মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা নিয়ে এইচএসবিসির সমীক্ষা

জনসংখ্যার অনুপাতে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে ছাড়িয়ে যাবে সিঙ্গাপুর

বণিক বার্তা ডেস্ক

সিঙ্গাপুরে প্রতি বছর মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা বাড়ছে। আগামী আট বছরে দেশটিতে জনসংখ্যার বিপরীতে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা আরো বাড়বে। এক্ষেত্রে এশিয়ার নগররাষ্ট্রটি যুক্তরাষ্ট্র চীনকে ছাড়িয়ে যাবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এইচএসবিসির এক সমীক্ষায় তথ্য উঠে এসেছে। খবর স্ট্রেইটস টাইমস।

ব্রিটিশ আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এইচএসবিসি জানিয়েছে, ২০২১ সালে সিঙ্গাপুরে প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার দশমিক শতাংশের সম্পদ অন্তত মিলিয়ন (১০ লাখ) ডলার ছিল। ২০২৫ সালে দেশটিতে ধনীদের হার দশমিক শতাংশে উন্নীত হবে। এরপর ২০৩০ সালে জনসংখ্যার বিপরীতে মিলিয়নেয়ারের হার ১৩ দশমিক শতাংশে পৌঁছবে। হার যুক্তরাষ্ট্র, চীন ছাড়াও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্য যেকোনো অর্থনীতির তুলনায় বেশি হবে। সমীক্ষায় দেশটির নাগরিক স্থায়ী বাসিন্দারা অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।

ধনকুবেরদের সম্পদ পরিমাপের ক্ষেত্রে এইচএসবিসি তাদের ব্যাংক হিসাবে নগদ অর্থ এবং স্টক বন্ডের মতো সিকিউরিটিজগুলো বিবেচনায় নিয়েছে। পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট খাতের সম্পদও হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ব্রিটিশ ব্যাংকটির মতে, সিঙ্গাপুর এরই মধ্যে জনসংখ্যার বিপরীতে মিলিয়নেয়ারের সংখ্যায় এশিয়ায় দ্বিতীয় অবস্থানে পৌঁছেছে। ২০২১ সালে শতাংশ হার নিয়ে তালিকায় শীর্ষে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০৩০ সাল নাগাদ অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় অবস্থানে নেমে যাবে। সে সময় দেশটির জনসংখ্যার ১২ দশমিক শতাংশের হাতে নগদ সম্পদ মিলিয়ে মিলিয়ন ডলার থাকবে। চলতি দশকের শেষে হংকংয়ের জনসংখ্যার ১১ দশমিক শতাংশ, যুক্তরাষ্ট্রের শতাংশ, জাপানের দশমিক শতাংশ এবং চীনের দশমিক শতাংশ মিলিয়নেয়ার হবে।

দ্য রাইজ অব এশিয়ান ওয়েলথ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা ৬৭ শতাংশের হাতে অন্তত আড়াই লাখ ডলার সম্পদ থাকবে। এক্ষেত্রে দেশটি অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে পিছিয়ে থাকবে। সময়ে দেশটির ৭০ দশমিক শতাংশ নাগরিক অন্তত আড়াই লাখ ডলারের মালিক হবে।

এইচএসবিসি জানিয়েছে, এশিয়ায় ধনকুবেরদের বৃদ্ধি ২০৩৫ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। অঞ্চলে মোট মিলিয়নেয়ারের ১৭ শতাংশের বাসস্থান হবে সিঙ্গাপুর। এক্ষেত্রে ১৫ দশমিক শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে অস্ট্রেলিয়া এবং ১৪ দশমিক শতাংশ নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকবে হংকং।

এদিকে মিলিয়নেয়ারের হিসাবে অঞ্চলের বিশাল জনসংখ্যার দেশগুলো নেতৃত্ব দেবে। ২০২১ সালে চীনে অন্তত মিলিয়ন ডলার সম্পদ থাকা প্রাপ্তবয়স্কের সংখ্যা কোটি ৭১ লাখে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটিশ ব্যাংকটির মতে, সংখ্যা ২০৩০ সালের মধ্যে কোটি লাখে উন্নীত হবে। একই সময়ে সিঙ্গাপুরে ধনকুবেরের সংখ্যা লাখ থেকে লাখে পৌঁছবে।

এইচএসবিসির প্রধান এশীয় অর্থনীতিবিদ ফ্রেডেরিক নিউম্যান বলেন, এশিয়ার ক্রমবর্ধমান সম্পদের বিবরণ সামাজিক পরিস্থিতির উপরেও আলোকপাত করছে। এটি শেষ পর্যন্ত লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনতে সহায়তা করবে। সামগ্রিকভাবে অঞ্চলে খুব কমই মূলধনের অভাব রয়েছে। যদিও দেশভেদে মূলধনের পরিমাণে বড় ধরনের ব্যবধান রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০০৮ সালে বৈশ্বিক আর্থিক সংকট শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এশিয়ার আর্থিক সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যায়। গত বছর এশিয়ার আর্থিক সম্পদ ১৪০ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে সম্পদের পরিমাণ ১২০ ট্রিলিয়ন ডলার।

বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পরের বছরগুলোয় অঞ্চলের অর্ধেকের বেশি সম্পদের মালিকানা ছিল জাপানের হাতে। তবে কয়েক বছর ধরে চীনের অংশীদারত্ব বাড়ছে। ২০২১ সাল নাগাদ এশিয়ার মোট আর্থিক সম্পদে চীনের অংশীদারত্ব ৪৬ শতাংশে পৌঁছেছে। সময়ে জাপানের অংশ এক-চতুর্থাংশে নেমেছে।

ফ্রেডেরিক নিউম্যান বলেন, জাপান বাদে এশিয়ার আর্থিক সম্পদ এখনো যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। তবে মাথাপিছু আয় বাড়ার বর্তমান প্রবণতা অনুসারে ২০২৫ সালের মধ্যে জাপান বাদ দিয়েও এশিয়ার সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। জাপান ব্যতীত বর্তমানে এশিয়ায় মিলিয়নেয়ারের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি। চলতি দশকের শেষ দিকে সংখ্যা কোটি ৬০ লাখে উন্নীত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন