সড়কবাতি-পানি সরবরাহ বন্ধে ভোগান্তিতে বরিশাল নগরবাসী

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বরিশাল

বরিশাল নগরীর সড়ক বাতি পানির পাম্পের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার চারদিন পার হলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি সিটি করপোরেশন। বিদ্যুৎ বিভাগ সিটি করপোরেশন একে অন্যের কেবল দোষ চাপিয়েই দায় সারছে। তবে গ্যাঁড়াকলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরীর লাখো বাসিন্দা। রাতে সড়কে আলো নেই আর দিনে নেই পানি। প্রতিদিন দুবার করে লাইনে সিটি করপোরেশন থেকে পানি সরবরাহ করা হলেও চারদিন তা বন্ধ। নগরীর পলাশপুর, হাটখোলা, আমানতগঞ্জ, ভাটিখানা, চাঁদমারি এলাকাসহ অধিকাংশ এলাকার বাসিন্দাদেরই একমাত্র উৎস সে পানি। খাওয়া, গোসল, রান্নাসব কাজই চলে লাইনের পানি দিয়ে। এদিকে সিটি করপোরেশন ট্রাকে করে বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহ করলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

বরিশাল নগরীর হাটখোলা এলাকার বাসিন্দা শাহানাজ বেগম বলেন, প্রতিদিন সকাল ৭টায় এবং দুপুর ১২টায় সাপ্লাই লাইনে পানি আসে। দুবারে ঘণ্টা পানি থাকে। কিন্তু চারদিন ধরে সাপ্লাই লাইনে কোনো পাচ্ছি না। খাবার পানিও কিনে আনতে হচ্ছে, পাশাপাশি রান্নার পানিও কিনতে হচ্ছে। পলাশপুরের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মোজাফফর আলী বলেন, আমরা সময়মতোই সিটি করপোরেশনকে পানির বিল পরিশোধ করে দিই। তাহলে এখন কেনো পানির কষ্টে থাকতে হবে? গোড়াচাঁদ দাস রোডের আবু জাফর বলেন, রোড লাইট বন্ধ থাকায় সন্ধ্যার পর সড়কে টর্চলাইট নিয়ে বের হতে হয়। শহরের রাস্তায় না প্রত্যন্ত গ্রামের রাস্তায় চলাচল করি সেটাই বুঝতে পারছি না। ছিনতাই আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে আমাদের মাঝে। 

বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, বিগত মেয়ররা যে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখে গেছেন এর দায়িত্ব আমি নেব না। আমার সময়ে ১৫ কোটি টাকার মতো বিদ্যুৎ বিল হয়েছে, তার মধ্যে প্রায় কোটি টাকা পরিশোধও করা হয়েছে। কোনো চিঠিপত্র ছাড়া নগরীর ১৬ হাজার সড়কবাতি ১৫টি পানির পাম্পের বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অথচ নিয়ম রয়েছে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলে পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের অফিসের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে কিন্তু সড়কবাতির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। অথচ সেটাই করা হয়েছে। জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। সন্ধ্যার পর পুরো বরিশাল নগরীতে অন্ধকার নামে। উপায় না পেয়ে আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ট্রাকে করে পানি দিচ্ছি। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

ওজোপাডিকো বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এটিএম তারিকুল ইসলাম বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশনের কাছে আমাদের ৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার ৯৪৩ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। তাই আমাদের কাছে নির্দেশনা ছিল সড়ক বাতির লাইন প্রতীকী বিচ্ছিন্ন করার। সে অনুযায়ী আমরা ৫৮টির মধ্যে ১৫টি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি। তবে পানির পাম্পের লাইন বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে দেখা যায়, নগরীর কোনো সড়কবাতিই জ্বলছে না। ধারণা করা হচ্ছে, সিটি করপোরেশনই ইচ্ছাকৃতভাবে লাইনগুলো বন্ধ রেখেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন