প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০২২’ উপলক্ষে প্রদত্ত বাণীতে বলেছেন, বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্টেপ আপ ফর ব্রেস্টফিডিং, এডুকেশন অ্যান্ড সাপোর্ট’ অর্থাৎ ‘মায়ের দুধ পান: শিক্ষা ও সমর্থনের পদক্ষেপ’ যথার্থ হয়েছে বলে আমি মনে করি। মাতৃদুগ্ধপান শিশুদের পুষ্টিপূরণ এবং সম্মিলিত শারীরিক বৃদ্ধি ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটায়।
তিনি বলেন, একটি সুস্থ ও মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তুলতে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার বৃদ্ধি এবং মাতৃ ও শিশু পুষ্টি উন্নয়নের কার্যক্রম টেকসই করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে মা ও শিশু স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। মাতৃত্বকালীন ছুটি বেতনসহ ছয় মাসে উন্নীত করেছি। সাধারণভাবে পিতৃত্বকালীন ছুটির বিধান রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, প্রতি বছর শিশু অপুষ্টির হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে। সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল, এসডিজি-৩ শিশু সম্পর্কিত সূচকগুলো, যথা পাঁচ বছর বয়সের নিচে শিশুর মৃত্যুহার ৩১ এবং নবজাতকের মৃত্যুহার ১৭ এরই মধ্যে মাইলফলক অতিক্রম করেছে সময়ের আগে। এসডিজি-২- এর শিশু সম্পর্কিত সূচকগুলো, যথা কৃশকায় শিশুর হার ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের খুব কাছাকাছি। এসডিজি-২ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে খর্বাকৃতি শিশুর হার ৩১ থেকে ২৫ শতাংশে এবং কম ওজনের জন্ম নেয়া শিশুর হার ২২ থেকে ২০ শতাংশে কমিয়ে আনতে হবে। বাংলাদেশের শতকরা ৬৫ ভাগ শিশু ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ খায়।
সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, আমরা সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, ব্যাংক-বীমা, রেলস্টেশন সব জায়গায় ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছি। এরই মধ্যে আমরা দেশের সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে, চিড়িয়াখানায়, বিভিন্ন রেলস্টেশনে, শপিং মলে ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপন করেছি। এছাড়া হাইকোর্ট থেকে বিভিন্ন শিল্প-কারখানায় ব্রেস্টফিডিং কর্নার স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। চতুর্থ সেক্টর হেলথ, নিউট্রিশন ও পপুলেশন প্রোগ্রাম এবং দ্বিতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনার আওতায় মাতৃ ও শিশু পুষ্টিসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, শিগগিরই সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা মাতৃ ও শিশু পুষ্টি বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি অর্জন করব। আমি দেশের সর্বস্তরের শিশুকে ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ পান করানো, ছয় মাসের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার খাওয়ানো এবং দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ চালিয়ে যাওয়ার অগ্রগতির ধারাকে জোরদার করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় পুষ্টিসেবা ও বাংলাদেশ ব্রেস্টফিডিং ফাউন্ডেশনসহ (বিবিএফ) সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।