আগামী মাসে উদ্বোধন হচ্ছে কালনা সেতু

পদ্মা সেতুর পূর্ণ সুফল পাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

নবনির্মিত কালনা সেতু ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু আগামী মাসে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ৬৯০ মিটার দীর্ঘ সেতু চালুর ফলে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে নড়াইল, মাগুরা, খুলনা, ঝিনাইদহ সাতক্ষীরা জেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে। সড়কপথে কমে আসবে ঢাকার সঙ্গে কলকাতার দূরত্ব। সেতুটি এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। কালনা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৯৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

নেলসন লোস আর্চের নকশায় তৈরি করা হয়েছে ধনুকাকৃতির কালনা সেতু। সেতুর সড়কপথের প্রশস্ততা ২৭ দশমিক মিটার। দুই পাশে তৈরি করা হয়েছে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক, যার দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার।

সেতুর সব অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে। চূড়ান্ত করা হয়েছে টোলহারও। বড় ট্রেইলারের জন্য ৫৬৫ টাকা, তিন বা তার চেয়ে বেশি এক্সেলবিশিষ্ট ট্রাকে ৪৫০ টাকা, দুই এক্সেলবিশিষ্ট মাঝারি ট্রাকে ২২৫ টাকা, ছোট ট্রাকে ১৭০ টাকা, কৃষিকাজে ব্যবহূত পাওয়ার ট্রিলার ট্রাক্টরে ১৩৫ টাকা, বড় বাসে ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টারে ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকআপ, কনভারশন করা জিপ রে-কারে ৯০ টাকা, প্রাইভেটকারে ৫৫ টাকা, অটো টেম্পো, সিএনজি অটোরিকশা, অটোভ্যান ব্যাটারিচালিত তিন চাকার যানে ২৫ টাকা, মোটরসাইকেলে ১০ টাকা এবং রিকশা, ভ্যান বাইসাইকেলের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে টাকা।

সড়ক পরিবহনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কালনা সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল-ঢাকা যশোর-ঢাকার দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার খুলনা-ঢাকার দূরত্ব ১২১ কিলোমিটার এবং নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটার কমবে। একইভাবে ঢাকার সঙ্গে শিল্প বাণিজ্যিক শহর যশোরের নওয়াপাড়া, বাগেরহাটের মোংলা বন্দর, সাতক্ষীরাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্য জেলার দূরত্ব কমে যাবে।

উদ্বোধনের আগে গতকাল কালনা সেতু পরিদর্শনে যান সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কালনা সেতুর সারসংক্ষেপ পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সারসংক্ষেপ দেখেছেন, তবে উদ্বোধনের তারিখ এখনো নির্ধারণ হয়নি। প্রধানমন্ত্রী সময় দিলে অক্টোবরের যেকোনো দিন কালনা সেতু উদ্বোধন হবে।

মন্ত্রী বলেন, ক্রস বর্ডার নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় মধুমতী নদীর ওপর নবনির্মিত সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার, প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। মধুমতী সেতু পদ্মা সেতুর একটি মিসিং লিংক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সেতুটি নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল যেমন নড়াইল, মাগুরা, খুলনা, ঝিনাইদহ সাতক্ষীরা জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হলো। জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের ক্ষেত্রে আর কোনো বিচ্ছিন্নতা থাকবে না। 

কালনা সেতু পরিদর্শনকালে নড়াইল- আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মর্তুজা, ক্রস বর্ডার নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক শ্যামল কুমার ভট্টাচার্য্যসহ স্থানীয় প্রশাসন আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন