কালচারাল কমপ্লেক্স হবে এসডি বর্মণের বাংলাদেশের বাড়ি

ফিচার ডেস্ক

কুমিল্লায় শচীন দেববর্মণের বাড়ি

বর্ণে-গন্ধে-ছন্দে-গীতিতে সবার হূদয়ে যিনি দোলা দিয়েছিলেন, তিনি শচীন দেববর্মণ। বিখ্যাত এই সংগীতজ্ঞ, শিল্পী সুরকার উপহার দিয়েছেন বেশকিছু কালজয়ী গান। এসডি বর্মণ নামেই সর্বাধিক পরিচিত গায়কের শোনো গো দখিন হাওয়া, প্রেম করেছি আমি অথবা তুমি এসেছিলে পরশু, কাল কেন আসনি, তুমি আর নেই সে তুমি’—এসব গান শোনেনি এখনো তেমন মানুষ পাওয়া ভার। এবার শচীন দেববর্মণের স্মৃতি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিল বাংলাদেশ। শচীন দেববর্মণের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটিকে করা হবে সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোটি ১০ লাখ টাকা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ১৯০৬ সালে কুমিল্লার রাজবাড়ির দক্ষিণ চারতা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এসডি বর্মণ। জীবনের প্রথম ১৮টি বছর সেখানেই কাটান তিনি। গোলাম ফারুক নামে একজন আইনজীবী লেখক এই সংগীতজ্ঞের ওপর ৫৯৬ পাতার একটি বই সম্পাদনা করেছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে গোলাম ফারুক বলেন, বাবার তত্ত্বাবধানে শচীন দেববর্মণের সংগীতের জ্ঞান বিস্তৃত হয়েছিল। তার বাবা একজন সেতারবাদক ছিলেন। কুমিল্লা জেলা স্কুল থেকে তিনি পড়াশোনা সম্পন্ন করেন এবং ভিক্টোরিয়া গভর্নমেন্ট কলেজ থেকে ১৯২৪ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

সংগীতের এই কিংবদন্তি যে বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন এবং বেড়ে ওঠেন, সেটিকে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর সুরক্ষিত রাখার ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ। ফারুক জানান, বাড়িটি সাত একর জমির ওপর অবস্থিত, কিন্তু অনেক বছরব্যাপী সেটা দখলদারদের অধীনে ছিল, আর পরিত্যক্ত অবস্থায়ই পড়ে ছিল।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান পিটিআইকে জানান, প্রশাসন এখন বাড়ি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কাছে বুঝিয়ে দেয়ার অপেক্ষা করছে। এরই মধ্যে বাড়িটির সব সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে।

গোলাম ফারুক বলেন, কাজী নজরুল ইসলামও দেববর্মণের বাড়িতে এসেছেন। তার সঙ্গে গান গেয়েছেন। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সরকারি কমকর্তা বলেন, পাকিস্তান আমলে পরিত্যক্ত বাড়িটি সামরিক গুদামঘর হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তারপর যখন ওই গুদামঘর সরিয়ে নেয়া হয় তখন সেটা একটি পোলট্রি ফার্মের দখলে চলে যায়, আর তার পর থেকেই ওই জায়গাটি কুমিল্লা পোলট্রি ফার্ম নামে পরিচিত হয়ে ওঠে বলেই জানান তিনি।

শচীন দেববর্মণ অনেকের কাছেই শচীন কর্তা নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯২৪ সাল পর্যন্ত তিনি কুমিল্লায়ই বসবাস করেন। পরে তিনি উচ্চশিক্ষার জন্য কলকাতায় পাড়ি জমান। তারপর ৪৪ সালে যান মুম্বাইতে। ৪৭-এর পরে দেববর্মণ পরিবারের যারা কুমিল্লার বাড়িতে বসবাস করতেন তারা ভারতে চলে যান। ১৯৭৫ সালের ৩১ অক্টোবর ভারতের মুম্বাইয়ে মৃত্যুবরণ করেন শচীন কর্তা।

 

সূত্র: দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন