
হাতে
ছেড়ে
দিতে
হয়েছে।
পুলিশিং
করে
কতদিন?
এতে
অর্থনীতির
চাকাটাই
থমকে
যাবে।
আমদানি
অর্থায়ন
কীভাবে
করবেন?
এখন বিশ্ববাজারে
জ্বালানিসহ
অন্যান্য
পণ্যমূল্য
কিছুটা
কমার
লক্ষণ
দেখা
যাচ্ছে।
এদিকে
রেমিট্যান্সও
বাড়ছে।
আরো
বাড়বে
বলে
আশা
করা
হচ্ছে।
এ
পরিপ্রেক্ষিতে
কর্তৃপক্ষ
বিশেষ
করে
অর্থ
মন্ত্রণালয়
ও
বাংলাদেশ
ব্যাংক
বলছে,
আরেকটু
উন্নতি
হলে
দুই-তিন
মাসের
মধ্যেই
ডলারের
রেটটা
বাজারের
হাতে
ছেড়ে
দিব।
কিন্তু
আমার
বক্তব্য
হলো,
তিন
মাসের
মধ্যে
অবস্থার
মৌলিক
পরিবর্তন
হবে
তা
ধরে
নেয়ার
কোনো
কারণ
নেই।
বাণিজ্য
ঘাটতি
কিছুটা
হয়তো
কমবে,
কিন্তু
তা
অবস্থাকে
মৌলিকভাবে
পাল্টে
দেবে
না।
বিদ্যমান সমস্যা
সমাধানের
প্রথম
ধাপ
হলো
আন্তঃব্যাংক
বাজারকে
সচল
করতে
হবে।
এরই
মধ্যে
কেন্দ্রীয়
ব্যাংক
উপলব্ধি
করেছে
তাদের
নির্ধারিত
ডলার
রেটে
আন্তঃব্যাংক
বাজার
চালু
হবে
না।
কারণ
এর
সঙ্গে
বাস্তবতার
দূরত্ব
অনেক
বেশি।
তখন
তারা
বাফেদা
এবং
এবিবিকে
ডেকে
বলল,
বাজারকে
চালু
করার
জন্য
তোমরা
কিছু
একটা
করো।
তারা
বলল,
নিয়ন্ত্রণটা
উঠিয়ে
না
নিলে
আমাদের
কিছুই
করণীয়
নেই।
বাংলাদেশ
ব্যাংক
বলল,
আপনারা
মিলে
দর-দাম
ঠিক
করে
দেন।
আন্তঃব্যাংক
মার্কেটে
আমরা
আমাদের
রেট
আরোপ
করব
না
অর্থাৎ
এর
প্রয়োগ
থেকে
বিরত
থাকব।
এমনকি
বাংলাদেশ
ব্যাংক
বলল
যে
আমরা
ঘোষণাও
দিব
না।
কিন্তু
আপনারা
একে
অন্যের
সঙ্গে
প্রতিযোগিতা
করে
এক্সচেঞ্জ
হাউজ
থেকে
ডলার
কিনবেন
না।
স্বাভাবিকভাবে
ক্রেতারা
এক
দরে
কিনলে
একটা
বিপরীতমুখী
ক্ষমতা
তৈরি
হবে।
এতে
স্থিতিশীলতা
আসবে,
এমনটাই
আশা
বাংলাদেশ
ব্যাংকের।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এবার
ডলারের হার
নির্ধারণের বিষয়টি তারা বাজারের হাতে ছেড়ে
দিয়েছে।
আমরা
দেখেছি
ক্রেতারা
এক
হয়ে
বলল,
১০৮
টাকার
বেশি
দিয়ে
কেউ
ডলার
কিনবে
না।
কাজেই
তারা
যদি
বাংলাদেশে
ডলার
রেমিট
করতে
চায়
তাহলে
তাদের
১০৮
টাকা
ছাড়া
কোনো
বিকল্প
নেই।
আর
ইন্টারব্যাংক
মার্কেটকে
ছেড়ে
দেয়া
হবে।
তারপর
এলসি
রেট
কী
হবে
তার
জন্য
একটা
ফর্মুলা
তৈরি
করার
পরামর্শ
দেয়া
হলো।
সেটিই
তারা
করল।
রেগুলেটরই
অথরাইজড
ডিলারদের
বলল,
আপনারাই
ঠিক
করুন
কোন
দামে
ডলার
কিনবেন
আর
কোন
দামে
বেচবেন।
রেগুলেটরের
আশীর্বাদে
একটা
কার্টেল
হয়ে
গেল।
সেজন্য
কেনার
ক্ষেত্রে
যেখানে
যত
কমে
ডলার
কেনা
যায়
আর
যেখানে
যে
দামটা
না
দিলে
ডলার
পাওয়া
যাবে
না
সেখানে
১০৮
টাকা
নির্ধারণ
করা
হলো।
এখন
দেখার
বিষয়
যে
এটা
কাজ
করবে
কিনা।
আগামীতে
যথেষ্ট
ডলার
আসছে
কিনা।
তারপর একটা
ফর্মুলা
তৈরি
করে
দেয়া
হলো।
এলসি
রেট
হবে
একটা
গড়
এবং
সেটি
নির্ভর
করবে
প্রতিটি
ব্যাংকে
রেমিট্যান্স,
এক্সচেঞ্জ
হাউজ
বা
রফতানির
মাধ্যমে
মোট
যে
বৈদেশিক
মুদ্রা
আসছে
তার
ওজনের
ভিত্তিতে।
কাজেই
এখানে
চারটি
সর্বোচ্চ
রেট
নির্ধারণ
করে
দেয়া
হলো।
একটা
হলো
রফতানিতে
সর্বোচ্চ
৯৯
টাকা
দিতে
হবে,
কম
দিলে
অসুবিধা
নেই।
দ্বিতীয়
হলো,
এক্সচেঞ্জ
হাউজ
থেকে
সর্বোচ্চ
১০৮
টাকা
দিয়ে
ডলার
কেনা
যাবে।
কাজেই
এখানে
দুইটি
সিলিং
হয়ে
গেল।
তৃতীয়
হলো,
আন্তঃব্যাংকের
রেট।
বাংলাদেশ
ব্যাংক
তার
নির্ধারিত
ডলার
রেট
আরোপ
না
করায়
আন্তঃব্যাংক
বাজারটা
এখন
সচল
হয়েছে।
যদিও
পুরোদমে
সচল
হয়নি।
এটা
পুনরুদ্ধার
হতে
সময়
লাগবে।
চতুর্থ
হলো
রেমিট্যান্সের
রেট।
এটা
হলো
ব্যাংকের
বৈদেশিক
মুদ্রার
ক্রয়ের
দিক।
ডলার বিক্রির
দিকে
যা
হয়েছে
তা
হলো
ব্যাংক
কোন
রেটে
এলসি
সেটেলমেন্ট
করতে
পারবে
সেটা
এভারেজ
কস্টের
ওপর
নির্ভর
করছে।
আপাতভাবে
দেখালেও
আসলে
ব্যাংকের
ওপর
ডলার
রেট
নির্ধারণের
বিষয়টি
ছেড়ে
দেয়া
হয়নি।
একটা
ফর্মুলা
দেয়া
হয়েছে
মাত্র।
সেহেতু
প্রত্যেকের
গড়
ব্যয়ের
ওপর
খরচটা
ভিন্ন
হবে,
সেহেতু
আমদানি
পর্যায়ে
আমাদের
৫৬টা
রেট
তৈরি
হবে।
প্রশ্ন হলো,
একই
মুদ্রার
এতগুলো
রেট
কীভাবে
হয়।
এটাকে
বলা
হয়
মাল্টিপল
রেট
সিস্টেম।
ইতিবাচক
দিক
হলো
আন্তঃব্যাংক
বাজারে
বাংলাদেশ
ব্যাংক
আর
হস্তক্ষেপ
করছে
না।
যার
কারণে
আন্তঃব্যাংক
বাজারটা
সচল
হয়েছে।
এখন
যে
রেটগুলো
নির্ধারণ
করে
দেয়া
হয়েছে
সেগুলো
আগের
তুলনায়
বাস্তবতার
কাছাকাছি।
তবে
ভিন্ন
ধরনের
রেটের
প্রভাব
অবশ্যই
অর্থনীতিতে
পড়বে।
এর
মূল্য
আমাদের
দিতে
হবে।
কারণ
একটা
সুষ্ঠু
প্রতিযোগিতামূলক
বৈদেশিক
মুদ্রাবাজারে
এতগুলো
রেট
থাকতে
পারে
না।
একে
ভাসমান
বিনিময়
হার
বলাটা
মুশকিল
হবে।
কারণ
এখানে
ভাসার
জায়গাটা
সীমিত।
শুধু
স্প্রেডের
ক্ষেত্রে
ব্যাংকগুলো
(এক টাকা)
কম
বেশি
করতে
পারবে,
কিন্তু
বাকিটা
নির্দিষ্ট।
এলসি
রেট
তখনই
বদলাবে
যখন
তাদের
রেমিট্যান্স
এবং
রফতানি
আয়ের
অংশটা
বদলাবে।
এখন
দেখা
যাবে,
যেসব
ব্যাংকে
রফতানি
আয়ের
জোগান
বেশি
তাদের
এলসি
রেটটা
কম।
যেসব
ব্যাংকে
রেমিট্যান্স
আয়ের
জোগান
বেশি
তাদের
এলসি
রেটটা
বেশি।
ওই
রেট
দেখেই
বোঝা
যাবে
কোন
ব্যাংক
রেমিট্যান্স
নির্ভরশীল
আর
কোন
ব্যাংক
রফতানি
আয়নির্ভরশীল।
বাফেদা
এগুলো
নিয়মিত
ওয়েবসাইটে
দেয়া
শুরু
করেছে।
একই
ডলারের
ভিন্ন
ভিন্ন
ব্যয়।
কাজেই
ডলারের
ভিন্ন
ভিন্ন
রেট
হবে।
সেখানে
কেউ
কেউ
হয়তো
১
টাকা
চার্জ
করবে
না।
ডেসিমেলের
ঘরে
কিছু
ওঠানামা
করবে।
মূল্যের
দিকে
মনে
হবে
এটা
ঠিক
আগের
মতো
স্থির
নেই।
কিছুটা
ভাসমান।
কিন্তু
আসলে
এটা
ভাসমান
নয়;
পুরোপুরি
ব্যয়তাড়িত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের সুফল
কি বাজারে পড়বে? এতে
কি অসুবিধা তৈরি হবে?
সুফল
দুটি।
একটি
হলো
আন্তঃব্যাংক
বাজার
চালু
হওয়া।
দ্বিতীয়ত
এক্সচেঞ্জ
হাউজগুলো
যদি
কোনো
রকম
বাজার
ক্ষমতার
অপব্যবহার
করে
থাকে,
বায়াররা
সবাই
এক
হয়ে
এক
দরে
কেনার
অঙ্গীকার
করায়
সেটি
কমতে
পারে।
সেই
অঙ্গীকার
ভঙ্গ
করার
একটা
সুযোগ
অবশ্য
আছে,
যেহেতু
ডলার
এখনো
শক্তিশালী।
ডলারের
শক্তি
কমার
লক্ষণ
দেখা
যাচ্ছে
না।
বরং
ফেডারেল
রিজার্ভ
সুদের
হার
আরো
বাড়িয়েছে।
এতে
ডলারের
দাম
আরো
বাড়বে।
ডলার
শুধু
রেটের
কারণে
নয়;
অনিশ্চয়তার
কারণেও
বেড়েছে।
যখনই
অনিশ্চয়তা
তৈরি
হয়,
তখনই
ডলারের
ছাতার
নিচে
সবাই
দাঁড়িয়ে
পড়ে।
ভূরাজনৈতিক
ও
অর্থনৈতিক
কোনো
অনিশ্চয়তাই
কাটেনি।
কাজেই
তারা
যে
ঐক্যটা
করেছে,
যেটাকে
ক্রেতাদের
কার্টেল
বলতে
পারেন,
সেটি
কতদিন
ধরে
রাখতে
পারবে,
তা
দেখার
বিষয়।
ডলার সংকটের
প্রভাব
বাণিজ্যে
ভীষণভাবে
পড়ছে।
আমাদের
বর্তমান
বাণিজ্য
নীতি
রফতানি
বহুমুখীকরণের
পথে
বড়
বাধা।
বাণিজ্য
নীতি
সংস্কারে
দুটি
কমিটিও
করা
হয়েছে।
রফতানি
আয়
ও
আমদানি
ব্যয়ের
ডলার
রেটের
মধ্যে
ব্যবধান
তৈরি
করা
কতটা
যুক্তিসংগত,
তা
ভেবে
দেখা
প্রয়োজন।
রফতানিকারককে
৯৯
টাকা
দেয়া
হলো,
কিন্তু
এলসি
রেট
কখনো
৯৯
টাকা
হবে
না।
এটা
৯৯
এবং
১০৮
টাকার
একটা
গড়
হবে।
গত
কয়েকদিন
ধরে
গড়
ব্যয়টা
১০৪
থেকে
১০৫
টাকার
মধ্যে
থাকছে।
তার
মানে
বেশি
দামে
আমদানি
করে
কম
দামে
রফতানি
করতে
হবে।
রফতানিকারকরা
কি
এটি
করবেন?
যারা
বন্ডেড
ওয়ারহাউজ
এবং
ব্যাক
টু
ব্যাক
এলসির
সুবিধা
পান
এতে
তারা
ক্ষতিগ্রস্ত
হবেন
না।
কারণ
তারা
রফতানির
আয়
থেকেই
এলসির
বিলটা
পরিশোধ
করেন।
যারা
ইডিএফ
ফান্ড
পান
তারাও
ক্ষতিগ্রস্ত
হবেন
না।
ক্ষতিগ্রস্ত
হবেন
তারা
যারা
বন্ডেড
ওয়ারহাউজ,
ব্যাক
টু
ব্যাক
এলসির
সুবিধা
এবং
ইডিএফ
পান
না।
তাদের
বাজার
থেকেই
ডলার
কিনতে
হবে।
আয়ের
ক্ষেত্রে
৯৯
টাকা
আর
ব্যয়ের
ক্ষেত্রে
১০৫
টাকা
দিয়ে
কিনলে
রফতানিকারকদের
জন্য
ছয়-সাত
টাকা
অদৃশ্য
করারোপ
হয়ে
যবে।
এতে
তৈরি
পোশাক
শিল্পের
সমস্যা
হবে
না।
কিন্তু
যারা
নতুন
করে
রফতানি
বাজারে
প্রবেশ
করতে
চাইছে
তারা
উৎসাহ
হারিয়ে
ফেলবে।
গার্মেন্টসহ
কিছু
শিল্প
রফতানিতে
শুল্কছাড়
ও
প্রণোদনা
পায়,
বাকিরা
সেটি
পায়
না।
ছোট
ও
মাঝারি
যেসব
উদ্যোক্তা
রফতানি
করতে
আগ্রহী
তারাও
এতে
ক্ষতিগ্রস্ত
হবেন।
দ্বিতীয়ত. ধরা
যাক
কেউ
যদি
১১
মিলিয়ন
ডলারের
পণ্য
এক্সপোর্ট
অর্ডার
দিল।
যদি
তিনি
এক্সপোর্ট
বিলে
১০
মিলিয়ন
ডলার
দেখান,
আর
বাকি
১
মিলিয়ন
ডলার
বায়ারদের
সঙ্গে
সমঝোতা
করে
অন্যভাবে
দেশে
আনেন,
তাহলে
বিষয়টি
কি
দাঁড়াবে?
সেটি
যদি
এক্সচেঞ্জ
হাউজের
মাধ্যমে
আনা
হয়
সেখানে
৯
টাকার
পার্থক্য
তৈরি
হবে।
তাছাড়া
ওই
১০৮
টাকার
উপরে
তিনি
আবার
আড়াই
শতাংশ
ভর্তুকিও
পাবেন।
কারণ
সেটি
রেমিট্যান্স
হিসেবে
আসছে।
তাহলে
তিনি
প্রতি
ডলারে
প্রায়
১১
টাকা
৭০
পয়সা
বেশি
পাচ্ছেন।
১
মিলিয়ন
ডলারে
তিনি
১
কোটি
১৭
লাখ
টাকা
বাড়তি
পাবেন।
কাজেই
আন্ডার
ইনভয়েসিংয়ের
একটা
সুযোগ
থাকছে।
প্রলোভনটা
অনেক
বাড়ছে।
এক্সচেঞ্জ
হাউজগুলোর
মাধ্যমে
ডলার
আনলে
প্রায়
১১
টাকা
৭০
পয়সা
পাবেন।
এক্সচেঞ্জ
হাউজের
মাধ্যমে
নিয়ে
এলে
তা
রেমিট্যান্স
হিসেবে
গণ্য
হবে।
তখন
গড়
ব্যয়
বেড়ে
যাবে।
এলসি
রেটও
বেড়ে
যাবে
যদি
এক্সচেঞ্জ
হাউজের
রেট
না
কমে।
আবার
আমদানিকারক
যদি
রফতানি
আয়
যেসব
ব্যাংকের
বেশি
তাদের
কাছ
থেকে
এলসি
খোলেন
তবে
তিনি
কিছুটা
কম
রেটে
ডলার
পাবেন।
এটি
একটি
বিকৃতি।
এবার আমদানি
প্রসঙ্গে
আসি।
ডলার
রেটের
কারণে
ওভারইনভয়েসিংয়ের
প্রলোভনটাও
বেড়ে
যাবে।
উদাহরণ
দিয়ে
বিষয়টি
স্পষ্ট
করা
যাক।
ধরুন
একজন
আমদানিকারকের
১০
মিলিয়ন
ডলারের
পণ্য
আমদানি
করতে
হবে।
তিনি
যোগসাজসের
মাধ্যমে
আমদানি
ব্যয়
দেখাবেন
১১
মিলিয়ন
ডলার।
১০
মিলিয়ন
ডলারের
পণ্য
আনবেন
আর
বাকি
১
মিলিয়ন
ডলার
রেমিট্যান্স
আকারে
বা
এক্সচেঞ্জ
হাউজের
মাধ্যমে
দেশে
আনবেন।
তিনি
১০৪-১০৫
টাকায়
এলসি
খুলবেন
আর
১০৮
টাকায়
রেমিট্যান্স
হিসেবে
অর্থ
আনবেন।
প্রতি
ডলার
১০৪
টাকা
দরে
এলসি
খোলা
ও
১০৮
টাকা
দরে
রেমিট্যান্স
আনলে
৪
টাকার
পার্থক্য
তৈরি
হবে।
সঙ্গে
আড়াই
শতাংশ
হারে
সরকারের
প্রণোদনা
তো
রয়েছে।
ফলে
আমদানিকারক
ওভার
ইনভয়েসিং
করে
অর্থ
পাঠিয়ে
রেমিট্যান্সের
মাধ্যমে
দেশে
আনলে
প্রতি
ডলারে
৬
টাকা
৭০
পয়সা
বেশি
পাবেন।
১
মিলিয়ন
ডলারে
বাড়তি
আয়
হবে
৬৭
লাখ
টাকা।
এটা
আরেকটা
বিকৃতি।
এ ধরনের প্রলোভনে সবাই সাড়া
দিলে কী
হবে?
রফতানি আয় থেকে সরকার যে উৎসে কর পেত, তা কমে যাবে। কারণ এক্সপোর্টাররা আন্ডারইনভয়েসিং করছে। আবার ওই টাকা রেমিট্যান্স হিসেবে নিয়ে আসছে। আমদানিকারকরাও যদি রেমিট্যান্স হিসেবে রাউন্ডট্রাপিং করে তাহলে রেমিট্যান্সের ওপর সরকারের ভর্তুকি ব্যয়ও বেড়ে যাবে। রাজস্ব আয় কমে যেতে পারে, ভর্তুকি ব্যয় বেড়ে যেতে পারে। এর কারণ একই মুদ্রার বিভিন্ন দর। এ রকম হলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়বে। কম দামে কিনে বেশি দামে বেচার সুযোগ সবাই খোঁজে। ডলারের মাল্টিপল রেট থেকে সরে না এলে এ জাতীয় সমস্যা থেকে যাবে। আর্থিক চাপ বেড়ে যাবে। বাজার আরো বিকৃত হবে।