শেষ সদস্যের মৃত্যুতে হারিয়ে গেল অ্যামাজনের একটি অজানা সম্প্রদায়

বণিক বার্তা অনলাইন

প্রায় ৩০ বছর ধরে অ্যামাজনে নিজের জগতে ডুব ছিলেন তিনি। অন্য কোনো মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না তার। টিকে আছেন বাদাম কিংবা ফলমূল খেয়ে। সেই একাকিত্বের মধ্যেই তার জীবন সাঙ্গ হলো। এই মানুষটির মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিলুপ্ত হলো দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসী একটি গোষ্ঠী।

এনডিটিভি জানায়, সম্প্রতি নিজ কুড়েঘরে বিছানার উপর নিঃসঙ্গ মানুষটির মরদেহ পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে ব্রাজিল পুলিশ।

অ্যামাজনের এই রহস্যময় ব্যক্তিকে তার সম্প্রদায়ের সর্বশেষ সদস্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ২৬ বছর ধরে তাকে দূর থেকে পর্যবেক্ষণ ও সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছিল ব্রাজিলের ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশন (এফইউএনএআই)।

গহীন জঙ্গলে গর্ত খুঁড়ে ছিল তার বসবাস। তাই বাইরের দুনিয়ায় ‘গর্তমানব’ বলে পরিচিতি পেয়েছিলেন। চাষ করতেন ভুট্টা ও পেঁপে। ধারণা করা হয়, বুনো জীবজন্তু ধরা এবং বাইরের জনপদ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখার জন্য এই অভিনব জীবনযাপন।

পশ্চিম ব্রাজিলের অ্যামাজন অঞ্চল রন্দোনিয়া প্রদেশে বসবাস ছিল তার। ৬০ বছর জীবনের প্রায় অর্ধেকটাই কাটিয়েছেন নিঃসঙ্গ অবস্থায়। ভূমি দখলদারদের আগ্রাসনে ১৯৭০ এর দশকে তার সম্প্রদায়ের অধিকাংশ সদস্য মারা যায়। টিকে থাকা ছয়জনের পাঁচজন ১৯৯৫ সালের দিকে বরণ করে একই পরিণতি। সেই থেকে বাইরের দুনিয়া এড়িয়ে চলেছেন মানুষটি। যার ফলে তার সম্প্রদায় ও সংস্কৃতি নিয়ে কিছুই জানা যায়নি।

গহীন জঙ্গলে এই রহস্য মানবের চলাচলের সর্বশেষ চিত্রধারণ হয় ২০১৮ সালে। তখন তিনি কুঠারের মতো ধারালো অস্ত্র দিয়ে গাছ কাটছিলেন। 

আদিবাসী নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠন সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক ফিয়োনা ওয়াটসন বলেন, কোন বহিরাগত তার নাম জানে না। এমনকি তার গোত্র সম্পর্কেও জানে না। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একটি সম্প্রদায়ের গণহত্যা পূর্ণতা পেল।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন