২৬ বছরে একদিনও ব্যবহার হয়নি বরিশাল সুইমিং পুল

এম. মিরাজ হোসাইন, বরিশাল

পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বরিশাল সুইমিং পুল ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র সুইমিং পুলটি নির্মাণের ২৬ বছর পর হয়ে গেলেও একদিনের জন্যও ব্যবহার হয়নি। নির্মাণে কারিগরি ত্রুটিসহ অনিয়মের কারণে ব্যবহারোপযোগী হয়নি সাঁতার শেখার পুলটি। ফলে বছরের পর বছর পুলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। সম্প্রতি বরিশাল শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক মানের তৈরি করার অর্ধশত কোটি টাকা বরাদ্দের পাঁচটি প্যাকেজে সুইমিং পুলটি সংস্কার করা হচ্ছে। তবে সুইমিং পুলটি সংস্কার নয়, নতুন করে নির্মাণের দাবি তুলেছেন ক্রীড়াঙ্গনসংশ্লিষ্টরা।

বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার জানান, সুইমিং পুলটির জন্য দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও এটি সংস্কার করে তেমন লাভ নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ পুলটি ২৬ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। তবে তা কোনো কাজে আসেনি। তাই নতুনভাবে নির্মাণ করতে এরই মধ্যে যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে।

জানা গেছে, ২৬ বছর আগে ১৯৯৭ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আউটার স্টেডিয়ামে কোটি টাকা ব্যয়ে সুইমিং পুলটি নির্মাণ করে। নির্মাণে কারিগরি ত্রুটিসহ অনিয়মের কারণে পুলটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। জেলা ক্রীড়া সংস্থা জানায়, মানসম্পন্ন সাঁতারু সৃষ্টি এবং শিশু-কিশোরদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়ার লক্ষ্যে পরীক্ষামূলকভাবে সুইমিং পুলে পানি ওঠাতে গিয়ে সেখানে ধরা পড়ে ফাটল। পরবর্তী সময়ে ওই ফাটলের আকার বড় হয়েছে। ওই অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুইমিং পুলটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে চাইলেও সংস্থা ত্রুটিপূর্ণ সুইমিং পুলের দায়িত্ব বুঝে নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো সমাধান না করেই পুরো বিল তুলে নিয়ে সটকে পড়ে। ওই অবস্থায় ২০০০ সালের ১১ এপ্রিল পুলটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যার পর পুলটিতে যেন ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করে। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সুইমিং পুলটি সংস্কার করা হচ্ছে। বরিশালে শিশু-কিশোরদের সাঁতার প্রশিক্ষণ দেয়া উন্নয়ন সংগঠক এনায়েত হোসেন বলেন, এত বছর পর সুইমিং পুলের কাজ পুনরায় শুরু হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে একটি আনন্দের সংবাদ। নির্মাণের পর সুইমিং পুল অকেজো অবস্থায় থাকায় সাঁতার প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হয়ে এসেছে শিশু-কিশোররা। এতে গুরুত্বপূর্ণ ক্রীড়া থেকে পিছিয়ে পড়ছে বরিশাল। পাশাপাশি পুলটি অবহেলায় পড়ে ছিল। যত দ্রুত সম্ভব কাজে অগ্রগতির পরামর্শ দিয়ে তিনি আরো বলেন, শুধু সংস্কারই নয়, দরকার পুনর্নির্মাণ। পাশাপাশি সাঁতার শেখানোর জন্য ভালো প্রশিক্ষক নিয়োগ নিয়মিত প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করার প্রয়োজন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে বেশকিছু সংস্কারকাজ চলমান রয়েছে। কাজগুলো আরো আগেই হতো, তবে করোনার কারণে বিলম্ব হয়েছে। কাজের মধ্যে রয়েছে সুইমিং পুলের সংস্কার একটি। এছাড়া স্পোর্টস কমপ্লেক্স নির্মাণ স্টেডিয়ামের গ্যালারিসহ নানা সংস্কার কাজ। এসব কাজ বাস্তবায়নে জেলা ক্রীড়া সংস্থার অগ্রগতি প্রক্রিয়াধীন। বরিশালের ক্রীড়া অঙ্গনকে আরো সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে যতটা সম্ভব দ্রুততার সঙ্গে এগুলো করার লক্ষে জেলা প্রশাসন তদারক করছে।

বরিশাল জেলা ক্রীড়া সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ শামীম জানান, বরিশালে অবকাঠামো উন্নয়ন সূচনায় প্রভাব পড়বে খেলাধুলায়, এর ফলে গতি বাড়বে খেলাধুলায়। সুইমিং পুলসহ স্টেডিয়ামটির উন্নয়নকাজ সমাপ্ত হলে বরিশালে একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু গড়ে তোলা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন