লেনদেন কমেছে ৩৬ শতাংশ

শেষ ঘণ্টার বিক্রয়চাপে পুঁজিবাজারে দরপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই কার্যদিবস ধরে নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হচ্ছে দেশের পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে গতকাল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ৩৬ শতাংশ। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেনের শেষ ঘণ্টার বিক্রয়চাপের কারণে দরপতন হয়েছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমলেও দৈনিক লেনদেন বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নেতিবাচক আর্থিক ফলাফল আসতে পারে এমন আভাস পেয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বাড়ছে। গতকাল দিনভর পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা গিয়েছে। শুরুতে ঊর্ধ্বমুখিতা দেখা গেলেও শেষ ঘণ্টায় শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারিয়েছে সূচক। অন্যদিকে দ্রুত মুনাফা পাওয়ার আশায় বিনিয়োগকারীদের সুনির্দিষ্ট কিছু কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করতে দেখা গিয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর মিনিট পর থেকেই পয়েন্ট হারাতে শুরু করে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। এরপর বেলা ১টা পর্যন্ত সূচকে ওঠানামা চলতে থাকে। তবে বেলা ১টার পর থেকেই বিক্রয়চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে টানা পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ৪৫ পয়েন্ট কমে হাজার ৫৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৫৯৭ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ২৭ পয়েন্ট কমে হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৪০২ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১২ পয়েন্ট কমে হাজার ৪৩৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৪৪৮ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ৮০৮ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৮৩২ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৭১টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৫৮টির, কমেছে ১৫৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১৫৪টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৭ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল প্রকৌশল খাত। আর বস্ত্র খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে ভ্রমণ অবকাশ খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল পাট খাতে দশমিক শতাংশ। পাঁচটি বাদে বাকি সব খাতের শেয়ারেই গতকাল নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ৭৯ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৫৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ৬৬০ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৩১ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৯ হাজার ৪৫০ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৬৮টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৪টির, কমেছে ১০৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১১৮টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১২৬ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ৪৯ কোটি টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন