চলতি মাসে ওপেকের জ্বালানি তেল রফতানি বাড়ার আভাস

বণিক বার্তা ডেস্ক

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে ওপেকের অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি। মাসের বাকি দিনগুলোয়ও রফতানি ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে তথ্য জানিয়েছে পণ্য বাজারবিষয়ক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান পেট্রো লজিস্টিকস।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আগস্টের প্রথম সপ্তাহে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকের রফতানি দৈনিক লাখ ২৩ হাজার ব্যারেল করে বেড়েছে, যা গত মাসের গড় দৈনিক রফতানির চেয়ে বেশি। মোট রফতানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দৈনিক কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ব্যারেল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওপেক প্লাসের চুক্তি থেকে সরে আসা লিবিয়া জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে ফোর্স মেজার উঠিয়ে নেয়। এতে আফ্রিকান দেশটির রফতানি ঘুরে দাঁড়ায়। এটি জোটের মোট রফতানি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।

পেট্রো লজিস্টিকসের দেয়া তথ্যমতে, প্রথম সপ্তাহে লিবিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন দৈনিক লাখ ৩৩ হাজার ব্যারেল করে বেড়েছে। উত্তোলনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দৈনিক লাখ ২৭ হাজার ব্যারেলে।

এদিকে গত মাসে সৌদি আরব ২৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পরিমাণ জ্বালানি তেল রফতানি করেছে। মাসের প্রথম সপ্তাহেও ওপেক প্লাসের শীর্ষ উত্তোলক দেশটির রফতানি ঊর্ধ্বমুখী। পেট্রো লজিস্টিকস বলছে, সৌদি আরব অবশেষে ওপেকের বেঁধে দেয়া কোটা অনুযায়ী জ্বালানি তেল উত্তোলনে ফিরেছে। এর আগে বছরের প্রথমার্ধজুড়েই দেশটি উত্তোলন কোটা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

তথ্য বলছে, জুলাইয়ে ওপেক প্লাস দৈনিক পাঁচ লাখ ব্যারেল করে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এর পরও জোটটি সামষ্টিক কোটা অনুযায়ী উত্তোলন বাড়াতে পারেনি। আরগাসের সমীক্ষার তথ্যানুযায়ী, জুলাইয়ে জোটটির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ব্যবধান ছিল দৈনিক ২৭ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল।

গত মাসে জোটটি সম্মিলিতভাবে কোটি ৮৭ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করে। এর মধ্যে জোটটির সর্বোচ্চ উত্তোলক সৌদি আরব সবচেয়ে বেশি উত্তোলন করেছে।

এদিকে ওপেক তার মিত্ররা চলতি মাসে জ্বালানি তেল উত্তোলন সামান্য পরিমাণে বাড়াতে সম্মত হয়েছে। এটিকে বাইডেন প্রশাসনের জন্য অপমানজনক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ইউক্রেনে হামলার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন পশ্চিমা দেশগুলো। পাশাপাশি গ্যাস আমদানিতেও রাশিয়ার ওপর থেকে নির্ভরতা কমাতে জোর প্রচেষ্টা চলছে। অন্যদিকে আগামী শীতে রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের সংকট প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। বাজারে চলমান অস্থিরতা কাটাতে পশ্চিমা মিত্ররা ওপেকভুক্ত দেশগুলোকে উত্তোলন বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে আসছিল। কিন্তু আহ্বানকে এক রকম প্রত্যাখ্যান করে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে প্রতিদিন এক লাখ ব্যারেল করে তেল উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগে গত জুলাই আগস্টে প্রতিদিন লাখ ৪৮ হাজার ব্যারেল করে তেল উত্তোলন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে সৌদি আরব সফর করেন। সফরের লক্ষ্য ছিল দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নয়ন এবং তার দেশের পাম্পগুলোয় তেলের দাম সহনীয় মাত্রায় নিয়ে আসা। সেজন্য তেল উৎপাদন বাড়ানোর বিকল্প ছিল না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন