নদীতে কমছে ইলিশের বিচরণ

বণিক বার্তা ডেস্ক

ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

নোনা জলের ইলিশ ডিম পাড়তে নদীর উজান ঠেলে আসে মিঠা পানিতে। ডিম ছেড়ে আবার ভাটিতে গা ভাসিয়ে ধরে সাগরের পথ। তবে গত ৫০ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে অতি কিংবা অনাবৃষ্টি, উষ্ণায়ন, পলি পড়ার মাত্রা বৃদ্ধি, দখল-দূষণসহ নানা কারণেই নদীগুলো হারিয়েছে তার চিরচেনা রূপ। এসব বাধা পেরিয়ে নদীতে তেমন আসছে না ইলিশ। গবেষকরা বলছেন, মাছের বংশবিস্তারে পানির তাপমাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এর ওপর নির্ভর করে মাছের ডিম ছাড়ার সময়। এর মধ্যে সামান্য তারতম্য হলেই মা-ইলিশ তার ডিম নষ্ট করে ফেলে। সাম্প্রতিক সময়ে অনাবৃষ্টি নদীর গতিপথ পরিবর্তনে পানি কমেছে, বেড়েছে তাপমাত্রা। আর এসব কারণে নদীতেও কমছে ইলিশের বিচরণ। তবে গভীর সাগরে ঠিকই ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে জাতীয় মাছটি।

ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রথম। বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে। ওয়ার্ল্ড ফিশের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বিশ্বের মোট ইলিশের ৮৫ শতাংশই উৎপাদন হয় দেশে। আর মত্স্য অধিদপ্তর বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের বিভিন্ন নদী সাগর থেকে লাখ ৬৫ হাজার টন ইলিশ আহরণ করা হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে আহরণ করা হয়েছিল লাখ ৫০ হাজার টন। উৎপাদনের হিসাবে বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলার স্থান শীর্ষে। গত অর্থবছরে জেলায় মোট ইলিশ আহরণ হয় লাখ ৯০ হাজার ৩০০ টনের মতো। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরগুনা। জেলার প্রধান তিনটি নদী বিষখালী, বুড়িশ্বর (পায়রা) বলেশ্বর এবং সাগর উপকূল থেকে মাছটি আহরণ করা হয়। অন্যদিকে পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম কক্সবাজার জেলা রয়েছে যথাক্রমে তৃতীয়, চতুর্থ পঞ্চম অবস্থানে। আর ইলিশের বাড়ি বলে পরিচিত চাঁদপুর আছে ষষ্ঠ স্থানে। জেলায় ২০২০-২১ অর্থবছরে ইলিশ মিলেছে ৩৩ হাজার ৯৯২ টন। এর বাইরেও বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর জেলার বড় নদীতে ইলিশ পাওয়া যায়।

চারদিক নদীবেষ্টিত দ্বীপজেলা ভোলার উত্তর পূর্বে মেঘনা, পশ্চিমে রয়েছে তেঁতুলিয়া নদী। দুটি নদীই গিয়ে মিলেছে প্রায় ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণের বঙ্গোপসাগরে। জেলার প্রায় দুই লাখ জেলে নদী দুটির পাশাপাশি সাগরের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু তাদের সেই জীবন-জীবিকায় ভাগ বসিয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী। মাইলের পর মাইল নদীতে সারি সারি খুঁটি গেড়ে ব্যারিকেড দিয়ে তারা পাতছে বাঁধা, বেহুন্দি, মশারি, চরঘেরাসহ বিভিন্ন নিষিদ্ধ জাল। মাছের রেণু ধরার এসব জালে আটকা পড়ছে লাখে লাখে জাটকা। কারণে নদীতে কমছে ইলিশের বিচরণ। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব। নদীর অধিকাংশ স্থানেই পলি জমে সৃষ্টি হয়েছে ডুবোচর। কমে গিয়েছে নাব্যতা। ফলে সাগর থেকে নদীতে আসতে বাধার মুখে পড়ে পরিবর্তিত হচ্ছে ইলিশের গতিপথ। তাই মৌসুমের প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও জেলের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ।

পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর . মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক বণিক বার্তাকে বলেন, সাগর মোহনায় পলি পড়ার কারণে দেশের নদ-নদীতে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বিরাট প্রভাব রয়েছে। ইলিশের জন্য যে তাপমাত্রা দরকার তা না পাওয়ার কারণে মাছটি চলে যাচ্ছে গভীর সমুদ্রে। আর আমাদের দেশের ফিশিং বোটগুলোরও সে ধরনের যন্ত্রপাতি নেই যে গভীর সমুদ্র থেকে মাছ আহরণ করবে। তাই অবশ্যই সাগর মোহনায় পলি পড়ার কারণে যে ডুবোচর তৈরি হচ্ছে তা অপসারণ দরকার।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন স্থানে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে চলছে নদী দখলের মহোৎসব। ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মাইনকা ইউনিয়নের মেঘনা নদীর সেন্টার খাল এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে সারি সারি খুঁটি গেড়ে দখল করে রাখা হয়েছে নদীর একটি অংশ। কয়েক ধরনের নিষিদ্ধ জাল পেতে ধরা হচ্ছে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সেখানকার জেলেদের সঙ্গে কথা হলে জানান, এসব জাল সম্পূর্ণ অবৈধ। মূলত ওপর মহলকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালী কালাম, মনু মাঝি, লিটন মনতাজ মিলে জালগুলো তৈরি করে নদীতে ব্যবহার করছেন। তাদের হয়ে নদীতে মাছ ধরেন দরিদ্র জেলেরা। নদীর যেসব স্থানে ডুবোচর রয়েছে সেখানেই মূলত এসব নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। জোয়ারের শেষের দিকে অর্থাৎ ভাটার শুরুতেই খুঁটিগুলোর সঙ্গে জালগুলোকে বেঁধে রাখা হয়। এরপর  পানি নামতে শুরু করলে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ে ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির ইলিশসহ বহু প্রজাতির মাছ। অবৈধ এসব জাল ব্যবহার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মনু মাঝি বলেন, আসলে নদীতে ইলিশ কম থাকায় ধরনের জাল আমরা ব্যবহার করছি। কেননা জালে ছোট-বড় মিলিয়ে সব ধরনের মাছই ধরা পড়ছে, যা দিয়ে আমরা কোনোভাবে চলতে পারি।

একই চিত্র চোখে পড়ে উপজেলার মির্জাকালু এলাকার মেঘনা নদীতে। সেখানেও নদীর অর্ধেক অংশ দখল করে স্থানীয় জাহাঙ্গীর মেম্বার নামে এক মত্স্য ব্যবসায়ী নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করছেন। পাশেই রয়েছে হাকিমউদ্দিন মত্স্য ঘাট। সেখানেও রাস্তার মাথা এলাকার বাসিন্দা প্রভাবশালী মত্স্য ব্যবসায়ী কবির মিয়া খুঁটিজাল দিয়ে নদীর বিশাল একটি অংশ দখল করে নিয়েছেন। তাদের কারণে দরিদ্র জেলেরা মাছ শিকারে আর নদীতে নামতে পারেন না। সদর উপজেলার তুলাতুলি এলাকার প্রবীণ মাঝি মোছলেউদ্দিন বলেন, আসার পথই যদি বন্ধ করে রাখা হয়, নদীতে ইলিশ আসবে কোত্থেকে? নানা কারণে ক্রমাগতই নদীতে ইলিশের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই অঞ্চলের জেলেরা এখন সাগরে গিয়ে মাছ ধরছেন।

একই কথা জানিয়ে জেলার মত্স্য বিভাগ বলছে, নদীতে ইলিশের পরিমাণ কিছুটা কম হলেও ভোলার সাগর নদী মিলিয়ে গত পাঁচ বছরে প্রায় ৮০ হাজার টন উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জেলায় যেখানে ইলিশ উৎপাদন ছিল লাখ হাজার টন, সেখানে পাঁচ বছর পর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে লাখ ৯০ হাজার ৩০০ টনে। বিষয়ে ভোলা সদর উপজেলা মত্স্য কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, নদীর অধিকাংশ স্থানেই ডুবোচর থাকায় নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। তাতে ইলিশের পরিমাণও কমেছে। কেননা এটি গভীর জলের মাছ। তবে বছরের ১২ মাসই সাগর নদীতে কম-বেশি ইলিশ ধরা পড়ে। আবার নদীতে ভরা মৌসুমে মাছের পরিমাণ কিছুটা কম থাকলেও খরায় আবার দেখা যায় জেলেরা অনেক বেশি ইলিশ আহরণ করছেন। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবের কারণেই মূলত এমনটা হচ্ছে। জেলা মত্স্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ অবশ্য বলেন, ভোলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে থাকা ডুবোচরগুলোকে কেটে ফেলার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালুমহাল ইজারার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নদীতে থাকা নিষিদ্ধ জাল অপসারণের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যত প্রভাবশালীই ধরনের নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার করুক না কেন, কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।

এদিকে বঙ্গোপসাগর থেকে নোয়াখালীর হাতিয়া, লক্ষ্মীপুর চাঁদপুরের ওপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে মেঘনা। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরের চারটি উপজেলার ৩৭ কিলোমিটার মেঘনার মোহনা, যাকে ইলিশ প্রজনন উৎপাদনের মূল কেন্দ্র ধরা হয়। এখানকার ইলিশ ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করেন মত্স্য পেশার সঙ্গে জড়িতরা। তবে কয়েক বছর ধরে ভরা মৌসুমেও মেঘনায় কাঙ্ক্ষিত ইলিশ মিলছে না। জেলেদের জালে যেসব ইলিশ ধরা পড়ে তার ৭০-৮০ শতাংশই সামুদ্রিক।

বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ প্রবেশের মূল পথ মেঘনা নদীর চ্যানেল। কিন্তু এর বিভিন্ন স্থানে পলি জমে ডেগার চর ডুবোচর সৃষ্টি হয়ে আছে। ফলে মা-ইলিশ ডিম ছাড়ার জন্য মিঠা পানিতে প্রবেশে বাধা পেয়ে আবার সাগরেই ফিরে যাচ্ছে। আবার মেঘনায় ফোটা ইলিশের পোনাও বড় হওয়ার জন্য সমুদ্রে যেতে পারছে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় আবার বর্ষায়ও দেখা যায় অনাবৃষ্টি। তাতে মিঠা পানির স্তর কমে যায়, বেড়ে যায় তাপমাত্রা। এর প্রভাব পড়ছে মেঘনায় আবদ্ধ ইলিশ জাটকার ওপর। এদিকে নির্দিষ্ট সময়ে মাছ ধরা নিষেধ থাকলেও অবাধে মা-ইলিশ জাটকা নিধন করে চলেন অসাধু জেলেরা। কারণেও দিন দিন মেঘনা থেকে সুস্বাদু ইলিশ হারিয়ে যাচ্ছে।

লক্ষ্মীপুরের ইলিশসম্পদ উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে দায়িত্বরত সহকারী মত্স্য কর্মকর্তা মো. রফিক জালাল বণিক বার্তাকে জানান, দেশের দীর্ঘতম গভীরতম নদী হিসেবে ধরা হয় মেঘনাকে। ইলিশও গভীরতম পানির মাছ। সমুদ্র থেকে আসা জাতীয় মাছ মেঘনার মিঠা পানি থেকে খাবার আহরণের পর খুবই সুস্বাদু হয়ে ওঠে। আর বাংলাদেশের ইলিশ উৎপাদন প্রজননের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান চাঁদপুরের ষাটনল থেকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি-আলেকজান্ডার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার তীর এলাকা। মেঘনায় ইলিশ উৎপাদন কমে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ উল্লেখ করে তিনি আরো জানান, নদীতে বা সাগরের পানিতে এক প্রকার ফাইটোপ্লাংটন থাকে, যা সূর্যের আলোয় খাবার তৈরি করে জোপ্লানের জন্য। আর জোপ্লানগুলোকে নিউট্রিয়েন্ট (পুষ্টি) হিসেবে খেয়ে মাছ বড় হয়, যা সম্পন্ন হয় প্রাকৃতিক উপায়ে। কিন্তু নদীতে মাটি-বালি মিশ্রিত পানি বেড়ে যাওয়ায় ইলিশের প্রয়োজনীয় নিউট্রিয়েন্ট কমে গিয়েছে। আবার অনাবৃষ্টির কারণে পানি কমে ওই ডুবোচরগুলো ভেসে ওঠে। এতে মাটির উপস্থিতি বেশি হলে সূর্যের আলো পানিতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হয়, এতে নিউট্রিয়েন্ট ঘাটতি দেখা দেয়। অন্যদিকে ট্রলারের বিকট শব্দে ইলিশ ভয়ে সমুদ্রের দিকে পালিয়ে যায়। দেশের ছয়টি অভয়াশ্রমের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-চাঁদপুরের ১০০ কিলোমিটারকে অন্যতম হাব উল্লেখ করে বিশ্লেষক আরো জানান, একেকটি মা-ইলিশ ১০-২০ লাখ ডিম ধারণক্ষমতাসম্পন্ন হয়। তাই ডিম ছাড়ার মৌসুমে সমুদ্র থেকে এসব ইলিশ মেঘনার অভয়াশ্রমে প্রবেশ করে। এজন্য মার্চ-এপ্রিল দুই মাস নদীতে জাটকাসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

জেলা মত্স্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বণিক বার্তাকে বলেন, নাব্য সংকট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লক্ষ্মীপুরে মেঘনায় আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। এখানকার আহরিত ইলিশের ৭০-৮০ শতাংশই সামুদ্রিক। তবে কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নদীর পানি বাড়ায় এখন কিছুটা পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া ডুবোচরগুলো চিহ্নিত করে খননের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বলা হচ্ছে।

চাঁদপুর জেলা মত্স্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পদ্মা-মেঘনায় তেমন ইলিশ ধরা পড়ছে না। বিশেষ করে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় মাছ কম ধরা পড়ছে। মূলত নদীর নাব্য সংকট ডুবোচরের কারণে ইলিশ প্রবেশে বাধা পাচ্ছে। আর ডুবোচরে ইলিশ বাধাপ্রাপ্ত হলে উল্টো পথে চলে যায়। আবার গরম বেশি থাকলেও মাছ ধরা পড়ে কম।

 

প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন ভোলা প্রতিনিধি এইচএম জাকির, বরিশাল প্রতিনিধি এম মিরাজ হোসাইন, চাঁদপুর প্রতিনিধি এসএম রাসেল লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি মো. রাকিব হোসাইন রনি

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন