বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির প্রতি আস্থার অংশ হিসেবে আগামী বছরের মধ্যে চীনে আরো এক হাজার কর্মসংস্থান বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে মাইক্রোসফট। চীনের প্রযুক্তিবাজারে যখন ব্যাপক হারে কর্মী ছাটাই চলছে তখনই এ ঘোষণা দিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্টটি। খবর টেকটাইমস।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চীনে মাইক্রোসফটের ৯ হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে আরো এক হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে ১০ হাজারে উন্নীত করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের রেডমন্ট ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টটি। চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উইবোর অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত এক বিবৃতি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মাইক্রোসফটের তথ্যানুযায়ী, চীনে তাদের মোট কর্মীদের ৮০ শতাংশ গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে যুক্ত। চীনের বাজারে ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের সময় এ খবরটি প্রকাশ্যে আসে। এক নোটে প্রতিষ্ঠানটি জানায় যে তারা সুঝু, সাংহাই ও বেইজিংয়ৈ তাদের ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের বিষয়েও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরে ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের কাজ চলবে বলে জানা গেছে।
চীনের ১৩টি শহরে মাইক্রোসফটের অফিস রয়েছে। দুর্বল অর্থনীতি ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর পদক্ষেপের কারণে চীনের অধিকাংশ প্রযুক্তি জায়ান্ট কর্মী ছাটাই করেছে। চলতি সপ্তাহে
শুরুতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম ই-কমার্স সংস্থা শপি তাদের পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কর্মীদের অব্যাহতি দিয়েছে।
২০২২ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ভিডিও গেমিং জায়ান্ট টেনসেন্ট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পাঁচ হাজার ৫০০ কর্মী ছাটাই করেছে। একই সময়ের মধ্যে স্মার্টফোন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান শাওমি ৯০০ কর্মসংস্থানের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। যা তাদের মোট জনবলের প্রায় ৩ শতাংশ। একই প্রান্তিকে আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিংয়ের বেতনভুক্ত কর্মীর সংখ্যা ৯ হাজার ২০০ কমেছে।
জুলাইয়ে মাইক্রোসফট বিশ্বের মোট ১ লাখ ৮০ হাজার কর্মীদের মধ্য থেকে একটি ছোট অংশকে অব্যাহতি দিয়েছে বলে জানিয়েছে। ব্লুমবার্গের তথ্যানুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির ভোক্তা ও সহযোগী সমাধান ও কনসাল্টিং বিভাগ এতে প্রভাবিত হয়েছে। তবে চীনের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল অর্থনীতির ওপর ভরসা করে প্রতিষ্ঠানটি নতুন সম্ভাবনার পথ উন্মোচনে কাজ করছে বলে জানিয়েছে।
বৃহত্তর চীন অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যান হউ ইয়াং বলেন, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন হিসেবে, ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নে চীনের একটি শক্ত ভিত্তি রয়েছে। পাশাপাশি বিস্তৃত সম্ভাবনা ও উন্নতির পথও রয়েছে।
চীনে মাইক্রোসফটের কর্মী নিয়োগের প্রতিশ্রুতি এ প্রথম নয়। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি জায়ান্টটির গেমিং আর্ম চীনে নতুন কর্মী নিয়োগের কথা জানিয়েছিল। মূলত এক্সবক্সের সহায়তায় চীনের গেম স্টুডিও ও প্রকাশকদের দেশের বাইরে ব্যবসা প্রসারে সহায়তা করতেই এ উদ্যোগ।
অন্যদিকে গত আগস্টে চীনের সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন রেকর্ড সর্বোচ্চ কমেছে। দেশটির জিরো কভিড পলিসি, অর্থনীতিতে শ্লথগতিতে ভোক্তা ব্যয় হ্রাসে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে প্রভাব পড়েছে।