আমরণ অনশনের ডাক দিয়ে পিছু হটলেন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃতরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত ১২ নেতা। আজ সোমবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করলে আমরণ অনশনে বসবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতারা। পরে দলীয় নেতাদের আশ্বাসে তারা শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় ত্যাগ করেন। 

এ প্রসঙ্গে সহ-সভাপতি পদ থেকে সদ্য বহিষ্কার হওয়া সোনালি আক্তার বণিক বার্তাকে জানান, আমরা আমাদের বিষয়টি আলোচনা করতে নেত্রীর রাজনৈতিক রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুল আওয়াল শামীম আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে আমাদের প্রসঙ্গটি তারা দেখবেন। তাই আমরা অনশনের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।

আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান বণিক বার্তাকে জানান, তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসেছিলো। তারা এখানে কিছুক্ষণ থেকে ফিরে গিয়েছে। অনশনের প্রসঙ্গটি আমার জানা নেই। 

এদিন বেলা ১১টার দিকে ইডেন কলেজ গেটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ১৬ নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কারের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান বহিষ্কৃতরা। তা না হলে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করার কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে বহিষ্কৃত নেতা সুস্মিতা বাড়ৈই বলেন, তদন্ত ছাড়া এ বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়েছে। এ ভিত্তিহীন বহিষ্কারাদেশ যদি প্রত্যাহার এবং এর সুষ্ঠু বিচার না করা হয় তাহলে আমরা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।

এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর রীভা ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। পরবর্তীতে শনিবার রাতে জান্নাতকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ উঠে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের একাংশের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়াকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন। পরদিন রোববার দুপুরে জান্নাতের সমর্থকরা ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।প্রতিবাদে বিকালে সভাপতি রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া নিজেদের সমর্থকদের নিয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাসের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে জান্নাতের সমর্থকরা বাধা দেয়। তখন মারামারি বেঁধে গেলে কয়েক জন আহত হন।

দিনভর উত্তেজনা আর মারামারির পর রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সেইসঙ্গে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ১৬ জনকে বহিষ্কার করার কথা জানায় সংগঠনটি। ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। সেইসঙ্গে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণের ভিত্তিতে ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সোনালি আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, জেবুন্নাহার শিলা, কল্পনা বেগম, জান্নাতুল ফেরদৌস, আফরোজা রশ্মি, মারজানা উর্মি, সানজিদা পারভীন চৌধুরী, এস এম মিলি, সাদিয়া জাহান সাথী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা খানম বিন্তি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিয়া আক্তার বৈশাখী এবং কর্মী রাফিয়া নীলা, নোশিন শার্মিলী, জান্নাতুল লিমা, সূচনা আক্তারকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন