বাংলাদেশকে নয় বছর পর ওয়ানডেতে হারাল জিম্বাবুয়ে

ক্রীড়া ডেস্ক

জয়ের পথে ছুটছেন অনবদ্য সিকান্দার, তখন হতভম্ব মিরাজ ছবি: এপি

২০১৩ সালের মে বুলাওয়েতে বাংলাদেশকে উইকেটে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। এরপর টানা ১৯ ওয়ানডেতে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে হারারেতে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ২০তম ম্যাচে জিম্বাবুইয়ান বিষে কুপোকাত হলো টাইগাররা। গতকাল হারারে স্পোর্টস ক্লাবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিকরা।

দলের জয়ে জোড়া সেঞ্চুরির ব্যাটিং প্রদর্শনী দেখিয়েছে জিম্বাবুয়ে। টি২০-তে সিরিজ সেরা হওয়া সিকান্দার রাজার ব্যাটিং ক্যারিশমা অব্যাহত ওয়ানডেতেও। ১০৯ বলে ১৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে দলের জয় নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরেন তিনি। সীমিত ওভারে রাজার চতুর্থ সেঞ্চুরির দিনে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন ইনোসেন্ট কায়া। ১২২ বলে ১১০ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন ব্যাটার।

টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে চার হাফসেঞ্চুরিতে ৩০৩ রান সংগ্রহ করেছিল বাংলাদেশ। এর আগে দুদলের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে ৩০০ রানের বেশি তাড়া করে কোনো দল জিততে পারেনি। এখন এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করার রেকর্ড। এর আগে গত বছর হারারেতে জিম্বাবুয়ের দেয়া ২৯৯ রান ১২ বল হাতে রেখে তাড়া করেছিল বাংলাদেশ। এবার সেই রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে।

ম্যাচেও বাংলাদেশের বোলাররা শুরুটা করেছিলেন ভালো। রানে তুলে নেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার রেগিস চাকাভা () তারিসাই মুসাকান্দার () উইকেট। মুস্তাফিজ শরিফুল তুলে নেন তাদের। ৬৩ রানের মাথায় ওয়েসলে মাধেভেরেকে (১৯) রানআউট করে বাংলাদেশ ম্যাচ কব্জায় রাখে। কিন্তু চতুর্থ উইকেটে রাজা কায়ার ১৯২ রানের জুটি ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। ২৫৪ রানের মাথায় মোসাদ্দেকের শিকার হন কায়া। ১১টি চার দুটি ছক্কায় ১১০ রানের ইনিংসটি সাজান তিনি।

এরপর লুক জংওয়েকে নিয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান রাজা। কিন্তু জয় থেকে যখন রান দূরে তখন মেহেদী হাসান মিরাজ ফেরান জংওয়েকে। ১৯ বলে ২৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মিল্টন শুম্বাকে নিয়ে বাকি কাজ সেরে নেন সিকান্দার। মোসাদ্দেককে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন তিনি। ৮টি চার ৬টি ছক্কায় ইনিংসটি সাজান তিনি। ব্যাটে-বলে অনবদ্য পারফরম্যান্স করে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।

এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল লিটন দাসের ১১৯ রানের জুটিতে দারুণ সূচনা পায় বাংলাদেশ। ৮৮ বলে ৬২ রান করেন তামিম। ক্যারিয়ারের ৫৪তম হাফসেঞ্চুরি করে রাজার শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনার। অন্যদিকে ওডিআইতে সপ্তম হাফসেঞ্চুরি পাওয়া লিটন ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু দলীয় ১৭১ রানের মাথায় পায়ের পেশিতে টান লাগায় মাঠ ছাড়েন তিনি (৮১)

দ্বিতীয় উইকেটে তিন বছর পর খেলতে নেমে এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে ৯৬ রানের জুটি গড়েন মুশফিকুর রহিম। দীর্ঘদিন পর ফিরে দারুণ ব্যাটিং উপহার দেন বিজয়। ৬২ বলে ৭৩ রান করেন তিনি। ৬টি চার ৩টি ছক্কায় সাজিয়েছেন ইনিংসটি। তার উইকেটটি নেন পেসার ভিক্টর নায়াউচি।

এরপর আর কোনো উইকেট নিতে পারেননি স্বাগতিক বোলাররা। ৪২তম হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মুশফিক, ৪৯ বলে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ১২ বলে ২০ রান করেন।

সফরেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি২০ সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এবার ওয়ানডে সিরিজও হারের শঙ্কায় সফরকারীরা। আগামীকাল একই ভেন্যুতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুই দল। ম্যাচ জিততে পারলে নয় বছর পর বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার স্বাদ পাবে জিম্বাবুইয়ানরা।

২০১৩ সালের পর পাঁচটি সিরিজ খেলে সবগুলোতেই জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে ৭৯টি ওয়ানডেতে এটি ২৯তম জয় জিম্বাবুয়ের। বাংলাদেশের জয় ৫০টিতে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন