জেঁকে বসেছে মন্দার শঙ্কা

জ্বালানি তেলের দাম ৪% কমেছে

বণিক বার্তা ডেস্ক

গতকাল বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম শতাংশ কমেছে। চলতি বছরের জানুয়ারির পর জ্বালানি তেলের দামে যা সর্বোচ্চ পতন। ডলার সূচকে দুই দশকের সর্বোচ্চ পতন এবং প্রধান অর্থনীতিগুলোয় মন্দার শঙ্কা জেঁকে বসায় এমনটা হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে তথ্য উঠে এসেছে।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ অপরিশোধিত ব্রেন্টের দাম ডলার ৭৪ সেন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৮৬ ডলার ৭২ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ডলার ৯৮ সেন্ট বা দশমিক ৭৭ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭৯ ডলার ৫১ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। গত এক সপ্তাহে ব্রেন্ট ডব্লিউটিআইয়ের দাম যথাক্রমে দশমিক ২৮ দশমিক ৮০ শতাংশ কমেছে। ডলার সূচক দুই দশকের সর্বোচ্চে পৌঁছায় শুক্রবার বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে দুই বছরের সর্বোচ্চ পতন দেখা গিয়েছে।

সিএমসির বাজার বিশ্লেষক টিনা টেং বলেন, বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদহার বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কায় সরবরাহ জটিলতা থাকলেও জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।

গত বুধবার সুদহার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) বিশ্বের অন্যান্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও ফেডের অনুসরণে সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। এতে অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কা আরো জেঁকে বসেছে।

এদিকে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ) তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানায়, আগস্টে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ টানা তৃতীয় মাসের মতো বেড়েছে। সরবরাহে ঊর্ধ্বমুখিতা অব্যাহত থাকলে আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা চাহিদাকে ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্ববাজারে ক্রমেই জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে আসছে। চলতি বছর দৈনিক চাহিদা ৫০ হাজার ব্যারেল এবং আগামী বছর ৪০ হাজার ব্যারেল করে বাড়বে।

আইইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা দাঁড়াবে দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেলে। স্বাভাবিকের তুলনায় চাহিদা বৃদ্ধির গতি আরো কমার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু গ্যাসের ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির কারণে ব্যবহারকারীরা বিকল্প হিসেবে জ্বালানি তেল ব্যবহারে ঝুঁকছেন। কারণে চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিক আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে স্বাভাবিকের তুলনায় চাহিদা দৈনিক সাত লাখ ব্যারেল করে বাড়বে।

সংস্থাটি বলছে, চীনে অর্থনৈতিক মন্দা এবং ওইসিডি দেশগুলোয় অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়ে পড়ার কারণে চাপের মুখে পড়েছে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা। বছরভিত্তিক চাহিদা প্রবৃদ্ধি গতি হারাচ্ছে। চলতি বছরের প্রথমার্ধে দৈনিক ৩৫ লাখ ব্যারেলের চাহিদা তৃতীয় প্রান্তিকে এসে দৈনিক ১১ লাখ ব্যারেলে নেমেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওপেক প্লাসের উত্তোলন কিছুটা বৃদ্ধি এবং শ্লথ চাহিদার কারণে চলতি বছরের বাকি সময়ে জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক মজুদ লক্ষণীয় মাত্রায় বাড়বে।

জুনের পর থেকেই বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমছে। এর পেছনে মূল কারণ সরবরাহ বৃদ্ধি। এছাড়া মৌসুমে নানা কারণ তো রয়েছেই। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কাও দাম কমার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। তিন মাসে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৬৫ শতাংশ কমেছে। তবে অপরিশোধিত তেলের সরবরাহ বাড়লেও ডিজেল জেট ফুয়েলের সরবরাহ অস্বাভাবিকভাবে সংকোচন অব্যাহত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন