
আজ বাংলাদেশের আধুনিক চিত্রকলার অন্যতম পথিকৃৎ চিত্রশিল্পী ও ভাষাসংগ্রামী মুর্তজা বশীরের ৯০তম জন্মদিন। এ উপলক্ষে ফার্মগেটের মণিপুরীপাড়ায় শিল্পীর বাসায় এক প্রীতি সম্মেলনের আয়োজন করেছে মুর্তজা বশীর ট্রাস্ট। এ সময় শিল্পীর বাসায় শিল্পী মুর্তজা বশীরের আঁকা আত্মপ্রতিকৃতি এবং ব্যক্তিগত সংগ্রহ প্রদর্শিত হবে।
বহু ভাষাবিদ ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও মরগুবা খাতুনের ছোট ছেলে মুর্তজা বশীর ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার রমনায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা-কলকাতা-ফ্লোরেন্স-প্যারিসে শিল্পশিক্ষা গ্রহণ করে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান ছিলেন। ‘বিমূর্ত বাস্তবতা’ চিত্রধারণার প্রবর্তক শিল্পী মুর্তজা বশীরের ‘দেয়াল’, ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘পাখা’ শীর্ষক বিখ্যাত কয়েকটি চিত্রমালা রয়েছে।
ফিগারেটিভ চিত্রকলায় স্বতন্ত্র ভাষা তৈরি করলেও ‘জ্যোতি’ ও ‘কালেমা তাইয়্যেবা’ শীর্ষক গুরুত্বপূর্ণ চিত্রমালা তিনি এঁকেছেন। লিনোকাট মাধ্যমে ‘রক্তাক্ত ২১শে’ শীর্ষক তার আঁকা ছবিটি ভাষা আন্দোলন-বিষয়ক প্রথম চিত্রকর্ম বলে গণ্য করা হয়। সাহিত্যের সব শাখায় বিচরণ করেও তিনি রেখেছেন নিজস্বতার স্বাক্ষর। ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা বিখ্যাত উপন্যাস ‘আলট্রামেরীন’। টেরাকোটা, মুদ্রা ও শিলালিপি নিয়েও তিনি গবেষণা করেছেন। তিনি ডাকটিকিট, মুদ্রা, দেয়াশলাই প্রভৃতির গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রাহক। এছাড়া ম্যুরাল মাধ্যমে রেখেছেন স্বকীয়তার স্বাক্ষর।
শিল্পী মুর্তজা বশীর ১৯৭৫ সালে লাভ করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার। বাংলাদেশের চিত্রকলায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ১৯৮০ সালে তিনি পান একুশে পদক। ২০১৯ সালে সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শিল্পী মুর্তজা বশীরকে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।
কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ৮৭ বছর বয়সে ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ৯টা ১০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর।