কম মাত্রাও স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ

বায়ুদূষণে প্রতি বছর আট হাজার কানাডীয়র মৃত্যু

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রতি বছর প্রায় আট হাজার কানাডীয় বায়ুদূষণের কারণে মৃত্যুবরণ করছে। যদিও পরিচ্ছন্ন বায়ুর তালিকায় দেশটির শহরগুলো এগিয়ে রয়েছে। এতে বিভিন্ন দেশের সরকারকে ভবিষ্যতে নতুন করে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের পথ নিয়ে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করছে। লন্ডনের কুখ্যাত ১৯৫২ সালের ধোঁয়ার ঘটনার পরবর্তী কিছু পরিত্যক্ত তথ্য বলছে, বায়ুদূষণের ঘনত্বের শ্বাস নিলে আমাদের স্বাস্থ্য ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে নতুন একটি গবেষণায় বায়ুদূষণের স্বাস্থ্যগত ক্ষতির বিষয়টি দেখা হচ্ছে ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে।

দ্য গার্ডিয়ানের খবর অনুসারে, ১৯৮১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ৭০ লাখ কানাডীয়র ওপর আদমশুমারি চালিয়ে সেই তথ্য বায়ুদূষণের তথ্যের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় যে ছোট ছোট কণার দূষণও এখন ক্ষতিকর কিনা। তুলনামূলক পরিচ্ছন্ন বায়ু থাকা সত্ত্বেও ওই গবেষণায় উঠে এসেছে কানাডীয়দের মৃত্যুর বিষয়টি।

আরো নির্দিষ্টভাবে বলতে হলে পরিচ্ছন্ন কিছু এলাকার বাসিন্দাও তাদের স্বাস্থ্যের ওপর কোনো না কোনো প্রভাব দেখতে পাচ্ছিল। সাধারণত যেখানে দূষণের ঘনত্ব বেশি থাকে সেখানেই বায়ুদূষণের ক্ষতিগুলো টের পাওয়া যায়। কানাডার ওই গবেষণাটি যুক্তরাষ্ট্রের হেলথ ইফেক্ট ইনস্টিটিউটের অর্থায়নে করা তিনটি গবেষণার একটি। অন্য দুটির একটি গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কোটি মানুষের ওপর নজর রাখা হয়েছে আর অন্যটিতে ইউরোপের কোটি ৭০ লাখ মানুষের ওপর নজর রাখা হয়েছে। প্রতিটি গবেষণা থেকেই গবেষকরা একই সমাধানে পৌঁছেন যে নিরাপদ বায়ুমান নির্ধারণ করার কোনো সর্বনিম্ন মাত্রা নেই। এর অর্থ বিভিন্ন দেশের সরকার তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা জনগণ কতটা খারাপ বায়ুতে শ্বাস নিতে পারবে সেই লক্ষ্যমাত্রায় আটকে ফেলা উচিত হবে না।

ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়ার প্রফেসর মাইকেল ব্রাউয়ার বলেন, গবেষণা থেকে পাওয়া এসব তথ্যের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে, যেগুলো ক্রমাগত বায়ুদূষণ কমালে পাওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রেও আরো কঠোর নিয়ন্ত্রক মান নির্ধারণ করতে হবে।

তিনি যোগ করেন, আমরা বায়ুদূষণের কোনো নিরাপদ মাত্রা চিহ্নিত করতে পারব না। সেটা আমাদের মাথায় গেঁথে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে এবং প্রতি বছর দূষণ ক্রমান্বয়ে কমানোর দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। শুধু পাঁচ বা ১০ বছর পরে পরে গিয়ে পর্যালোচনা করা হবে এমন নির্দিষ্ট ঘনত্বের মান নির্ধারণ করা থেকে আমাদের বিরত থাকতে হবে। কেননা স্বাস্থ্যে প্রভাবগুলো এখনো খুবই বড়।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের রিভিউ থেকে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছিল যে বায়ুদূষণ ডিমেনশিয়া বাড়িয়ে দেয়। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের গবেষণা থেকে উঠে এসেছিল, কীভাবে যানবাহনের দূষণের মধ্যে থাকলে অ্যাজমায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।

যদিও যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় দেশগুলো গড় দূষণের মাত্রা এবং প্রতিটি দেশের মোট যে পরিমাণ দূষণ তৈরি হয় তা কমানোর জন্য বদ্ধপরিকর। তবে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকার প্রমাণই নতুন করে বায়ুদূষণ পরিস্থিতি উন্নত করার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেয়া কতটা জরুরি তা মনে করায়, বিশেষ করে তরুণ ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন