উপাত্ত সুরক্ষা আইন

ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর সরকারি নজরদারি বাড়বে: টিআইবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়ায় জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যে অনুপ্রবেশের সুযোগ রাখা হয়েছে বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) সংস্থাটি মনে করে, স্বাধীন কমিশনের পরিবর্তে সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি এজেন্সি গঠন, দায়মুক্তির সুযোগ উপাত্ত স্থানীয়করণের মতো বিধান অবিবেচনাপ্রসূত। এর মাধ্যমে জনগণের ব্যক্তিগত তথ্যের ওপর নজরদারির আশঙ্কা জোরদার হয়েছে।

২০ সেপ্টেম্বর প্রস্তাবিত আইনের সর্বশেষ খসড়ার ওপর টিআইবির বিস্তারিত বিশ্লেষণ সুপারিশ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। বিষয়ে গতকাল গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠায় সংস্থাটি। সেখানে বিশেষজ্ঞ সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় চলমান রেখে আলোচ্য খসড়াটিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার দাবি জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, টিআইবি মনে করে উপাত্ত সুরক্ষার দায়িত্ব ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সির মহাপরিচালকের ওপর ন্যস্ত রাখার বিধান সব শেষ খসড়ায় বাদ দেয়া হলেও তা ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার বন্ধে কোনো ভূমিকা রাখবে না।

সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক . ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা দেখছি, সরকারের নিয়ন্ত্রণে আলাদা একটি এজেন্সি গঠনের কথা বলা হচ্ছে। অন্য ধারায় আবার ব্যক্তিগত তথ্যে অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম সৃষ্টি করে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সব ব্যক্তিগত তথ্য দেশের অভ্যন্তরে সংরক্ষণ করার বাধ্যবাধকতা। তিনটি বিধানকে একসঙ্গে বিবেচনা করা হলে এটা বুঝতে সমস্যা হয় না যে এখানে সরকার যেন খেয়ালখুশিমতো জনসাধারণের তথ্যে অনুপ্রবেশ নজরদারির সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা হচ্ছে।

ভারত, ইন্দোনেশিয়া ভিয়েতনামের উদাহরণ টেনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, শুরুতে দেশগুলো স্থানীয়করণের কথা ভাবলেও বাস্তবতা বিবেচনায় সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে। তিন দফা খসড়া সংশোধন হলেও কোনো এক অজ্ঞাত কারণে এখনো সব তথ্য দেশেই সংরক্ষণের চিন্তা বাদ দেয়া হচ্ছে না। আশঙ্কা আছে, দেশের বাইরে তথ্য স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণের ফলে বাংলাদেশের জিডিপি শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। সঙ্গে আছে পরিচালনগত চ্যালেঞ্জ। সার্ভার স্থাপনের প্রয়োজনীয় অনুমতি, জমি অধিগ্রহণ, নিরবচ্ছিন্ন পানি বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং দক্ষ জনশক্তি কীভাবে নিশ্চিত করা হবে, সেটাও স্পষ্ট নয়। ১৭ কোটি মানুষের দেশে তথ্য সংরক্ষণের জন্য কোন ক্ষমতার সার্ভার প্রয়োজন এবং তা সচল রাখতে কী পরিমাণ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে, খসড়া প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্টজন তা বিবেচনা করেছেন কিনা, তাও পরিষ্কার নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন