২০৩০ সাল

কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আসবে ভারতের ২৫% বিদ্যুৎ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ইউক্রেন সংকটে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ইউরোপে পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে কয়লা খাত ছবি: এপি

ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে কয়লাবিদ্যুতের ওপর জোর দিচ্ছে ভারত। চলতি দশক শেষে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার ২৫ শতাংশ পূরণ করবে কয়লাবিদ্যুৎ।

বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণকারী দেশ ভারত। কিন্তু বিশাল জনগোষ্ঠীর বিদ্যুতের বিপুল চাহিদা পূরণে জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা নিকট ভবিষ্যতে কমানোর কোনো সম্ভাবনা নেই। বিদ্যুৎ সঞ্চয় ব্যয় হ্রাসে লক্ষণীয় অগ্রগতি না এলে ৫৫ গিগাওয়াট কয়লাবিদ্যুৎ সক্ষমতা বাড়ানো হবে। নয়াদিল্লিতে এক সাক্ষাত্কারে এমনই ইঙ্গিত দেন বিদ্যুত্মন্ত্রী রাজ কুমার সিং।

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বড় বিনিয়োগ পরিকল্পনা নিয়ে এগোলেও বাজার চাহিদা পূরণে আপাত সহজলভ্য উৎসেই জোর দিচ্ছে ভারত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাঙ্গায় বিদ্যুতের পর্যাপ্ত সরবরাহ অত্যন্ত জরুরি। নবায়নযোগ্য জ্বালানির অবকাঠামো নির্মাণ অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ওপর নির্ভরতা সহসাই কাটিয়ে উঠতে পারছে না দেশটি।

বিভিন্ন দেশ যেখানে জ্বালানি খাতে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, ইউক্রেন সংকট সেখানে মাথাব্যথা হিসেবে হাজির হয়েছে। মুহূর্তে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ওপর বড় অঙ্কের বিনিয়োগের চেয়ে সাশ্রয়ী কিন্তু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর উৎসেই নির্ভর করতে হচ্ছে। গ্রীষ্মে তাপমাত্রা রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছায় বিদ্যুতের চাহিদাও অনেক বেড়েছে। এতে কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পুরোদমে সচল করতে হয়েছে। এমনকি যেসব কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার কথা চলছিল সে সিদ্ধান্ত থেকে আপাতত পিছু হটছে সরকার। কয়লাবিদ্যুৎ কারখানা বন্ধের সময়সীমা পেছানো হচ্ছে এবং কারখানা কার্যক্রম বাড়ানো হচ্ছে।

কয়েক দশক ধরে ইউরোপ পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতে জোর দিলেও বর্তমান সংকটে কয়লার ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ইউক্রেন ইস্যুতে সৃষ্ট তিক্ততায় ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ কমিয়েছে রাশিয়া। এতে ইউরোপে কয়লা বিদ্যুতের অনেকটা পুনরুজ্জীবন ঘটেছে।

সাক্ষাত্কারে ভারতের বিদ্যুত্মন্ত্রী বলেন, মোদ্দাকথা হলো, প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রাখার ক্ষেত্রে কোনো আপস নয়। স্থানীয় বাজারে ঘাটতি থাকলে কয়লা আমদানি বৃদ্ধিতে আমরা ইতস্তত করব না। বিদ্যুৎ সবসময় সহজলভ্য রাখতে হবে।

একই সঙ্গে পরিবেশবান্ধব জ্বালানিতেও মনোযোগ থাকবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৫০০ গিগাওয়াট নিরাপদ বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে ঘোষণা দিয়েছেন তা অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নিয়ে আসার লক্ষ্য ভারতের। ২০৩০ সালের মধ্যে সব উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৮২০ গিগাওয়াট বৃদ্ধি করতে চায় বলে জানান রাজ কুমার সিং। বায়ু সৌরবিদ্যুৎ সঞ্চয়ের প্রযুক্তিতে ভারত বিনিয়োগ প্রত্যাশা করছে বলেও জানান তিনি।

বিদ্যুৎ সঞ্চয়ের প্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্ব তেমন মনোযোগ দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন ভারতের বিদ্যুত্মন্ত্রী। বিশ্বের লিথিয়াম সরবরাহের বড় অঙ্কের নিয়ন্ত্রণ যে চীনের হাতে সে বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। ব্যাটারি নির্মাণে লিথিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন