সাপ্তাহিক পুঁজিবাজার

বিবিধ ও বস্ত্র খাতে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহে সার্বিকভাবে নিম্নমুখিতা পরিলক্ষিত হয়েছে। মূলত জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি টাকার অবমূল্যায়নের চাপে থাকা অর্থনীতির নেতিবাচক  প্রভাব পুঁজিবাজারেও দৃশ্যমান হতে দেখা গেছে। সপ্তাহজুড়ে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সবগুলো সূচকের পাশাপাশি গড় লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সময়ে এক্সচেঞ্জটিতে খাত বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে বিবিধ বস্ত্র খাত থেকে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গত সপ্তাহে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স আগের সপ্তাহের তুলনায় ১৬৩ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৯ শতাংশ কমেছে। সূচকটির বর্তমান অবস্থান হাজার ১৪৮ পয়েন্টে। সূচকের পতনে গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের শেয়ারের।

ডিএসইর অন্য সূচকের মধ্যে নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০ দশমিক ৮১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৩ শতাংশ কমে হাজার ১৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ২৯ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ কমে হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এক্সচেঞ্জটিতে গত সপ্তাহে মোট ৩৯৫টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৪১টির, কমেছে ২৮৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৫৮টির। এছাড়া লেনদেন হয়নি ৯টির।

ডিএসইতে গত সপ্তাহের চার কার্যদিবসে হাজার ৫৮৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৫৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে সাপ্তাহিক লেনদেন কমেছে হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা বা ২৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর আলোচ্য সপ্তাহে আগের সপ্তাহের তুলনায় এক্সচেঞ্জটির গড় লেনদেন কমেছে ১১৫ কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গত সপ্তাহে এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক গড়ে ৮৯৬ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেন ছিল হাজার ১১ কোটি টাকা।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাবে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আরো চাপে পড়ার শঙ্কা কাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এরই মধ্যে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি টাকার অবমূল্যায়নের প্রভাবে অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে। অর্থনীতিতে চাপ আরো বাড়তে পারে এমন শঙ্কায় গত সপ্তাহে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগাকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে।  

গত সপ্তাহে ডিএসইতে খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে বস্ত্র খাত। ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৪ দশমিক ৯০ শতাংশ খাতটির দখলে রয়েছে। ১২ দশমিক ৯০ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। খাতের দখলে রয়েছে গত সপ্তাহের মোট লেনদেনের ১২ শতাংশ। দশমিক ২০ শতাংশ নিয়ে তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। পরের অবস্থানে থাকা খাদ্য আনুষঙ্গিক খাতের দখলে রয়েছে মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশ।

ডিএসইতে গত সপ্তাহে কাগজ মুদ্রণ খাতে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে, দশমিক ৪০ শতাংশ। দশমিক ৪০ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভ্রমণ খাত। এছাড়া পাট খাত থেকে দশমিক ৭০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ডে দশমিক ৪০ শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে গত সপ্তাহে। বাকি সব খাত থেকেই গত সপ্তাহে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। সময়ে সবচেয়ে বেশি নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে বিবিধ খাতে, দশমিক ৯০ শতাংশ। দশমিক ১০ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বস্ত্র খাত।

সিএসইতে গত সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই দশমিক ২৩ শতাংশ কমে প্রায় ১৮ হাজার ১২৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসসিএক্স সূচকটি সপ্তাহ শেষে দশমিক ২৫ শতাংশ কমে ১০ হাজার ৮৬০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সময় এক্সচেঞ্জটিতে ৭৪ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আলোচ্য সময়ে সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৮টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৫২টির, কমেছে ২১৯টির, অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৭টির।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন