বিশ্ববাজারে এক সপ্তাহে জ্বালানি তেলের দরপতন ৭.৫%

দেশে ডিজেল-কেরোসিনে ৪২.৫ শতাংশ, অকটেন-পেট্রল ৫০%-এর বেশি মূল্যবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক

আন্তর্জাতিক বাজারে এক সপ্তাহ ধরে জ্বালানি তেলের দাম কমতির দিকে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বাজারে এক সপ্তাহে বিভিন্ন বাজার আদর্শে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে কমপক্ষে সাড়ে শতাংশ। যদিও বিপরীত চিত্র দেশের বাজারে। ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের পরিশোধিত বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে সাড়ে ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ।

গতকাল রাতে জ্বালানি বিভাগের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির কথা জানানো হয়। এতে ডিজেল কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করার ঘোষণা দেয়া হয়। সে হিসেবে পণ্য দুটির দাম বাড়ানো হয়েছে সাড়ে ৪২ শতাংশ। অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১৩৫ টাকা করা হয়েছে। পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ৫২ শতাংশ। ৪৪ টাকা বাড়িয়ে পেট্রলের প্রতি লিটারের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩০ টাকা। সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্তে পণ্যটির দাম বেড়েছে ৫১ শতাংশের কিছু বেশি। সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর রাত ১২টা থেকেই নতুন মূল্য তালিকা কার্যকর হয়।

এর আগে গত নভেম্বরে ডিজেল কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করেছিল সরকার। ওই সময় অকটেন পেট্রলের দাম নির্ধারণ করা হয় লিটারপ্রতি যথাক্রমে ৮৯ ৮৬ টাকা।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় আমজনতার স্বস্তি স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়ে কিছুটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম এখন কিছুটা কমতির দিকে। যদিও জ্বালানি বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারের ঊর্ধ্বমুখিতার কথাই বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করছে। ভারত ২২ মে থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি পেট্রল লিটারপ্রতি ১০৬ দশমিক শূন্য রুপি নির্ধারণ করেছে, যা এখনো বিদ্যমান। এই মূল্য বাংলাদেশী টাকায় যথাক্রমে ১১৪ দশমিক শূন্য টাকা এবং ১৩০ দশমিক ৪২ টাকা (রুপির বিনিময় হার দশমিক ২৩ টাকা ধরে) অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটারপ্রতি ৩৪ দশমিক শূন্য পেট্রল লিটারপ্রতি ৪৪ দশমিক ৪২ টাকা কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। দাম কম হওয়ায় জ্বালানি তেল পাচারের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। অবস্থায় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবি।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি-জুলাই, ২০২২) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সব পণ্য) হাজার ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন