পুঁজিবাজারে বড় দরপতন

একদিনেই ১ শতাংশের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে ডিএসইএক্স

নিজস্ব প্রতিবেদক

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে টানা তৃতীয় দিনের মতো দরপতন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে। এর মধ্যে গতকাল পতনের মাত্রা ছিল আরো বেশি। এদিন শতাংশের বেশি পয়েন্ট হারিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। পাশাপাশি এক্সচেঞ্জটিতে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) গতকাল সূচক লেনদেন কমেছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর থেকেই পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। মাঝে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও সাড়ে ১০টার পর থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপে ক্রমেই নিম্নমুখী হতে থাকে পুঁজিবাজার। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক ২৫ শতাংশ কমে হাজার ১৮১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ডিএসইএক্স। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল ২৭ পয়েন্ট কমে হাজার ২১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ২৩৮ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে ১৪ পয়েন্ট কমে হাজার ৩৫৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৩৬৮ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, ওরিয়ন ফার্মাসিউটিক্যালস অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের।

বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাবে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি আরো চাপে পড়ার শঙ্কা কাজ করছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। এরই মধ্যে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি টাকার অবমূল্যায়নের প্রভাবে অর্থনীতি চাপের মধ্যে ছিল। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে চাপ আরো তীব্র হবে। উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি অঞ্চলভেদে শিল্প-কারখানা একদিনের জন্য বন্ধ রাখার বিষয়টি তাদের আরো শঙ্কিত করে তুলেছে। ফলে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করতে দেখা গিয়েছে। ফ্লোর প্রাইস না থাকলে পুঁজিবাজারে গতকাল পতনের তীব্রতা আরো বেশি হতো।

ডিএসইতে গতকাল ৭৯৯ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে, যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ৮৩ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ২৬টির, কমেছে ২৭৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৭৪টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে বিবিধ খাত। দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল ওষুধ রসায়ন খাত। আর খাদ্য আনুষঙ্গিক খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে একমাত্র পাট খাতে দশমিক শতাংশ ইতিবাচক রিটার্ন এসেছে। বাকি সব খাতের রিটার্ন ছিল নেতিবাচক। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রনতিবাচক রিটার্ন ছিল ভ্রমণ অবকাশ খাতে, দশমিক শতাংশ।

সিএসইর নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল ১২৩ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ৪৭ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল ২০৫ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ২৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৪৩৮ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৬৪টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৩২টির, কমেছে ১৮৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৩টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ১৭ কোটি ২০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন