কুড়িগ্রামের নটারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

পাঠদানে ভরসা একজন শিক্ষক কমছে শিক্ষার্থী

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম

শিক্ষক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে কুড়িগ্রামের নটারকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ছবি: নিজস্ব আলোকচিত্রী

কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নের নটারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। দীর্ঘ দুই বছর ধরে অবস্থা চলতে থাকলেও শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি শিক্ষা বিভাগ। এতে ওই বিদ্যালয়ে যেমন পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি কমে গেছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন চিলমারী উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নেরর ডাটিয়ার চর গ্রামে বিদ্যালয়টির অবস্থান। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোজিনা খাতুন জানান, তিনি একাই দুই বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করিয়ে আসছেন।

বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সালে ব্রহ্মপুত্র নদের কোলে অবস্থিত নটারকান্দি গ্রামে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৮ সালে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হলে ওই বছর পার্শ্ববর্তী ডাটিয়ার চরে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণের সময় শিক্ষকের সংখ্যা ছিল পাঁচজন। ২০২০ সালে পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষক অবসরে যান সে সময় থেকেই ওই বিদ্যালয়ে আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়নি। ফলে গত দুই বছর ধরে একজন শিক্ষক দিয়ে বিদ্যালয়টি পরিচালনা হওয়ায় ভেঙে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা অনুযায়ী মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৮৭ জন। আর বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে সব ক্লাস মিলে উপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৭০-৮০ জন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোজিনা খাতুন জানান, প্রধান শিক্ষক আমজাদ হোসেন ২০২০ সালে অবসরে যান। এরপর একই বছর আরো তিনজন সহকারী শিক্ষক অবসরে গেলে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। আমার একার পক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। জন্য পাঁচটি শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।

অভিভাবক রহমত আলীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এডহক কমিটির আহ্বায়ক হয়েও বিদ্যালয়ে একবারও ভিজিটে আসেননি চিলমারী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম জাকির হোসেন। তার অবহেলার কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম ধ্বংসের উপক্রম হয়েছে। দ্রুত শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণের দাবি জানান তারা।

বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ফারিয়া চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোজাহিদ জানায়, স্কুলে শিক্ষক না থাকায় ঠিকমতো ক্লাস হয় না। জন্য স্কুলের অনেক ছাত্রছাত্রী স্কুলে আসে না। অনেকে অন্য স্কুলে চলে গেছে।

বিষয়ে চিলমারী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম জাকির হোসেন জানান, আমি চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে উপজেলায় যোগদান করেছি। নানা ব্যস্ততার কারণে স্কুল পরিদর্শন করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে।

ব্যাপারে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান জানান, জেলা উন্নয়ন কমিটির সভায় বিষয়টি আমার নজরে আসে। ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। এর আলোকে দুই-তিনজন খণ্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে। যাদের বেতন উপজেলা প্রশাসন থেকে ব্যয় করা হবে। পরবর্তী সময়ে শিক্ষক নিয়োগ হলে সমস্যা আর থাকবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন