দুদিনের সফরে ঢাকায় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুদিনের সফরে আসা চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই-কে গতকাল হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী মো. আবদুর রাজ্জাক। পরে অতিথিকে সম্ভাষণ জানান পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সফররত চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ চীনের মধ্যকার একটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকেও অংশ নেবেন তিনি।

এর আগে গতকাল দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বিকাল ৫টার দিকে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। সময় তাকে স্বাগত জানান কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক।

সফরের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান ওয়াং ই। গতকাল সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যান তিনি। তাকে সেখানে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দেয়ার পর নিজস্ব রীতিতে মাথা নুইয়ে শ্রদ্ধা জানান চীনা মন্ত্রী। এরপর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন এবং জাদুঘরের পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।

দুদিনের সফরে বাংলাদেশ চীনের মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে বলে গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। জানা গিয়েছে, স্মারক চুক্তিতে সাংস্কৃতিক, সামাজিক অর্থনৈতিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়গুলো স্থান পাবে। তবে -সংক্রান্ত তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র।

উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফর শুরু করেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এরই মধ্যে উজবেকিস্তানসহ তিনটি দেশ সফর করেছেন তিনি। সেই ধারাবাহিক সফরের অংশ হিসেবে গতকাল বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে আজই তার বাংলাদেশ ত্যাগ করার কথা রয়েছে। এরপর এশিয়ার আরেক দেশ মঙ্গোলিয়া সফরে যাবেন চীনের মন্ত্রী।

এশিয়া সফরের অংশ হিসেবে চীনের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও গত মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ান সফরে যান মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। তার সফর ঘিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখায় চীন। পেলোসি তাইওয়ান ত্যাগের পরই বৃহস্পতিবার দেশটি ঘিরে শুরু হয় চীনের সর্বকালের সর্ববৃহৎ সামরিক মহড়া। চীন তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে। আর সেই ভূখণ্ডে পেলোসির সফরকে কেন্দ্র করে দুই পরাশক্তি চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে শুরু করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র চীনের মধ্যে যখন দ্বন্দ্ব নতুন রূপ নিয়েছে, ঠিক সে সময় ওয়াং ইর সফরকে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং জানিয়েছিলেন, ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে পাশে চায় চীন। তিনি বলেন, চীন আশা প্রকাশ করে যে এক চীন নীতিতে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

চীন বাংলাদেশ একে অন্যের ভালো প্রতিবেশী উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশ দুটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার। সবসময়ই দুই দেশ নিজেদের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে একে অন্যকে বুঝেছে এবং প্রয়োজনীয় সমর্থন দিয়েছে। এক চীন নীতিতে সমর্থন দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসাও করেন তিনি।

লি জিমিং বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণ ভবিষ্যতেও আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতি উন্নতির ক্ষেত্রে তাইওয়ান প্রশ্নে চীনকে সমর্থন দিয়ে যাবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন