মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি: পিআইডি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় জো বাইডেনের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।

জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্ক আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র সরকারপ্রধানদের সম্মানে দেশটির ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরে আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার স্ত্রী জিল বাইডেন। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে আব্দুল মোমেন হোটেল লোটে প্যালেসে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, অনুষ্ঠানস্থলে জো বাইডেন এবং তার স্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। দেশ দুটির দুই শীর্ষ নেতা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পর বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন। সময় প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কের গতকাল সকালে লেক্সিংটন হোটেলে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিষয়ে প্রাতরাশ বৈঠকে অংশ নেন তিনি। বৈঠকে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) একটি বড় ধরনের সংকটে পরিণত হওয়ার আগেই সেটি ঠেকাতে টেকসই রাজনৈতিক সদিচ্ছা পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এএমআর এমন একটি সমস্যা যা সংকটে রূপ নিতে পারে। এর কারণে বিশ্বব্যাপী লাখ লাখ প্রাণহানি হতে পারে। এটি প্রতিরোধে আমাদের টেকসই রাজনৈতিক সদিচ্ছা পদক্ষেপ নেয়া  প্রয়োজন। সুতরাং এএমআর সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, বিশ্বনেতাদের গ্রুপ থেকে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য কাজ চলছে, কিন্তু এটি স্পষ্ট যে ব্যাপারে আরো কিছু করা প্রয়োজন। কৌশলগত অগ্রাধিকারগুলো যথাযথভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে সেগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। আমাদের একটি অভিন্ন স্বাস্থ্য পদ্ধতিতে স্থিত হওয়া প্রয়োজন।

এরই মধ্যে প্রায় ১৫০টি দেশের এএমআর বিষয়ে তাদের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে এগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থপূর্ণ সহায়তা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতায় এএমআর গুরুত্ব পাওয়া উচিত এবং ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মাল্টি-পার্টনার ট্রাস্ট ফান্ড পছন্দের হাতিয়ার হতে পারে। এএমআরের জন্য বিশ্ব জাতীয় পর্যায়ে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ পরিস্থিতি তৈরি করা দরকার বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এএমআরের দায়িত্ব প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য নজরদারি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ২০১৯ সাল থেকে গ্লাস প্লাটফর্মে রিপোর্ট করে আসছে। তিনি আরো বলেন, সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারের জড়িত হওয়া অত্যাবশ্যকীয় এবং একটি রোগীকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতির সঙ্গে যোগসূত্রের মাধ্যমে শুরুতেই রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করা যেতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

এর আগে নিউইয়র্কে বুধবার সকালে বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে খাদ্য, জ্বালানি অর্থবিষয়ক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের তৈরি প্লাটফর্ম চ্যাম্পিয়নস গ্রুপ অব গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স (জিসিআরজি) আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে দেয়া বক্তব্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ তা ঘিরে নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় গোটা বিশ্বের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গোটা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার পাশাপাশি দেখা দিয়েছে খাদ্যসংকট; বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এসব সংকট কোনো দেশের পক্ষে এককভাবে মোকাবেলা সম্ভব নয়। দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার বৈশ্বিক সংহতির ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সংকট সমাধানে পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন