দামের ঊর্ধ্বগতি মোকাবেলা

ছয় প্রতিষ্ঠানকে আরো ৩২ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেসরকারিভাবে আরো ৩২ হাজার টন সেদ্ধ আতপ চাল আমদানির জন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠান অনুমতি পাচ্ছে। চালের দামের ঊর্ধ্বগতি রোধে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে আমদানির অনুমতি দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে দুটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে নন বাসমতী সেদ্ধ চাল ২০ হাজার টন এবং আতপ চাল ১২ হাজার টন। চালে সর্বোচ্চ শতাংশ ভাঙা দানা থাকতে পারবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গিয়েছে।

ছয়টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যশোর বেনাপোলের মেসার্স লিপু ইন্টারন্যাশনালকে পাঁচ হাজার টন সেদ্ধ পাঁচ হাজার টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের এমএস সালাম অ্যান্ড কোং নামের প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ হাজার টন আতপ চাল, সিলেট কালীঘাটের মেসার্স বাবুল দেব নামের প্রতিষ্ঠানকে দুই হাজার টন আতপ চাল, ঢাকা মিরপুরের প্রতিষ্ঠান গ্রনি নিপা এন্টারপ্রাইজকে পাঁচ হাজার টন সেদ্ধ চাল, গুলশানের দ্য লাইট গ্লোবাল সলিউশন লিমিটেড শ্যামলীর সাকু করপোরেশনকে পাঁচ হাজার টন করে সেদ্ধ চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে আগে অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর এলসি খোলার সময় আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ জুন বেসরকারিভাবে লাখ হাজার টন চাল আমদানির জন্য ৯৫টি প্রতিষ্ঠান, জুলাই লাখ ৪৬ হাজার টন চাল আমদানির জন্য ১২৫টি প্রতিষ্ঠান, জুলাই লাখ ৮২ হাজার টন চাল আমদানির জন্য ৬২টি প্রতিষ্ঠান, ১৩ জুলাই ৭৩ হাজার টন চাল আমদানির জন্য ৪৭টি প্রতিষ্ঠান ২০ জুলাই ৯০ হাজার টন সেদ্ধ আতপ চাল আমদানির জন্য ৫৭টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল।

চাল আমদানি শর্তে বলা হয়েছে, আগামী ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বরাদ্দ পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট-ঋণপত্র) খুলতে হবে এবং -সংক্রান্ত তথ্য (বিল অব এন্ট্রিসহ) খাদ্য মন্ত্রণালয়কে -মেইলে তাত্ক্ষণিকভাবে জানাতে হবে। বরাদ্দ পাওয়া আমদানিকারকদের আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে পুরো চাল বাংলাদেশে বাজারজাত করতে হবে। আমদানি করা চালের পরিমাণ গুদামজাত বাজারজাত করার তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানাতে হবে।

বরাদ্দের অতিরিক্ত আইপি (ইমপোর্ট পারমিট) ইস্যু/জারি করা যাবে না। আমদানি করা চাল স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠানের নামে ফের প্যাকেটজাত করা যাবে না। আমদানি করা বস্তায় চাল বিক্রি করতে হবে বলেও শর্তে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাংকে এলসি খুলতে ব্যর্থ হলে বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে বলেও শর্ত দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

অনেকদিন ধরেই অস্থিতিশীল চালের বাজার। ভরা বোরো মৌসুমেও চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। মোটা চালের কেজিপ্রতি দাম ৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। সরু চালের কেজি ৬৫ থেকে ৮০ টাকা। প্রেক্ষাপটে দাম স্থিতিশীল রাখতে শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত ২৩ জুন চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ২৫ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর ফলে চাল আমদানিতে মোট করভার সাড়ে ৬২ শতাংশ থেকে কমে ২৫ শতাংশে নেমেছে।

নতুন শুল্ক ছাড়ের মেয়াদ আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকবে। শুল্ক ছাড়ের অনুমোদন পেতে আমদানিকারককে অবশ্যই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছে এনবিআর।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন