উড়োজাহাজের টিকিটের দাম আরো বাড়ার শঙ্কা

বণিক বার্তা ডেস্ক

উড়োজাহাজে ভ্রমণের ক্ষেত্রে টিকিটের মূল্য আরো বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। মহামারীর সময় পরিশোধন সক্ষমতা কমে যাওয়া এবং ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদার কারণে জেট ফুয়েলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গিয়েছে। এটিকে এভিয়েশন শিল্পের জন্য বিপজ্জনক বলছেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) মহাপরিচালক উইলিয়াম ওয়ালশ।

২০১৯ সালে সর্বোচ্চে থাকার পর চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রের পরিশোধন সক্ষমতা দশমিক শতাংশ কমে গিয়েছে। এটি গত আট বছরের ইতিহাসে সর্বনিম্ন। জ্বালানি তেল শোধনাগার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আরো বেশি নবায়নযোগ্য জ্বালানি তেল উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়ায় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি দেয়া এক বিবৃতিতে ওয়ালশ বলেন, ভোক্তারা উচ্চমূল্যে টিকিট কিনলেও এয়ারলাইনস প্রতিষ্ঠানগুলো সেভাবে মুনাফা করতে পারছে না। বিভিন্ন উড়োজাহাজ পরিবহন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, প্রতিষ্ঠানগুলো যে অর্থ আয় করছে তা যথেষ্ট নয়। সংস্থাগুলো বড় একটি ব্যয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এটি তাদের পক্ষে গ্রহণ করা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। গত বছর উড়োজাহাজের টিকিট মূল্য ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ১৯৮৯ সালের পর এটি সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন। জাতীয় শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, শুধু এপ্রিলেই উড়োজাহাজের টিকিটের মূল্য ১৮ দশমিক শতাংশ বেড়েছে।

জ্বালানি তেলের পরিশোধন সক্ষমতা হ্রাসই যে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ তা নয়। কাতার এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আকবর আল বাকের বলেন, রাশিয়ার সামরিক সৈন্য সমাবেশের টিকিটের মূল্য বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দেশটিকে আংশিকভাবে সামরিক সৈন্য সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন। ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের কারণে রাশিয়ার নাগরিক অর্থনীতিকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে নিয়ে গিয়েছে।

সিএনবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে আল বাকের বলেন, কভিড-১৯ মহামারীর কারণে চীন যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পদক্ষেপ নিয়েছে টিকিটের মূল্যবৃদ্ধিতে এর প্রভাব খুবই কম। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধই এখন এয়ারলাইনস শিল্পের অন্যতম উদ্বেগের বিষয়। তিনি বলেন, আমার মতে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়। এর ফলে জ্বালানি তেলের দাম আরো বাড়বে এবং এটি সরবরাহ ব্যবস্থায় চাপ প্রয়োগ করবে। দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে উড়োজাহাজের যাত্রী আরো কমবে।

কাতার এয়ারওয়েজের প্রধান নির্বাহী বলেন, জ্বালানি তেলের দামের অস্থিতিশীলতাও আমাকে উদ্বিগ্ন করছে। আমি গ্রাহকদের ওপর ব্যয় চাপিয়ে দিতে চাই না। এটি তাদের উড়োজাহাজ ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করবে। পুতিনের ঘোষণার পর জ্বালানি তেলের দাম শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। এর সঙ্গে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ আরো বিস্তৃত হওয়া এবং জ্বালানি তেল-গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও জড়িত। সবকিছু ছাপিয়ে রাশিয়ায় যত দিন পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা নিরাপদ থাকবে কাতার তত দিন ফ্লাইট পরিচালনা করবে বলে জানান আল বাকের।

তিনি বলেন, আমরা রাশিয়ায় আমাদের ফ্লাইট পরিচালনা করে যাব, আমরা জনগণকে সেবা দিয়ে যেতে কাজ করব। আমরা কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নই। আমরা একটি শিল্প খাতের অংশ যাদের লক্ষ্য হচ্ছে সাধারণ জনগণকে সেবা দেয়া। আল বাকের বিকল্প জ্বালানিতে আরো বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি যথাযথ মূল্যের টেকসই জ্বালানিতে বিনিয়োগের জন্য কাতার এয়ারওয়েজ প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন