সরবরাহকারীদের চীনের নিয়ম মানার আহ্বান অ্যাপলের

বণিক বার্তা ডেস্ক

প্রযুক্তিপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে এবং যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া থেকে মুক্ত থাকার চীনের নিয়ম অনুসরণে সরবরাহকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। সম্প্রতি নিক্কেই এশিয়া প্রকাশিত এক প্রতিবেদন সূত্রে তথ্য জানা গিয়েছে।

্রপ্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রয়টার্স প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধি দলের তাইওয়ান সফরের পর যুক্তরাষ্ট্র চীনের মধ্যকার বাণিজ্য উত্তেজনা আরো বেড়েছে। অবগত সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন যে দীর্ঘমেয়াদে একটি নিয়ম কার্যকরের লক্ষ্যে কাজ করছে সে বিষয়ে সরবরাহকারীদের জানিয়েছে অ্যাপল; যেখানে তাইওয়ানে উৎপাদিত পণ্য বা যন্ত্রাংশে মেড ইন তাইওয়ান, চীন বা চাইনিজ তাইপে লেবেল লাগানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অ্যাপলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। আরেকটি প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে অ্যাপলের আইফোন অ্যাসেম্বলার প্রতিষ্ঠান পেগাট্রন কারখানায় যে উপাদান পাঠানো হয়েছে সেগুলো যাচাইয়ের জন্য দেশটির শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হাতে আটক রয়েছে। প্রতিবেদনের উত্তরে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, চীনে অবস্থিত কারখানায় তাদের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে।

আগামী সেপ্টেম্বরে নতুন সিরিজের আইফোন বাজারজাত করবে অ্যাপল। এর অংশ হিসেবে তাইওয়ানের অন্যতম সরবরাহকারী অ্যাসেম্বলি প্রতিষ্ঠান ফক্সকন পেগাট্রন তাদের কারখানাগুলোর উৎপাদন কার্যক্রম বাড়িয়েছে।

অন্যদিতে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যসংক্রান্ত বিরোধ শুরু হওয়ায় চীন সরকার সার্বিক বিষয়ে আরো গভীরভাবে ভাবছে। ক্রমবর্ধমান স্মার্টফোনের বাজারে গবেষণার মাধ্যমে নিজস্বতা অর্জন করা তথা নিজস্ব যন্ত্রাংশ ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রধান বিষয়। যুক্তরাষ্ট্রে হুয়াওয়ে যে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে, অন্যান্য দেশে সেটি প্রতিহতে চীনকে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।

বর্তমানে সেলফোনের চিপ উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে কোয়ালকম মিডিয়াটেক বেশ পরিচিত। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠান পারতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল। তবে চীনের নিজস্ব কিছু চিপও রয়েছে। সম্প্রতি মিনজিয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ে মিন্ডু স্কলারদের বিশিষ্ট অধ্যাপক কাও হাইতাও এক সাক্ষাত্কারে বলেন, চীনে মোট বিক্রি হওয়া স্মার্টফোনের মধ্যে ৩০ শতাংশে অবশ্যই চাইনিজ চিপ ব্যবহার করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান নীতি অনুসরণ করবে না তাদের আরো ৪০০ শতাংশ বেশি কর দিতে হবে। মূলত চীনের বাজারের পরিধি বাড়াতে এবং শক্তিশালী করতেই উদ্যোগ বলেও জানান তিনি। কারণ যখন কোথাও বাজার থাকবে তখন সেখান থেকে আয় হবে। আর আয় থাকলে সেখানে গবেষণা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। যদি এটি বাস্তবায়ন করা না হয় তাহলে এর নিয়ন্ত্রণ অন্যদের হাতে থাকবে।

সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন শিল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে তাইওয়ানে বিপুল সম্পদ ব্যবহূত হয়। তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির (টিএসএমসি) কারখানায় গত বছর দৈনিক লাখ ৫০ হাজার টন পানি ব্যবহূত হয়েছে। অন্যদিকে সমগ্র সিনচু বিজ্ঞান প্রযুক্তি পার্ক দৈনিক লাখ ৪০ হাজার টন পানি ব্যবহার করে।

হুয়াকিয়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের তাইওয়ান ইকোনমিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন পরিচালক তাইওয়ান জাতীয় গবেষণা সমিতির পরিচালক চেন কেমিং বলেন, তাইওয়ানে সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন খাতের শীর্ষে রয়েছে টিএসএমসি। কিন্তু এর অধিক মূল্য অন্যতম প্রধান সমস্যা। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির মাত্র ২০ শতাংশ শেয়ারহোল্ডার তাইওয়ানের। বাকি ৮০ শতাংশ বহির্বিশ্বের। অন্য অর্থে প্রতিষ্ঠানটি পুরো বছরে যা আয় করে তার ৮০ শতাংশ বিদেশীরা নিয়ে যায়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন