পূর্বাভাস
ছাড়াই গতকাল শুক্রবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এর প্রভাবে পড়েছে
গণপরিবহন চলাচলে। আজ শনিবার সকাল থেকে রাজধানীতে দেখা দিয়েছে তীব্র গণপরিবহন সংকট।
অল্প কিছু বাস সড়কে নামলেও সেগুলোতে তিল ধারণের জায়গা নেই। এ সুযোগে অন্যান্য
বাহনেও ইচ্ছামতো ভাড়া হাঁকা হচ্ছে।
আজ সরকারি
ছুটির দিন হলেও বেসরকারি চাকরিজীবী,ব্যবসায়ী ও অন্য কর্মীজীবীদের বিভিন্ন কাজে বাড়ির বাইরে বের হতে হয়েছে।
রাজধানীর রামপুরা, মৌচাক, মালিবাগ, কাকরাইল, কল্যাণপুর,
রায়েরবাগ,
শনির আখড়া, কাজলা, যাত্রাবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে, পরিবহন পেতে
রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
কোনো
কোনো রুটে দীর্ঘক্ষণ পর দু-একটি বাস চোখ পড়ছে। বাস এলেই ওঠার আশায় ছুটে যাচ্ছেন
অনেক মানুষ। কিন্তু বেশিরভাগ বাসই আগে থেকে যাত্রীতে পরিপূর্ণ।
রামপুরায়
দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বলেন, এক ঘণ্টা ধরে গন্তব্যের
গাড়ি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন। কিন্তু দু-একটি বাস এলেও উঠতে পারছেন না।
অন্যদিকে
অ্যাপভিত্তিক রাইডের স্বল্পতা নিয়ে নাখোশ অনেকে। অনিক নামের একজন জানান, বাইক
সার্চ করে কোনো রাইড পাননি। পরে কন্ট্রাক্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সেখানেও
অন্যদিনের চেয়ে ভাড়া বেশি হাঁকা হচ্ছে।
বাস সংকট
নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বাসচালক বলেন, বাসের ভাড়া নির্ধারণ না করেই তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। গতকাল
রাত থেকেই বেশি দামে তেল কিনতে হয়েছে। এখন স্বাভাবিকভাবেই যাত্রীদের কাছ থেকে
বাড়তি ভাড়া নিতে হবে। কিন্তু সেটি করতে গেলে বিপত্তি হচ্ছে। সম্ভাব্য গোলযোগ
ঠেকাতে মালিকদের নির্দেশে রাস্তায় বাস কম চলছে।
এ দিকে
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পর থেকে বাস ভাড়া বৃদ্ধির আশঙ্কা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে
সরগরম অনেকেই। আগের অভিজ্ঞতা থেকেই গণপরিবহনের সংকট হবে ধরে নিয়েছেন কেউ কেউ।
ফেসবুকের পরিবহন অভিজ্ঞতা ও সড়ক পরিস্থিতি সংক্রান্ত কিছু গ্রুপ ঘুরে তেমন পোস্টও
চোখে পড়েছে।
গতকাল
রাতে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির কথা জানানো হয়। এতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা
বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করার ঘোষণা দেয়া হয়। অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১৩৫
টাকা করা হয়েছে। ৪৪ টাকা বাড়িয়ে পেট্রলের প্রতি লিটারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে
১৩০ টাকা।
এদিকে
যাত্রী কল্যাণ সমিতি ভাড়া না বাড়িয়ে তেলের বাড়তি দাম প্রত্যাহারের আহ্বান
জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে সংগঠনটি বলেছে,জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বাড়ানো ফলে জনজীবনে চরম
দুর্ভোগ নেমে আসবে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ হওয়ায় পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয়
পণ্যমূল্য সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে। পরিবহন সেক্টরে অস্থিরতা
দেখা দেবে।
ভাড়া
সমন্বয় করতে বিআরটিএর সঙ্গে আজ বিকেলে পরিবহন মালিকদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।