শেষ ঘণ্টার বিক্রয়চাপে সূচকে দরপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা তিন কার্যদিবসের উত্থান শেষে গতকাল দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজািবাজারে। সূচকের পাশাপাশি দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমেছে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সূচক কমলেও দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। মূলত লেনদেনের শেষ ঘণ্টার বিক্রয়চাপের কারণে গতকাল দিন শেষে দরপতন হয়েছে পুঁজিবাজারে।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, গতকাল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির প্রবণতা ছিল বেশি। শেয়ার বিক্রি করে অনেকেই বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগের মাধ্যমে নিজেদের পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাস করছেন। টানা তিনদিনের উত্থানের কারণেও অনেকের মধ্যে শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে। বাজারে অস্থিরতা দেখা গেলেও শেয়ার কেনার চাপ বেশি থাকায় লেনদেনের বেশির ভাগ সময় সূচক ঊর্ধ্বমুখী ছিল। কিন্তু লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় বড় ধরনের বিক্রয়চাপ আসার কারণে শেষ পর্যন্ত সূচকের পতন হয়।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় লেনদেন শুরুর মিনিট পর থেকেই পয়েন্ট হারাতে শুরু করে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। অবশ্য লেনদেনের ২০ মিনিট পরেই সূচকটি ঘুরে দাঁড়ায়। দিনভর উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে দুপুর ১২টা ৪৯ মিনিট পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ঊর্ধ্বমুখী ছিল সূচক। কিন্তু শেয়ার বিক্রির চাপ তীব্র হওয়ার কারণে এর পর থেকেই পয়েন্ট হারাতে শুরু করে সূচক। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট কমে হাজার ৫৩৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৫৬০ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল পয়েন্ট কমে হাজার ৩৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এর আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৩৭৬ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে পয়েন্ট কমে হাজার ৪৩২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ৪৪১ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের উত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, একমি ল্যাবরেটরিজ, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালম অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ৬৯১ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৭৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ২১৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ১০৯টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৭ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে ওষুধ রসায়ন খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল বস্ত্র খাত। আর সিরামিক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে সেবা আবাসন খাতে সবচেয়ে বেশি দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন ছিল তথ্যপ্রযুক্তি খাতে শতাংশ।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৫৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ৫৫৫ পয়েন্টে। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৯ হাজার ২৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৯ হাজার ২৭৬ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৭৪টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪৯টির, কমেছে ১৬০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৬৫টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ৪১ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন