জ্বালানি তেলের রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে পুঁজিবাজারে দরপতন

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত শুক্রবার রাতে আকস্মিক এক ঘোষণায় দেশে জ্বালানি তেলের রেকর্ড পরিমাণ দাম বাড়ায় সরকার। এতে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেকাংশে বেড়ে যাবে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারেও। টানা পাঁচদিনের উত্থানের পর গতকাল দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের পতন হয়েছে।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর পর থেকেই শেয়ার বিক্রির চাপে পয়েন্ট হারাতে থাকে সূচক। অবশ্য মিনিট পরই আবার সূচকটি ঘুরে দাঁড়ায়। লেনদেনের ২২ মিনিট থেকেই আবারো নিম্নমুখী হয়ে পড়ে সূচক। এরপর দিনভর উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন চলতে থাকে পুঁজিবাজারে। শেষ পর্যন্ত গতকাল দিন শেষে আগের দিনের তুলনায় পয়েন্ট কমে হাজার ৩০৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স। এর আগের কার্যদিবস শেষে যা ছিল হাজার ৩১২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইর ব্লু-চিপ সূচক ডিএস-৩০ গতকাল পয়েন্ট কমে হাজার ২৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন শেষে যা ছিল হাজার ২৬৫ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস গতকাল দিন শেষে পয়েন্ট বেড়ে হাজার ৩৭৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে। গতকাল সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড, বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিএল) শেয়ারের।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রভাবে গতকাল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মিশ্র প্রবণতা দেখা গিয়েছে। গতকাল পুঁজিবাজারে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির প্রবণতা বেশি ছিল বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। যদিও ফ্লোর প্রাইস বলবৎ থাকার কারণে শেয়ার বিক্রির প্রভাব অনেকটাই প্রশমিত হয়েছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতির অন্যান্য সূচক নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে।

ডিএসইতে গতকাল হাজার ১১৭ কোটি টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। যেখানে আগের কার্যদিবসে লেনদেন ছিল হাজার ১৯০ কোটি টাকা। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ৩৮০টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড করপোরেট বন্ডের মধ্যে দিন শেষে দর বেড়েছে ১২৪টির, কমেছে ১৮৭টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৬৯টি সিকিউরিটিজের বাজারদর।

খাতভিত্তিক লেনদেনচিত্রে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২৫ শতাংশ দখলে নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে বস্ত্র খাত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১২ দশমিক শতাংশ দখলে নিয়েছে ওষুধ রসায়ন খাত। ১১ দশমিক শতাংশ লেনদেনের ভিত্তিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। মোট লেনদেনের দশমিক শতাংশের ভিত্তিতে চতুর্থ অবস্থানে ছিল জ্বালানি বিদ্যুৎ খাত। আর প্রকৌশল খাতের দখলে ছিল লেনদেনের দশমিক শতাংশ। গতকাল পুঁজিবাজারে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক রিটার্ন ছিল ভ্রমণ অবকাশ খাতে দশমিক শতাংশ। অন্যদিকে শতাংশ নেতিবাচক রিটার্নের ভিত্তিতে শীর্ষে ছিল সাধারণ বীমা খাত।

দেশের আরেক পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) নির্বাচিত সূচক সিএসসিএক্স গতকাল পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ১০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে যা ছিল ১১ হাজার ১১০ পয়েন্ট। সিএসইর সব শেয়ারের সূচক সিএএসপিআই গতকাল পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৫৩৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের কার্যদিবসে সূচকটির অবস্থান ছিল ১৮ হাজার ৫৪১ পয়েন্টে। এদিন এক্সচেঞ্জটিতে লেনদেন হওয়া ২৮১টি কোম্পানি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১১২টির, কমেছে ১২০টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৪৯টির বাজারদর। গতকাল সিএসইতে ২১ কোটি ৭০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ হাতবদল হয়েছে, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন