রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসনে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল নিউইয়র্কে রোহিঙ্গা ইস্যুতে একটি উচ্চপর্যায়ের পার্শ্ব ইভেন্টে দেয়া বক্তব্যে তিনি আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ধীরে ধীরে মিয়ানমারের নতুন বৈশ্বিক অভ্যন্তরীণ সংঘাতের দিকে সরে যাওয়ায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উদ্বেগের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।

জাতিসংঘ বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমিতে টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে বাস্তব পদক্ষেপ প্রকল্প নেয়া দরকার। সেই সঙ্গে আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে আসিয়ান এবং পৃথক সদস্য রাষ্ট্রগুলোও মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের গভীর ঐতিহাসিক সম্পর্ক লিভারেজ নিয়ে এমন সার্বিক সম্পৃক্ততায় প্রধান ভূমিকা নিতে পারে। রোহিঙ্গাদের জন্য নাগরিকত্বের পথ সুগমে কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো সম্পূর্ণ রূপে বাস্তবায়নে তাদের ব্যাপক প্রচেষ্টা গ্রহণ করা উচিত। বেসামরিক পর্যবেক্ষক হিসেবে তাদের অর্থবহ উপস্থিতি রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের আস্থা বাড়াবে। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ যেকোনো উদ্যোগকেই সমর্থন করবে বলেও পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমারে সাম্প্রতিক অভ্যন্তরীণ সংঘাতের বিরূপ প্রভাব আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে, কারণ এটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর সম্ভাবনার পথে আরো বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকেও ঘরে ফিরতে না দেখা অবস্থায় বাংলাদেশ প্রলম্বিত সংকটের ষষ্ঠ বছরে পা দিয়েছে। তবে বর্তমান সংকটের উত্পত্তি মিয়ানমারে এবং এর সমাধানও সেখানেই রয়েছে। ১৯৬০ সালের পর থেকে মিয়ানমারের ধারাবাহিক সরকারগুলো রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগতভাবে বর্জন নির্বিচার নিপীড়ন অব্যাহত রাখার মাধ্যমে তাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশে বাধ্য করে। আর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (এফডিএমএন) মোট সংখ্যা প্রায় . মিলিয়ন বা ১২ লাখ। তাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান আমাদের উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রোহিঙ্গাদের জন্য আমাদের প্রতি বছর প্রায় কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় করতে হয়। সেই সঙ্গে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, প্রায় সাড়ে ছয় হাজার একর জমির বনভূমির ক্ষতি এবং স্থানীয় জনগণের ওপর এর বিরূপ প্রভাব অপরিমেয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন