১৫ মাস পর ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সরবরাহ শুরু করল বোয়িং

বণিক বার্তা ডেস্ক

আবারো ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সরবরাহ শুরু করেছে বোয়িং। দীর্ঘ ১৫ মাস পর গত বুধবার প্রথমবারের মতো মডেলটি সরবরাহ করা হয়েছে। উৎপাদনগত ত্রুটির কারণে নিয়ন্ত্রক নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ থাকার পর সরবরাহ মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের এপ্রিলের পর প্রথম ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের সরবরাহ পেয়েছে আমেরিকান এয়ারলাইনস। পুনরায় সরবরাহ শুরুর পর আরো ড্রিমলাইনার পেতে আশাবাদী মার্কিন উড়োজাহাজ পরিবহন প্রতিষ্ঠানটি। সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী রবার্ট ইসোম একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানান, আমেরিকান এয়ারলাইনস চলতি বছর নয়টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সরবরাহ পাওয়ার আশা করছে।

বোয়িং নিশ্চিত করেছে, পুঙ্খানুপুঙ্খ ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্লেষণ, যাচাইকরণ এবং পুনরায় ফ্লাইট শুরুর জন্য বোয়িংয়ের নির্ভুল স্পেসিফিকেশন এবং নিয়ন্ত্রক প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করে সরবরাহ শুরু করা হয়েছে। খবরের পর মার্কিন পুঁজিবাজারে বোয়িংয়ের শেয়ারদর দশমিক শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।

এর আগে চলতি সপ্তাহেই মার্কিন ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) পুনরায় ড্রিমলাইনার সরবরাহ শুরু করতে বোয়িংকে অনুমোদন দিয়েছিল। ২০১৮ ২০১৯ সালে ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনার পর এফএএ বোয়িংয়ের উড়োজাহাজগুলো আরো ঘনিষ্ঠভাবে যাচাই শুরু করে। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, তারা ৭৮৭ ড্রিমলাইনারের উৎপাদন ত্রুটি তদন্ত করছে।

বোয়িংয়ের প্রায় ১২০টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার সরবরাহের অপেক্ষায় রয়েছে। এফএএ জানিয়েছিল, প্রতিষ্ঠানটি এয়ারওয়ার্থিনেস সার্টিফিকেট ইস্যু করা সরবরাহের অনুমতি দেয়ার আগে প্রতিটি উড়োজাহাজ পরিদর্শন করবে। এফএএ সাধারণত নির্মাতাদের কাছে উড়োজাহাজের টিকিটিং দায়িত্ব দিয়ে দেয়। তবে ৭৮৭ ম্যাক্সের মতো কিছু ক্ষেত্রে সংস্থাটি প্রতিটি নতুন উড়োজাহাজ অনুমোদনের দায়িত্ব ধরে রেখেছে।

বোয়িংয়ের বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ বিভাগের প্রধান নির্বাহী স্ট্যান ডিল একটি -মেইলে কর্মীদের বলেছেন, প্রত্যেকটি উড়োজাহাজের সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় সময় নেবে।

গত জানুয়ারিতে ৭৮৭ উড়োজাহাজ সরবরাহে বিলম্বের কারণে ৩৫০ কোটি ডলার চার্জের বিষয়টি প্রকাশ করেছিল উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া উৎপাদন ত্রুটি এবং সংশ্লিষ্ট মেরামত পরিদর্শনের কারণেও সংস্থাটির আরো ১০০ কোটি ডলার উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গিয়েছে।

এর আগে উৎপাদনগত ত্রুটি নিয়ে বোয়িং জানিয়েছিল, ৭৮৭ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের নাকের অংশে কিছু সমস্যা খুঁজে পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেগুলো সমাধানেরও কাজ চলছে। সে সময় গণমাধ্যমের সূত্রগুলো নিশ্চিত করে, বিষয়ে গত বছরের আগস্টে এফএএর সঙ্গে বোয়িংয়ের বৈঠক হয়। কিন্তু ড্রিমলাইনারের মান নিশ্চিত করার যে পদ্ধতি, তাতে একমত হতে পারেনি দুই পক্ষ। ঘটনায় নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়েছিল, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সন্তুষ্ট না হবেন, ততক্ষণ উড়োজাহাজগুলোর পরিদর্শনের দলিলে স্বাক্ষর করা হবে না।

এছাড়া ২০২০ সালে মডেলটির ফিউজলেজ প্যানেলের মধ্যে ক্ষুদ্র ফাঁকা জায়গা পাওয়া যায়। নিয়ে সংস্থাটির বেশ সমালোচনা হয়। সমস্যার সমাধান করতে টাইটেনিয়াম অংশ প্রতিস্থাপন করে বোয়িং। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, যে ধাতু ব্যবহার করেছে, তা এফএএর নির্ধারিত মানের সঙ্গে খাপ খায় না। যদিও নিরাপত্তায় বিভ্রাট ঘটার কোনো আশঙ্কা নেই বলে বরাবর বলে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন