সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ খাতে নেতিবাচক রিটার্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। সময়ে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। তবে আলোচ্য সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির ব্যাংক, বীমা আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ খাতে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গত সপ্তাহে সূচকের পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গত সপ্তাহে সূচক চার মাসের সর্বোচ্চ অবস্থানে এলেও তা যেমন ধরে রাখতে পারেনি, তেমনি লেনদেন একদিন ১২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হলেও তার ধারাবাহিকতা ছিল না। মূলত গত সপ্তাহ সার্বিকভাবে অধিকাংশ সিকিউরিটিজের জন্য দর সংশোধনী হয়েছে। তবে সময়েও কিছু বাছাইকৃত শেয়ারের দর অতিমাত্রায় বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ৪৮ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৫ শতাংশ বেড়েছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান হাজার ৫৬৪ পয়েন্টে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৫১৫ পয়েন্টে। সূচকের উত্থানে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি ল্যাবরেটরিজ, ওরিয়ন ইনফিউশনস, বসুন্ধরা পেপার মিলস শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারের।

ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ১৯ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়ে হাজার ৩৬৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়ে হাজার ৪৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহ শেষে যা ছিল হাজার ৪৩০ পয়েন্টে। ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৯৬টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৬টির, কমেছে ১৩৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৩৪টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ১০টির।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ১০ হাজার ১১০ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৮২ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক্সচেঞ্জটিতে সাপ্তাহিক লেনদেন বেড়েছে হাজার ২৭ কোটি টাকার বেশি বা ৪২ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত সপ্তাহে ডিএসইতে দৈনিক গড়ে হাজার ২২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল হাজার ৪১৬  কোটি টাকা।  

গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটির খাতভিত্তিক লেনদেনে শীর্ষে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশই ছিল খাতটির দখলে। ২১ দশমিক ৯০ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। খাতের দখলে রয়েছে মোট লেনদেনের দশমিক ৩০ শতাংশ। দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন নিয়ে তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত। পরের অবস্থানে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের দখলে রয়েছে মোট লেনদেনের দশমিক ৫০ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর অধিকাংশ খাতে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে পাট খাতে, ১৩ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দশমিক ৮০ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে বস্ত্র খাতে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা সিরামিক খাতে এসেছে দশমিক ৭০ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে দশমিক ৬০ শতাংশ, সাধারণ বীমা খাতে দশমিক ৫০ শতাংশ ব্যাংক খাতে দশমিক ৯০ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে গত সপ্তাহে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে ভ্রমণ খাতে, ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এসেছে ১০ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন। এছাড়া কাগজ মুদ্রণ খাতে এসেছে দশমিক ৬০ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন।

গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে লাখ ২২ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকায়। যেখানে সপ্তাহের শুরুতে বাজার মূলধন ছিল লাখ ২০ হাজার ১২৬ কোটি টাকায়। সে হিসাবে আলোচ্য সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে হাজার ৬১৭ কোটি টাকা বা দশমিক ৫০ শতাংশ।

অন্যদিকে সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক শূন্য শতাংশ বেড়ে ১৯ হাজার ৩৪৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের সপ্তাহে যা ছিল ১৯ হাজার ১৪১ পয়েন্টে। সিএসসিএক্স সূচকটি গত সপ্তাহ শেষে দশমিক শূন্য শতাংশ বেড়ে ১১ হাজার ৫৯৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান ছিল ১১ হাজার ৪৭৩ পয়েন্টে। সিএসইতে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৪০৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে যেখানে লেনদেন হয়েছিল ১৪৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আলোচ্য সময়ে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৩৭টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ১১৬টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ১২৯টির।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন