রাজসিক রাজায় সিরিজ জিতে নিল জিম্বাবুয়ে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

টি২০ সিরিজে প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৬৫* ও ৬২ রানের দুটি ইনিংস খেলেন সিকান্দার রাজা। তার নৈপুন্যে টি২০ সিরিজে ২-১ ব্যবধানে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় জিম্বাবুয়ে। এরপর ওয়ানডে সিরিজে আরো অনবদ্য পারফর্ম রাজা। প্রথম ওয়ানডেতে ১৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে ৯ বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়েকে জয় এনে দেন এই ডানহাতি। আজ রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বল হাতে তিন উইকেট শিকারের পর ব্যাট হাতে খেলেন ১২৭ বলে ১১৭ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। রাজার রাজসিক পারফরম্যান্সেই টি২০র পর এবার ওয়ানডে সিরিজেও বাংলাদেশকে হারাল জিম্বাবুয়ে।

  

উল্লেখ্য, নয় বছর পর ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশকে হারাতে পারল জিম্বাবুয়ে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করে তারা। এরপর টানা ১৯ ম্যাচে হেরেছে আফ্রিকান দলটি। অবশেষে সিরিজ জয়ের হাসি হাসলেন রাজা, চাকাভারা।

 

প্রথম ওয়ানডেতে রাজাকে সুযোগ্য সঙ্গ দেন ইনোসেন্ট কাইয়া। দুজনের সেঞ্চুরির কাছে তিনশোর্ধ্ব সংগ্রহ নিয়েও হেরে যায় বাংলাদেশ। এবার রাজা ও রেজিস চাকাভার যুগলবন্দিতে জিতল স্বাগতিকরা। ২৯১ রানের টার্গেটটা তারা ছুঁয়ে ফেলেন ৫ উইকেট ও ১৫ বল হাতে রেখেই। এতে বুধবারের শেষ ম্যাচটি রূপ নিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতায়। 

 

জিম্বাবুয়ে ১৩ রান না তুলতেই তাকুদজোয়ানাশে কাইতানো ও ইনোসেন্ট কাইয়াকে সাজঘরে পাঠান পেসার হাসান মাহমুদ। অষ্টম ওভারে ওয়েসলে মাদেভেরেকে আউট করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাইজুল ইসলামের আঘাতে স্বাগতিকদের স্কোর পরিণত হয় ৪৯/৪। তিনি সাজঘরে ফেরান ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিকে।

 

সফরকারীদের হতাশ করে এরপর রূপকথা লিখলেন রাজা ও চাকাভা। বাংলাদেশ বোলারদের এদিন কোনো সুযোগই যেন দেননি তারা। এ দুজন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৬৯ বলে ২০১ রান যোগ করে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন বাংলাদেশকে। ৪৯ রানে ৪ উইকেট পতনের পরও এমন দাপুটে জয়! অবিশ্বাস্য, অভাবনীয়।

 

বল ও ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে একাই ধ্বংস করেন রাজা। অনবদ্য ফর্মে থাকা এই অলরাউন্ডার প্রথমে বল হাতে নেন ৫৬ রানে তিন উইকেট। এরপর রান তাড়া করতে নেমে ১১৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় ইনিংস সাজান রাজা। ঢাকার লিগে নিয়মিত মুখ বাংলাদেশের বোলারদের খেলেন যেন বাধাহীনভাবেই। তার সঙ্গী চাকাভা ৭৫ বলে ১০২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন। ১০ চারের সঙ্গে দুটি ছক্কাও মারেন দলনায়ক। চাকাভা আউট হওয়ার পর টনি মুনিয়ঙ্গা ১৬ বলে ৩০ রান করে অপারাজিত থাকেন।

 

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ ওপেনিং জুটির দৃঢ়তায় ভালো সূচনা পেলেও মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে বিদায় ঘটে দুজনেরই। হাফসেঞ্চুরি করার পরপরই আউট হন তামিম ইকবাল (৪৫ বলে ৫০)। তার কিছুক্ষণ পর সাজঘরে ফেরেন এনামুল হক বিজয়ও। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম ৬৪ বলে ৫০ রানের জুটি গড়ে স্থিতি আনলেও দুজন বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। মুশফিক ২৫ ও শান্ত ৩৮ রান করেন।

 

১৪৮ রানে ৪ উইকেট পতনের পর পঞ্চম উইকেটে আফিফ হোসেনকে নিয়ে লড়াই করেন মাহমুদউল্লাহ (৮০*)। এ দুজন ৮২ বলে ৮১ রান যোগ করে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডটা ভদ্রস্থ করেন। ৪১ বলে ৪১ রান করা আফিফ সিকান্দার রাজা শিকারে পরিণত হন তিনি (২২৯/৫)। এরপর টেল-এন্ড নিয়ে লড়াই করে দলকে তিনশ ছুঁই ছুঁই সংগ্রহ এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। তিনি ৮৪ বলে ৮০ রান করেন ৩ চার ও ৩ ছক্কার সাহায্যে।   

 


এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন