চলতি বছরের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে সিঙ্গাপুর সরকার। দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথগতি ও মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সম্প্রতি সিঙ্গাপুরের বাণিজ্য ও পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ বছর দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) ৩ থেকে ৪ শতাংশ হবে। যদিও এর আগে দেশটির জিডিপি ৩-৫ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। চলতি বছরের প্রথমার্ধের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপর ভিত্তি করে এ পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি ছিল। বছরের প্রথমার্ধে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ৪ দশমিক ১ শতাংশে। প্রবৃদ্ধি সিঙ্গাপুরের পরিবহন ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের পূর্বাভাসের তুলনায় কম ছিল। গত মাসে মন্ত্রণালয় জানায় প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হবে।
এদিকে প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে দশমিক ২ শতাংশ অর্থনৈতিক সংকোচন দেখা দেয় সিঙ্গাপুরে। অথচ প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি দশমিক ৮ শতাংশ সম্প্রসারণ হয়েছে।
এ বিষয়ে দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প সচিব গ্যাব্রিয়েল লিম বলেন, গত পূর্বাভাস প্রকাশের পর থেকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। মূল্যস্ফীতির চাপ ক্রমেই বাড়ছে। পাশাপাশি মুদ্রানীতি কঠোর করে চলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো। এতে করে প্রধান প্রধান অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন খাতেও প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়েছে।
চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সিঙ্গাপুরের শিল্পোৎপাদন খাত গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৭ শতাংশ সম্প্রসারিত হয়েছে। প্রথম প্রান্তিকে এ প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে নির্মাণ খাতের প্রবৃদ্ধি ছিল গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে এ হার ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে পাইকারি বাণিজ্য খাতে প্রবৃদ্ধি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি ছিল। অথচ প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে মূল্যস্ফীতির চাপ জনজীবন আরো বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে চলতি বছরের বাণিজ্য পূর্বাভাস বাড়িয়েছে এন্টারপ্রাইজ সিঙ্গাপুর। পূর্বাভাসে বলা হয়, জ্বালানি তেলবহির্ভূত দেশীয় রফতানি ৫-৬ শতাংশ হারে বাড়বে। যদিও এর আগের পূর্বাভাসে প্রবৃদ্ধি ৩-৫ শতাংশ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।
